নিজেকে নিয়ে কিছু একটা লেখার চেষ্টা, এখোনো করে যাচ্ছি . . .
মৃত মানুষের চিরস্থায়ী স্থান ’কবর’ মৃত্যুর পর যেখানে তাকে দাফন করা হয়। জ্ঞান বুদ্ধির পূর্ণতা পাবার আগেই যখন ছোটবেলা তখনকার কথা বলছি, ‘কবর’-স্থানকে খুব ভয় পেতাম। নানু, মা-এর মুখে শোনা সেসময়ের ভূতের গল্প শুনে, সব আত্মার অস্তিত্ব বোধহয় এই কবরেই থাকে এতটুকুনই বুঝ হত। সে সব প্রেতাত্মার ভয়ে কবরের দিকে গাও ঘেষতামন, যদি দেখা যেত পথের পাশের কবরখানা পার হয়ে যেতে হবে, মায়ের আচলে মুখ গুজে বাবার হাতদুটো শক্ত করে চেপে ধরেই তবে সে রাস্তা পার হতাম। এতটা ভয় পেতাম, বরাবরই মনে হত এই বুঝি কবর থেকে আত্মগুলো বের হয়ে সামনে আসবে, তারপর তাদের সে কি ভয়ংকর চেহারা নিয়ে সামনে দাড়বে, ভয়েই গা গুলিয়ে ঠান্ডা হয়ে যেত।
মা যখন বুঝতেন ভয়টা বেশী মাত্রায় শরীর মনে কাজ করছে তখন কত কিছু দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করতেন, কিন্তু আমাকে বুঝত কে!
আজ যখন বর্তমান অবস্থান থেকে পিছনে ফিরে তাকাই, সেসব কথা ভাবি বড়ই হাস্যরস মনে হয়। কতই না বোকা ছিলাম, একবারের জন্যও তখন ভাবতে পারিনি যাকে প্রেতাত্মা, ভূত ভাবছি আমাকেও একদিন তাদের মতই হতে হবে। মাটির রস আমাকে শুষে ফেলবে, পড়ে থাকবে শুধু কংকাল, সেটাই ভূত হয়ে পরবর্তী প্রজন্মের ভয় পাওয়া বাচ্চাদের কাছে ভূত, প্রেতাত্মা হয়ে বেচেঁ থাকবে।
জন্ম আর মৃত্যুর সন্ধিক্ষনের এই সময়টুকু আমাদের জীবনের অস্তিত্ব। তাই তাকে নিয়ে কত ব্যস্ততা, আয়োজন! রজ্ঞ মঞ্চে অভিনয়।
অথচ আমাদের সবাইকে একদিন পরে হলেও এ ব্যস্তময় জীবন ছেড়ে ভূত হয়ে উড়ে যেতে হবে। তাই জীবনের যে সময়টুকু পার করে উপলব্ধি হয়েছে জীবনের অপর নামই মৃত্যু, আর মৃত্যুর পর ফিরে যেতে হবে যেখান থেকে এসেছি সেখানেই সেদিন থেকেই আর ‘কবর’-কে ভয় পাইনি, বরঞ্চ কবরকে জীবন শেষের পর তার পরের জীবনের অতীব সত্য চিরস্থায়ী গন্তব্য স্থান মেনে নিয়েছি, তাকে ভয় পাবার প্রশ্নই তো আসেনা !
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।