আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘোড়ার সাজা (ঈশপের গল্প)

এক চাষীর ছিল একটি ঘোড়া ও একটি গাধা। সে গাধার পিঠে চাপাত মাল আর নিজে চাপত ঘোড়ার পিঠে। ঘোড়ার দাম বেশী বলে সে মাল টানার কাজে ঘোড়াকে কষ্ট দিতে চাইত না। একবার চাষী চলেছে হাটে। গাধার পিঠে চালের বস্তা।

বোঝাটা সেদিন বেশী বেশীই হয়েছিল। তাই গাধাকে খুব কষ্ট করে চলতে হচ্ছিল। চাষী পেছনে ঘোড়ার পিঠে থেকে তাড়া দিচ্ছে মাঝে মাঝে। তাই পিঠের বোঝার চাপে দম আটকে এলেও না চলে উপায় ছিল না গাধার। কিন্তু কতক্ষণ আর এভাবে চলা যায়।

ক্রমেই গাধার শরীর অবশ হয়ে আসতে লাগলো। পা পড়ছে এলোমেলো। গাধা তখন কাতর গলায় ঘোড়াকে ডেকে বলল, ওহে ভাই, আমি আর এত বোঝা নিয়ে চলতে পারছি না। তুমি যদি দয়া করে কিছুটা বোঝা পিঠে নাও তাহলে আমার কষ্ট কমে। নইলে মুখ থুবড়ে পড়ে এখনই মারা পড়ব।

ঘোড়া গাধার পাশে গলা বাড়িয়ে বলল, আমি কি করে বোঝা বইব, কখনও অভ্যাস নেই। কষ্ট হোক যাই হোক তোমার বোঝা তোমাকেই বইতে হবে। তোমার কষ্ট কমাতে গিয়ে শেষকালে আমি মরি আর কি। যা করার প্রভুই করবে। গাধা আর কি করে।

মুখ বুঁজে কষ্ট সয়ে হাঁটবার চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু বেশীক্ষণ চলতে পারলো না। এক জায়গায় এসে সত্যি সত্যি মুখ থুবড়ে পড়ে মারা গেল। চাষীকে এবার বাধ্য হয়ে ঘোড়ার পিঠ থেকে নামতে হল। তাকে তো হাটে পৌঁছতে হবে ঠিক সময়ে।

সে তখন গাধার পিঠের বস্তাগুলো তুলে তাড়াতাড়ি করে ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে দিল। মরা গাধাও পড়ে থাকলো না। সেটাকে চাষী ধানের বস্তার পরেই যায়গা করে দিল। এভাবে ঘোড়ার পিঠে ধানের বস্তার সঙ্গে মরা গাধার বোঝাও চাপলো। বোঝার ভারে তার অবস্থা তো কাহিল।

সেই অবস্থাতেই চাষী তাকে তাড়িয়ে নিয়ে চলল হাটের দিকে। অনেক কষ্টে পা টেনে চলতে চলতে ঘোড়া তখন দুঃখ করে নিজেকেই নিজে বলতে লাগলো, আগে যদি গাধার কথা শুনে তার বোঝা খানিকটা হাল্কা করতাম, তাহলে এখন মরা গাধার সঙ্গে সমস্ত বোঝা আমাকে বইতে হতো না। আমার বুদ্ধিকে ধিক! নীতি কথাঃ স্বার্থপর লোক নিজের ভাল কিসে হবে তাও বোঝে না।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।