আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৫ আগস্ট : শোক সারাজীবন বয়ে বেড়ানোর বিষয় নয়

http://www.myspace.com/423882880/music/songs/31785002

১ সকালে এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। ওর বাবা মারা গেছে যুদ্ধের সময়ে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার ওর প্রতি একটা আলাদা গর্ববোধ কাজ করে। ও ওর বাবাকে স্বশরীরে কখনো দেখেনি। বাবার গল্প শুনেছে।

ছবি দেখেছে। কিন্তু নিজের কোনো অহংকার নেই। মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হিসেবে কোনো উন্নাসিকতাও নেই। দেশের আর দশটা মানুষের মতোই ওর ফিলিংস। একদম সাধারণ।

রাষ্ট্র, সমাজ কারো কাছেই অধিক কোনো চাওয়া নেই। বরং ওর নাকি মাঝে মাঝে মনে হয়, তার বাবা কেন শহীদ হলো এদেশের জন্য। মাকে ছেড়ে, সন্তানদের ছেড়ে, কেন দেশের জন্য মরতে গেলো বাবা। কি পেলো দেশ, জাতি,ওর বৃদ্ধ মা, ওরা! আমি শুধু দেখেছি পিতৃহীন এক সন্তানের কান্না লুকাতে!! ২ আর কিছুক্ষণ পর ১৫ আগস্ট ২০০৭ থেকে চিরতরে বিদায় নিবে। শোকাবহ ১৫ আগস্ট।

বাংলাদেশের স্থপতি, বাংলার মানুষের সাহস সঞ্চারী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সহ পরিবারের ১০ সদস্য ৩২ বছর আগে এক মর্মান্তিক অভ্যুথ্থানে শাহাদাত বরণ করেছে। ৩২ বছর ধরে ১৫ আগস্ট নিয়ে কতো খেলা হয়েছে! কিন্তু জাতির মানবিক অস্তিত্বটা বেঁচে ছিলো বলে শেখ মুজিব এখনো অনন্য, অবিসংবাদিত এক আদর্শ। ( কিছু আদর্শচ্যুত, বিভ্রান্ত লোক ছাড়া!) আমার বন্ধুকে আজ বলছিলাম, তোর বাবাকে নিয়ে আজ একটা পোস্ট আমার প্রিয় ব্লগে দিবো। লিখবো একটা প্রজন্ম, যারা সরাসরি যুদ্ধ দেখেনি, কিন্তু এখনো একটা শোক বয়ে বেড়াচ্ছে! ও বললো, না! কিছু লিখবি না। শোক সারা জীবন বয়ে বেড়ানোর বিষয় নয়! সারাটা জীবন শোকার্ত হয়ে কাটানোর জন্য নয়।

শোক কখনো কখনো শক্তি সঞ্চারী, ভীষণ রকমের! ৩ সকাল থেকেই ব্লগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা হচ্ছে। কখনো যাতা, কখনো ছাতা, কখনো গতানুগতিক আবেগী কথাবার্তা। যেগুলোর সাথে হয়তো প্রজন্মের চিন্তাকে ছোঁয়ার ব্যাপার নাই। আছে আনুষ্ঠানিকতা। পত্রপত্রিকায়, দু একটা ছাড়া নেই নতুন কোনো আয়োজন।

৫ ফুট ১১ ইঞ্চি লম্বা একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠের অধিকারী, অনন্য ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন আদর্শের নাম বঙ্গবন্ধু। তার ভাষণ শুনে মোহমুগ্ধের মতো দেশের জন্য ঝাপিঁয়ে পড়েছিলো সবাই। তাকে রাজনৈতিক ভাবে যতোই টানাহেঁচড়া করা হোক না কেন, আমরা অন্তর থেকে তাঁর প্রতি কোনো অবিচার করিনি, করবোও না। ভুলত্রুটি সবার থাকে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ভুলত্রুটিই সব নয়। " জাতির পিতা " নিয়ে একটা বিতর্ক করতে আমরা অভ্যস্থ হয়ে উঠেছি।

হ্যাঁ পিতা, না পিতা- ফলাফল, একটা গুমোট ও নোংরা বিদ্বেষ। ৪ স্বাধীন হবার পর বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা-ভাষণে বঙ্গবন্ধু নয় মাসের যুদ্ধের কথা বলেছেন। তিনি বেশ দুঃখ নিয়ে বলেন, " জাতীয় চরিত্র খারাপ হয়ে গেছে। একদল লোক আছে, বেশ সুন্দর একটা গাড়ি। খালি হাইজ্যাক করে।

যে গাড়ি চালান জানে, সেইতো হাইজ্যাক করায়। কোনো গরিব তো করেনা। ... আমার গরিবের , রিক্সাওয়ালার, কৃষকের ছেলেতো গাড়ি হাইজ্যাক করে না। কত বড়ো নৈতিক পরিবর্তন আমার দেশে হয়েছে। লুট করে , গাড়ি নিয়ে যাইয়া ভদ্রলোকের ছেলে- স্যুট প‌্যান্ট পরে যাইয়া ব্যাংক লুট করে।

যে জাতির চরিত্রের পরিবর্তন না হবে, সে জাতি বড়ো হতে পারে না। বাঙ্গালি জাত। ত্রিশ লক্ষ রক্তের দাগ। আমার দেশের কিছু কর্মচারী আজ ঘুষ খায়। দুর্নীতি করে।

ডাকাতি করে। লজ্জায় মাথা নত হয়ে যায়। আমি এই জাতির পিতা...ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ, তার পিতা আমি নই!"...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।