আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীবাদী পত্রিকার আলোচনা- মুক্তস্বর পুরুষ বিবর্জিত পত্রিকা-০১

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

বিপ্লবী নারী সংহতি প্রকাশিত ষান্মাসিক পত্রিকা মুক্তস্বরের প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যা হাতে এসেছে। সম্পাদকীয়তে এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে সম্পাদনা পরিষদের বক্তব্য " সাম্রাজ্যবাদী- পুঁজিবাদী- পুরুষতান্ত্রিক ব্যক্তিমালিকানা যা নারীকে পরাধীন করে রেখেছে, বৈষম্যের শিকারে পরিণত করেছে সেই কাঠামোকে আঘাত না করে , অটুট রেখে নারী মুক্তির লড়াই কি আদৌ সম্ভব? অতি আবশ্যিক ভাবেই অসম্ভব-" তাই বিশ্বে উপস্থিত এবং বহুকাল ধরে চর্চিত পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতরে থেকেই সেটাকে প্রশ্ন করবার তাগিদ, সংগঠন সৃষ্টি এবং চিন্তা প্রকাশের জন্য এই পত্রিকা গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে বিপ্লবী নারী সংহতির গড়ে ওঠা, বেড়ে ওঠা সহ নারীবাদি আন্দোলনের সহায়ক সকল আলোচনা ভাবনা লিখিত হবে। পত্রিকার উদ্দেশ্য মহৎ- নারী পরাধীন, অন্যের অধীনস্ততায় তার জীবন কাটে, নারীর অবমাননাও ভীষণ রকম সত্য, ধর্মীয় নৈতিকতার আড়ালে , নানাবিধ ধর্মে চিহ্নে নারীকে আবদ্ধ রাখা হয়েছে- তাদের চিন্তা চেতনার স্বাধীনতায় অবৈধ হস্তক্ষেপের নিরসন হওয়া প্রয়োজন। যদিও নারী মুক্তি, নারী স্বাধীনতা কথাগুলো প্রহেলিকার মতো, আসলে স্বাধীনতার ব্যাখ্যাটা কি? এই স্বাধীনতার লক্ষ্য কি? ভবিষ্যত কি? এবং এই নারীবাদী নীতিমালার রুপরেখা কেমন হবে? অনেক রকম প্রশ্ন আছে।

এবং যেহেতু অনেক দিন ধরেই পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোতে জীবনযাপন করি তাই একটা অভ্যস্ত জীবন এবং নৈতিকতা থেকে নারী মুক্তি এবং নারী স্বাধীনতা আমাদের নতুন কোন নৈতিকতায় পৌঁছায় এটা নিয়েও খানিক সংশয় আছে- এবং অদ্যাবধি একটা নির্দিষ্ট ফর্মার নারীস্বাধীনতার বক্তব্য নেই- সবাই একটা নিজস্ব অবস্থান তৈরি করে সেই কাঠামোর ভেতর থেকেই স্বাধীনতার বৈশিষ্ঠ্যগুলোকে চিহ্নিত করে- সার্বজনীন কোনো একটা রুপরেখার অনুপস্থিতি একটা সমস্যা, তবে নারীর ক্ষমতায়নের বুলি আউড়ানো পূঁজিবাদী সভ্যতা নারীকে একটা স্বাধীনতার আস্বাদ দিচ্ছে এটাও একটা প্রহেলিকা তৈরি করে। আদতে স্বাধীনতার বক্তব্যটা কি? ইসলামি মতাদর্শিকতার চর্চাকারী মানুষদের মতে নারীর আত্মসম্মান ও নারী চেতনার বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক সংস্কার এনেছে ইসলাম- ধর্ম একটা অবস্থান গ্রহন করেছে- নারী স্বাধীনতা বক্তব্যটা ধর্মের মতো এতটা প্রাচীন নয়, তবে পুরাণে