আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@সিয়ামের ফযীলত-১: তাকওয়া অর্জন

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আল্লাহ্ সোবহানাহু ওয়াতা'আলা আমাদের সৃষ্টি করেছেন, থাকার জন্য অতীব সুন্দর ও বাসোপযোগী একটি পৃথিবী দান করেছেন, জীবন পরিচালনায় যাবতীয় মৌলিক প্রয়োজনাদি পূরণের জন্য সকল প্রাণীর চাইতে বেশী পরিমাণ বিবেক দান করেছেন এবং সর্বোপরি দুনিয়া ও এর পরবর্তী জীবনে কিসে আমাদের সফলতা আর কিসে ব্যর্থতা সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। এ জন্য আল্লাহ্ তা'আলা পৃথবীর শুরু থেকেই পর্যায়ক্রমে নবী-রাসূলগণের মাধ্যমে এবং কিতাব ও সহীফা প্রেরণের মাধ্যমে আমাদেরকে সর্তক করেছেন এবং সুসংবাদ প্রদান করেছেন। বর্তমান উম্মাতের অংশীদার হিসেবে আমরাও রয়েছি এবং এই সময়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন পবিত্র-মহিমান্বিত মাস অতিক্রম করছি। এ মাসে আল্লাহ্ এই উম্মাতের জন্য এমন এক ইবাদাত ফরয করেছেন, যা তিনি পূর্ববর্তী সকল উম্মাতের জন্যই ফরয করেছিলেন। তার নাম সওম বহুবচনে সিয়াম।

তিনি বলেন: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ. ((হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে যেরূপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, আশা করা যায় তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারবে। )) [সূরা আল-বাকারাহ্: ১৮৩] সওম ফরয হওয়া সম্পর্কিত উক্ত আয়াতে কারীমার মাধ্যমেই মূলত আল্লাহ্ তা'আলা সওমের সাধারণ ও সর্বব্যাপী ফযীলতের কথা তথা সওম ফরয করার পেছনের কারণ তুলে ধরেছেন। তাকওয়া অর্জনই সওমের সবচেয়ে বড় হেকমত, সবচেয়ে বড় পাওয়া, বড় অর্জন। কেননা, এই তাকওয়ার মধ্যেই রয়েছে মুমিনের জন্য যাবতীয় কল্যাণ। কুরআনের পরিচয় কুরআন নিজেই দান করছে এভাবে যে, ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ ((এ সেই কিতাব যাতে কোন সন্দেহ-সংশয় নেই, মুত্তাকীদের জন্য এটি হেদায়াত।

)) [সূরা আল-বাকারাহ্: ২] অর্থাৎ, কুরআন তাদেরকেই হেদায়াত দান করে থাকে যারা মুত্তাকী আর সিয়াম সাধনা মানুষকে সেই তাকওয়া অর্জন করায় যা কারো মধ্যে বিদ্যমান থাকলে সে মুত্তাকী হিসেবে বিবেচিত হয় আল্লাহর দরবারে। এক কথায় ঈমান ও ইহতেসাবের সাথে তথা সুদৃঢ় বিশ্বাস ও আত্মসমালোচনার সাথে সত্যিকার অর্থে সিয়াম সাধনা করলে মানুষ মুত্তাকী হবে আর মুত্তাকীদের জন্যই আল-কুরআনের হেদায়াত রয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যে ব্যক্তি আল-কুরআনের হেদায়াত লাভ করে ধন্য হতে পেরেছে, সেই সফলকাম দুনিয়া ও আখেরাতে। একদা উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু এক সাহাবীর নিকট জানতে চাইলেন: তাকওয়া কি? সাহাবী জবাবে বললেন: আপনি যদি কোন কণ্টকাকীর্ণ সরু রাস্তায় পথ চলেন, তখন কিভাবে চলেন? উমার বললেন: শরীর ও কাপড় রক্ষা করে খুবই সতর্কতার সাথে। সাহাবী বললেন: এটাই তাকওয়া।

-এ কথোপকথন থেকে আমাদের জন্য বিরাট শিক্ষা নিহিত রয়েছে। অতএব, আসুন এই পবিত্র-মহিমাম্বিত মাসে ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলো অর্থাৎ, তাকওয়া, আল-কুরআনের হেদায়াত, সর্বোপরি পরম প্রিয় আল্লাহ্ তা'আলার সন্তুষ্টি অর্জন করার প্রচেষ্টায় নিমগ্ন হই। ১৮.০৯.২০০৭, মদীনা মুনাওয়ারা, সৌদি আরব।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।