যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি
যখনই মুক্তিযুদ্ধের কথা আসে, তখন দেখা যায় কিছু মানুষ হৈ চৈ করে উঠে। বলে কি দরকার এই ৩৭ বছরের পুরানো প্যাচাল নিয়ে। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ওরা নিজেরা কখনও মুক্তিযুদ্ধে কথা বলে না। বরঞ্চ বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়গুলোকে সামনে এনে মুল বিষয়টাকে আড়ালে নিয়ে যেতে চেষ্ঠা করে।
আমরা দেখছি, ১৯৭১ সালে বিজয়ের পর শত্রুরা পরাজিত হয়েছে।
শত্রুদের বিদেশী অংশ চলে গেছে - কিন্তু রেখে গেছে শত্রুদের দেশী সহচরদের। এরা সংগঠিত হয়েছে বিভিন্ন নামে - বিভিন্ন মুখোশে। কখনও ধর্মের আড়ালে - কখনওবা জাতিয় ঐক্যের নামে।
লক্ষ্যনীয় - মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় শক্তি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হন।
যারা তাকে হত্যা করেছে তারাও মুক্তিযুদ্ধা ছিল। তারপর জেলে হত্যা করা হয় ৩রা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চারনেতা শেখ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, মনসুর আলী এবঙ কামরুজ্জামানকে জেলের ভিতরে হত্যা করা হয়। সেই সময় নিহত হন এক সেক্টর কমান্ডার খালেদ মুশাররফ। ফাঁসী দিয়ে হত্যা করা হয় কর্নেল তাহেরকে। পরে সেক্টর কমান্ডার স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করেও নিজেকে রক্ষা করতে পারেন নি।
নিহত হন আরেক মুক্তিযোদ্ধা জেনারেল মঞ্জুরের হাতে। হত্যা করা হয় মজ্ঞুরকেও। সেই মামলায় ফাঁসীতে ঝুলানো হয় ১২ জন মুক্তুযোদ্ধা সেনাকর্মকর্তাকে। এভাবে এমাগত মুক্তিযোদ্ধাদের তিরোধান হলেও দেখা যায় স্বাধীনতার বিপক্ষর শক্তি কিন্তু নিজেদের ঐক্যকে সুদৃঢ় করে। একবার এই দলে - আবার অন্যদলে থেকে এক পর্যায়ে মন্ত্রীত্ব পর্যন্ত বাগিয়ে নেয়।
এরা অন্যদিকে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে একটা বিভ্রান্ত প্রজন্ম তৈরীর কাজ করে চলছে। এরই একটা হলো ইসলামী ছাত্র শিবির। শুরু হয় ধর্ম দিয়ে - শেষ হয় আওয়ামীলিগকে ঘৃণা সুষ্টির মাধ্যমে। এরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনলে বিব্রত হয় - কিন্তু অস্বীকার করার সাহস পায়না। তাই ক্রমাগত ঘুমপাড়ানীর গান শুনিয়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিমুখ করার চেষ্টা করে।
কিন্তু মানুষ শিখে পরিবার থেকে - শিখে সমাজ থেকে। এখনও সমাজে এমন মানুষ জীবিত আছে যারা প্রত্যক্ষ করেছেন গনহত্যা - দেখেছে নদীর তীরে মানুষকে লাইন করিয়ে গুলি করতে। দেখেছে রাজাকারদের প্রতাপ - দেখেছে নিজের মাকে রাজাকারকর্তৃক নির্যাতিত হতে। দেখেছে নিজের পুড়ে যাওয়া বাড়ী।
বলা হয় - তাদের ক্ষমা করা হয়েছে।
প্রশ্ন হলো ওরা ক্ষমা চেয়েছে কিনা। পৃথিবীতে কি এমন ঘটনা আছে যে অপরাধী ক্ষমা চায়নি - কিন্তু বুক ফুলিয়ে বলছে ক্ষমা করা হয়েছে।
কে কাকে ক্ষমা করেছে?
আমার বাবার হত্যাকারীকে ক্ষমা করার অধিকার কার আছে? আমার মায়ের নির্যাতনকারীর ক্ষমা করার অধিকার কার আছে? আমার বোনের ইজ্জতলুন্ঠনকারীর ক্ষমা করার অধিকার কার? আমার দেশের বুদ্ধিজীবিদের হত্যার বিচার না করার মতো সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার কে কাকে দিয়েছে?
ওদের ক্ষমা নেই। বাংলাদেশের মাটিতেই ওদের বিচার হবে। এই বিশ্বে একটা সভ্য জাতি হিসাবে পরিচয় দেবার লক্ষ্যই এই বিচার জরুরী।
আরেকটা গনহত্যা বন্ধের লক্ষ্যেই এই বিচার জরুরী।
সেই দিনটা খুব দুরে নয়। আমার আগের প্রজন্ম ক্ষুদ্রস্বার্থে নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরী করায় এবং রাজনৈতিক ডামাডোলে এতোদিন বিচার হয়নি। কিন্তু ৭১ এর ঘাতক দালালদের বিচারের দাবী দিনে দিনে জোড়ালো হচ্ছে।
ঘাতক দালালদের বিচারে দাবীকে আরো জোড়ালো করার লক্ষ্যে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে আরো সচেতন হওয়া দরকার।
আসুন এবার মুক্তিযুদ্ধের কিছু খন্ডচিত্র নিয়ে একটা স্লাইড শো দেখি...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।