অনেক নারীবাদী চরিত্রকে পাওয়া যায়- এটা ব্যক্তি মানসের কল্পনা কিংবা এটাই বাস্তবতা সব সময়ই প্রথাগত ভাবনার বাইরে গিয়ে ভাবতে চাওয়া কোনো কোনো নারী পুরুষ বিদ্যমান এই সভ্যতায়- ইসলামী মতাদর্শিকতার চর্চাকারীদের মতে তৎকালীন আরবের উচ্ছৃংখল সমাজ ব্যবস্থায় নারীর অসম্মানের প্রকোপ ছিলো বেশী, নারীকে যৌনতার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহার করা হতো, নারীরা নিজেও বেলেল্লাপনা করতো- হজ্জের সময় যে মেলা অনুষ্ঠিত হতো মক্কায় সেখানে মদ আর নারীর নগ্ন নাচ একটা আকর্ষণ ছিলো- ( আহা কবে এমন সময় হবে, তবে আমি চাইবো ইরানী কিংবা ইসরাইলী বালিকা) এবং তারা নানাবিধ আয়াত, হাদীস আর তাফসির তুলে ধরে বলতে চায় আসলে নারী মুক্তির পথই ইসলাম- ইসলাম ছাড়া ইসলামী মূল্যবোধ ছাড়া যারা নারী মুক্তি ও নারি স্বাধীনতার চর্চা করবে তারা আবশ্যিক ভাবেই বেলেল্লাপনার চর্চা করবে- এই বাই ডিফল্ট অবস্থান নিয়ে এটা ঝড়ো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিলো- তবে সেই পরাধীন অবস্থার ভেতরেও যখন প্রাক ইসলামী সময়ে কণে পণ দিয়ে বিয়ে করতো আরবের পুরুষেরা তখন জন্মানো মাত্রই মেয়েদের মেরে ফেলার মতো আইয়্যামে জাহেলিয়ার অস্তিত্বটা প্রশ্ন সাপেক্ষ- অর্থনীতির বক্তব্য বলছে একটা কন্যা সন্তান মানেই ভবিষ্যতে অর্থ লাভের সুযোগ- অন্তত কন্যার বিয়ের সময় কন্যার জামইয়ের কাছে কনে পণ পাওয়া যাবে- এখন যেমন পুরুষ মাত্রই যৌতুক চায় এবং পেয়েও থাকে সে রকম ভাবেই আরবে মেয়েদের পরিবারকে যৌতুক দিয়ে কন্যা উঠিয়ে আনতে হতো- ইসলামের ভাবাদর্শ মতে তারা পিতার সম্পদের উত্তরাধিকারী ছিলো না, স্বামীর সম্পদের ভাগ পেতো না- এই ধরণের বক্তব্যের পরও দেখা যায় খাদিজা বেশ বড় একটা ব্যবসা চালাতো এবং মুহাম্মদ নিজেও সেই ব্যবসার কর্মচারী ছিলো- এবং এই ব্যবসার সুবাদেই তার সিরিয়া গমন এবং সেখানের ইহুদি ধর্মযাজকদের সাথে আলাপ আলোচনার সুযোগ- সেখানেই তার নৈকা বা জাহাজ দেখার সুবর্ণ সুযোগ। সেই অবরুদ্ধ অবস্থায় প্রাক ইসলামী যুগে এবমন কি ইসলামের অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিতে দেখি পৌত্তলিক নারীদের- মুসলিমদের প্রথম দুটি যুদ্ধে সম্ভবত কোনো নারী অংশ গ্রহন করে নি, তবে এর পরে বেশ কিছু নারী যুদ্ধক্ষেত্রে আহতদের সেবার জন্য উপস্থিত ছিলো- তারা সক্রিয় যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছে এমনটা শুনি নি- তবে আব্রু বজায় রেখে পরপুরুষের ভেতরে যৌন কামনা জাগ্রত করে ফেলার সামগ্রীক ইসলামি ভীতিসম্বলিত সেবাদান প্রকল্প চমৎকার মনোহর কোনো দৃশ্য হতে পারে- এমন কি মুহাম্মদ সিক্কা ছুড়ে এক বিবিকে নিয়ে যুদ্ধে রওনা হলো