আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এপেন্ডিক্স : বিবর্তিত নয়, একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ



★★বানরের বাচ্চা বিবর্তনবাদীদের জন‍্য এ পোস্ট-★★ ˝তারা বলে এপেন্ডিক্স নাকি বিবর্তনের নমুনা, শরীরে যার কোন কাজ নেই। বিবর্তনের করণে নাকি ছোট হয়ে গেছে। ˝ ★আল্লাহ তায়ালা অযথা কোন কিছুই তৈরি করেননি, তার একটি প্রমাণ হল এই এপেন্ডিক্স। ★নিচে এপেন্ডিক্স এর কাজ তুলে ধরলাম-- এপেন্ডিক্সের দেয়ালে মালার মতো কতগুলো দানদার লিম্ফ টিস্যু রয়েছে। লিম্ফ টিস্যু হচ্ছে শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

একটি দেশকে বহিঃশ্ত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য যেমন আর্মি, নৌ এবং বিমান বাহিনী অর্থাৎ প্রতিরক্ষা বাহিনী থাকে, মানবদেহ নামক রাজ্যের সার্বিক প্রতিরক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে এই লিম্ফ টিস্যুগুলোর উপর। আমাদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সুবিন্যস্তভাবে রয়েছে এই লিম্ফ টিস্যুর প্রতিরক্ষাব্যূহ। এদের ফাঁকি দিয়ে দেহের ভেতরে কোনো ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি জীবাণু প্রবেশ করবে তার জো নেই। লিম্ফ টিস্যুগুলো শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে (যেখান দিয়ে জীবাণুদের প্রবেশের সম্ভাবনা বেশি)নোড এর আকারে জমা হয়ে থাকে- অনেকটা সেনানিবাসের মতো। এসব কোষীয় সেনানিবাসে থাকে টি(T) লিম্ফোসাইট এবং বি(B) লিম্ফোসাইট কোষ সৈনিকেরা।

এদের মধ্যে টি লিম্ফোসাইটগুলোর কাজ অনেকটা ক্যাপ্টেনের মতো- তারা দেহের প্রতিরক্ষা আক্রমণ কী রকম হবে তা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিশেষ ধরণের রাসায়নিক পদার্থ (Lymphokines) নিঃসরণ করে অন্যান্য সৈনিক কোষ যেমন, নিউট্রোফিল (Neutrophil) কোষ, ম্যাক্রোফেজ কোষ (Macrophage), প্রাকৃতিক ঘাতক কোষ (Natural Killer cell)-দের আক্রমণের স্থানে সন্নিবেশিত করে। এ ছাড়া তারা নিজেরা ভাইরাস এবং টিউমার কোষকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়। টি কোষগুলোর আরেকটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে লিম্ফ টিস্যুকে বি লিম্ফোসাইট তৈরিতে প্রেরণা দেয়া। অন্যদিকে বি লিম্ফোসাইটগুলোর কাজও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা তৈরি করে দেহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম অস্ত্র এন্টিবডি।

এই এন্টিবডি অণুগুলো ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস-এর গায়ের সাথে লেপ্টে গিয়ে তাদের ধ্বংস করে দেয়। পরিপাক তন্ত্র (মানুষের ঠোঁট হতে শুরু করে পায়ুদ্বার পর্যন্ত) দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এজন্য যে; এখান দিয়েই বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি খাদ্য-পানীয় হিসেবে প্রবেশ করে এবং এটা জীবাণু প্রবেশের ও অন্যতম পথ। তাই এ বিশাল অঙ্গের বিভিন্নস্থানে লিম্ফ টিস্যুরা ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করে, যেমন টনসিল গ্রন্থি, ক্ষুদ্রান্ত্রের ‘পেয়ার প্যাচ’ (Peyer’s patch) ইত্যাদি। ক্ষুদ্রান্ত্রের শেষ অংশ বা ইলিয়াম (Ileum) শেষ হয় বৃহদন্ত্রের প্রথম অংশ সিকাম (caecum)-এ এসে। খাদ্যের পরিপাক কাজ অর্থাৎ নির্যাস আহরণের কাজ ক্ষুদ্রান্ত্রের মধ্যেই শেষ হয়।

বৃহদন্ত্রের কাজ মূলত ড্রেন সিস্টেম-এর মতো, দেহের জন্য অপ্রয়োজনীয় খাদ্যাংশকে প্রসেস করে (পানি শুষে নিয়ে এবং তাকে ঘন করে) পায়ুপথ দিয়ে দেহের বাইরে পাঠিয়ে দেয়- যা ‘মল’ নামে পরিচিত। বৃহদন্ত্রে জীবাণু নিয়ন্ত্রণের জন্য এর প্রথমাংশেই রয়েছে প্রচুর লিম্ফ টিস্যু ধারণকারী একটি উপাংগ যার নাম- এপেন্ডিক্স”। source - Loren G. Martin, professor of physiology at Oklahoma State University, ★তাছাড়া সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা যায়- এই অকর্মন্য অংশটিই শরীররের জন্য উপকারী immune suport ব্যাকটেরিয়ার নিরাপদ আবাসস্থল বলে জানান বিজ্ঞানীরা। এখানেই তারা নিরাপদে বেড়ে ওঠে এবং কলেরা বা ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিটির পরিপাকতন্ত্রকে পুনরায় কর্মক্ষম করার জন্য কাজ করে এই ব্যাকটেরিয়া। নর্থ ক্যরোলাইনার ডিউক ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সেন্টারের বিজ্ঞানীরা দেখিয়ে দিলেন যে, বৃহদান্ত্রের যে অংশটিকে এতোদিন অপ্রয়োজনীয় এবং ঝামেলাপূর্ণ বলে মনে করা হতো, তা আসলেই মানুষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।

এখানে জন্ম নেয়া ও বেড়ে ওঠা ব্যাকটেরিয়াগুলো হজমে সাহায্য করে এবং কলেরা ও ডায়রিয়ার মতো মারাত্মক রোগ সংক্রমণের পর পরিপাকতন্ত্রকে আবারো আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বিল পার্কার জানান, অস্ট্রেলিয়ার রয়াল মেলবর্ন ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির মেডিক্যাল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নিকোলাস ভার্ডাক্সিস জানান,˝এটি সত্যি একটি চমৎকার আবিস্কার, যেখানে এতো ছোট্ট একটি ব্যাকটিরিয়া এতো চমৎকার একটি জায়গায় থাকতে পারে, এ আবিস্কারের আগে তা জানাই ছিল না। ” সুতরাং, আবারো প্রমাণিত হল- আল্লাহ তায়ালা অযথা কোন কিছুই সৃষ্টি করেননি। রি পোস্ট-------------

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।