পরিস্থিতিতে আয়েশা এবং হাফসার ভেতরের শীতল লড়াই এবং অবশেষে দুজনকে নিয়েই যুদ্ধক্ষেত্রে গমনের ঘটনাও ঘটেছে- তবে সেখানে উম্মুল মুমেনিনাদের উপস্থিতি অনুপ্রাণিত করেছিলো কি না সেবাদানকারীদের কে জানে? আলীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৈন পরিচালনা করেছিলেন আয়েশা এমনটা শোনা যায়- তবে মুসলমানদের ভেতরে বিবাদ নিষিদ্ধ ,যারা এই ঘটনায় জড়িত ,যারা সক্রিয় মদদ দিয়েছে, এবং যারা অংশ গ্রহন করেছে, হাদিসের মতে তাদের সবারই কাফের হয়ে যাওয়ার কথা- এই যৌক্তিক প্রশ্নটা এড়িয়ে গিয়েও সেই একই লড়াই যেখানে আলী জিতেছিলো- এবং এর পর থেকে আলীর অনুসারী এবং আয়েশার অনুসারীদের ভেতরের আগুন আজও রক্তপাত ঘটাচ্ছে মুসলিম বিশ্বের মানচিত্রে। ইসলাম আরবের প্রেক্ষিতে কতটুকু নারী স্বাধীনতা আনতে পেরেছিলো এটা গুরুত্বপূর্ণ এখটা প্রশ্ন তবে পূঁজিবাদের সম্প্রসারণের কালে ধর্ম রাজনীতির উপাদান হয়ে উঠার পরে রাজনৈতিক দলগুলোর নারী সংস্থার ভেতরেও একটা পুরুষতান্ত্রিকতার তাবেদার গোষ্ঠির সৃষ্টি হয়েছে, তারাই পুরুষতন্ত্রকে সমর্থন জুগিয়ে নারীদের পালনীয় নীতিমালা রচনা করেছে। তবে সার্বজনীন সত্য হলো নারী পরাধীন এই উপলব্ধিটা আধুনিক সময়ে প্রবল, নারীর ক্ষমতায়নের নামে নারীদের অধিকার স্বীকৃতি পাওয়ার সাথে সাথে স্বাধীনচেতা নারীদের ভেতরে বঞ্চিত বোধ বাড়ছে, তারা একটা সমকক্ষতার দাবী জানাচ্ছে- এবং এই পরাধীনতার শৃংখল ভাঙার নানাবিধ তড়িকাও বাজারে আনছে তারা- পুরুষতান্ত্রিক কাঠামোর ভেতরে থেকেও পুরুষতান্ত্রিক কাহটামোর নৈতিকতা বোধ থেকে উদ্ভুত ভাবনার বাইরে গিয়ে নারীবাদী সার্বজনীন ঐক্যবদ্ধ কোনো নীতিমালা এখনও স্পষ্ট হয়ে উঠে নি।

মুক্তস্বরের সদস্যরা বাম আন্দোলনের সাথে যুক্ত- টারা সমাজতান্ত্রিক ভাবাদর্শকেই নারীমুক্তির হাতিয়ার ভাবছেন- তারা নারীর ক্ষমতায়নের ইউটোপিয়া থেকে বের হয়ে নারী পুরুষ সমতা এবং মানবিক অধিকার প্রশ্নে নারী পুরুষ সমকক্ষতার দাবী তুলে ধরছেন। সমাজতন্ত্র মানুষের মুক্তির কথা বলে, সমাজতন্ত্র স্পষ্ট করে বলতে চায় মানুষে মানুষে অসমতা কাঠামোভিত্তিক দুর্বলতা- সামাজিক কাঠামো বদলাতে পারলে মানুষের চেতনায় পরিবর্তন আসলে এমন এক রাষ্ট্রব্যাবস্থা নির্মাণ করা সম্ভব যেখানে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে এবং তাদের যোগ্যতার প্রকৃত মূল্যায়ন হবে। বিপ্লবী নারী সংহতি এখানে প্রকাশিত নিবন্ধগুলোতে এ বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করেছে- তবে নারীর হীনতার নানা রকম দৃষ্টান্ত এবং পাঠ তুলে ধরতে চেয়েছে =অনেক সময় এটা ক্লিশে এবং দিকনির্দেশনা বিহীন অনেক নিবন্ধের বক্তব্যের সাথে আমি নিজেও একমত পোষণ করি না- তবে সামপ্রীক ভাবে বলতে চাইলে নারীবাদি বই পড়তে অনাগ্রহী এবং একই মলাটে অনেক রকম বিতর্কের উপাদান খুঁজে পেতে চান যারা তাদের জন্য এটা আদর্শ একটা বই- এটা সে হিসাবে এমন একটা সংকলন যে চাবাতে হয়- তবে হজম করার মতো জিনিষ এখানে উপস্থিত নেই। এই পত্রিকার প্রাণ হলো শ্রমজীবি নারীদের চোখে নারী স্বাধীনতা তুলে ধরার প্রয়াস, মধ্য ও উচ্চবিত্ত নিরাপত্ত বেষ্ঠনীর ভেতরে থেকে উপলব্ধ অসমতার বোধ এবং শ্রমজীবি নারীদের অসমতার বোধ এবং উপলব্ধি খানিকটা পৃথক- এই অবস্থানগত পার্থক্য এবং উচ্চারনগত পার্থক্যটা স্পষ্ট ধরা পড়ে এখানে। বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষিতে হিজাব নামক বিলাসিতা কতটা অশোভন এবং অপ্রাসঙ্গিক এটার উপলব্ধি শ্রমজীবি নারীরাই করতে পারে- যে নারী ভোর ৫টায় উঠে স্বামীর সহযোগি হিসেবে তার সারাদিনের বিকিকিনির পসরা সাজিয়ে, জোগাড় দেখে সামাজিক প্রচারণায় উন্নত জীবনের সোপানে সন্তানকে তুলতে চেয়ে তাকে স্কুলের জন্য সাজিয়ে ঘরের কাজ করে কায়িক শ্রমে জোগ দেয় এবং কায়িক শ্রমটা এমন যে সেখানে প্রতিটা পেশী শ্রান্ত হয়- সর্বাঙ্গ ঘামে ভেজে, সেখানে গ্রিষ্মের প্রখর দুপুর আর শীতের অলস মধ্যাহ্নের কোনো ভেদ নেই- সেখানে পিন্ধনের কাপড়ের উপরে বাড়তি পুরুষের কামনারোধি ঢাল সম্ভব না পড়া।

যারা যন্ত্রের ব্যবহার করে তার যান্ত্রিক সমস্যার কারণেই হালকা কাপড় পড়ে- ম্যাশিং বুঝে না কোনটায় টান দিলে করাতে নারী কাটবে আর কোনটায় টান দিলে ইপ্সিত ফলাফল আসবে- যে মহিলা আর মেয়েরা ইটভাঙে- তারা যে পরিশ্রম দেয় শরীর নিংড়ে প্রতিদিন তাদের আভরণের বিলাসিতা সম্ভব না- তারা হেজাবের নিরাপত্তা চায় না, তারা সম্মান চায়, পারিশ্রমিকের সমতুল্যতা চায়- কেনো ১টা পুরুষ ১০০ ইট ভেঙে পাবে ১০০ টাকা আর নারী পাবে ৬০ টাকা- এটাই তার কাছে বড় অসমতা- খাটুনি কম না তবু কেনো এ বৈষম্য- কেনো পুরুষ দর্জি পাবে নারীর দ্বিগুন= একই মাপের কাপড় সেলাই করে দুজনেই- এই কায়িক শ্রমজীবি নারীর শরীর দেখে যদি কোনো পুরুষ কামার্ত হয়ে উঠে এটার জন্য বিন্দুমাত্র উদ্বেগ নেই তার। পুরুষের কামনার লকলকের জিহ্বা যেনো তাকে বাক্য দিয়ে স্পর্শ না করে এটুকুই চাওয়া তাদের- বক্তব্য স্পষ্ট- পুরুষ রাস্তায় নামলে কেউ শীষ দেয় না, অশালীন কটু মন্তব্য করে না- তবে নারী কেনো এভাবে যৌন হয়রানিতে ভুগবে- পোশাক সংস্কৃতির পরিবর্তন নয় পুরুষের চেতনার পরিবর্তন চায় তারা। পুরুষ ভাবতে শিখুক শ্রমের বিচারে তারা একই পর্যায়ের। শোষণ আর বঞ্চনায় তারা একই ভাবে ভুক্তভোগী হয়- এই সমতার বোধ জাগলেই রাস্তায় আপাদমস্তক যোনী হিসেবে পরিচিত না হয়ে তারা শ্রমিক হিসেবে পরিচিত হবে= তারা নারী নয় মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি চায়- প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট বৈপিরিত্বকে বহুগুন বিবর্ধিত করে দেখে তাদের উপরে যে খড়গ নেমে এসেছে- সেই উদ্যত খড়গ থেকে মাথা সরিয়ে তারা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায়- তবে সবচেয়ে সরল সত্যটা প্রকাশিত হয় এভাবেই- মিছিলের সব পা, সব কণ্ঠ এক নয়- সবাই যুথব্ধতার নিজস্ব প্রয়োজনে সংগঠনে যুক্ত হয়= তাদের চাহিদা আর প্রত্যাশা আলাদা আলাদা- তাদের সামাজিক ভাবে আক্রান্ত হওয়ার বহুমাত্রিক বোধ থেকে কেউ ধারণা করে এই যুথবদ্ধতা তাদের এমন শক্তি দিবে যা তাদের নিজস্ব সমস্যা থেকে পরিত্রাণের ুপায় হবে- তাদের নারী স্বাধীনতার বোধও বহুমাত্রিক- তবে তারা আত্মসম্মান চায়- চায় নিজের উপার্জন খরচ করার স্বাধীনতা- চায় স্বাধীন পদচারনার সুযোগ- এবং সবাই রাস্তায় বাক্য ও দেহভঙ্গিতে ফুটে উঠা যৌনহয়রানি থেকে রেহাই চায়- তারা রাস্তায় আক্রান্ত বোধ করে কামনার আঁচে- তবে পোশাকের সাংস্কৃতিক বিবর্তন দিয়ে এ আঁচ রোধ করা সম্ভব এমনটা ভাবে না= পুরুষের কামনার আঁচ পোষাক সংস্কৃতি মানে না- শোষণ আর দমনপীড়নের নানারকম প্রকার ভেদ আছে কোনোটা সিমিকে প্ররোচিত করে আত্মহননে কোনোটা এনজিওর ঋণের তাগাদা দেওয়া স্যারেদের ফাইলে ভর করে আসে- কোনোটা মজুরির অসমতা থেকে উদ্ভুত- কোনোটা বাড়ীওয়ালার পানি আর বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া থেকে উদ্ভুত- এসবের সাথে প্রাকৃতিক দুর্বিপাক থাকে- থাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস যা পুলিশের উর্দি পড়ে আসে -এবং এসবের প্রভাব পড়ে জীবিকাতে- জীবিকাতে টান পরে- টান পড়ে ভাতের হাঁড়িতে- ঋণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে হাসিমুখে আসে ঋণ দিদিমনি- এবং সপ্তাহান্তে তাগাদা আসে- সামাজিক সম্পর্কগুলো বিপর্যস্ত হয়- চরাঞ্চলে বৌ ফেলে পালায় স্বামী- শহরে বস্তিতে বৌ বাচ্চা ফেলে পালায় মানুষ কিংবা সামান্য ছুতায় তালাক দিয়ে দেয়- খিটমিট বাধে অভাব থেকে- চালটা নুনটা , তেলটা- চাওয়া বাড়ে- তাগাদা দেয় নারী- নারীর হেঁশেল সামলাতে হয়- সে জানে চাল বাড়ন্ত, তেল বাড়ন্ত- টাকা চাই- পুরুষের পকেটে গড়ের মাঠের হাওয়া- মেজাজ খাপ্পা- দুই চার ঘা- তবে এসব বিবেচনাবোধ শ্রমজীবি নারীদের আছে- তারা এটাকে মেনেই সংসার করে- মধ্য আর উচ্চবিত্তের মতো পারিবারিক নির্যাতনরোধী মহিলা সংগঠন গড়ে তুলে না- তারা জানে পকেটে পাত্তি নাই তাই মেজাজ গরম, তবে রাতে পেট ঠান্ডা হলে আদর সোহাগে দিনের শাসনের ক্ষত মুছে দেবে স্বামী-

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।