আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই ইদানীং ভালো না থাকা

আ মা র আ মি

রাত ৯টার বেশী। ইচ্ছে ছিলো ৮ টার মধ্যে শেষ করার, তারপর ভাবলাম ৯। অবশেষে চেষ্টা ১০টায় পারলেই খুশি। কাজ করছি, কখনো রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা। রিপোর্ট এলে আবার কাজ।

যাকেই ফোন দিচ্ছি, অফিসের নাম্বার ব্যবহার করছি, অবচেতন ইচ্ছাতেই। 'হু, এখনো অফিসে। ' 'আর বলিস না, মাস শেষ, মান্থ ক্লোজিং রিপোর্ট করছি। ' 'না রে, আজ মনেহয় আর আড্ডায় যাওয়া হচ্ছে না, দেরি হয়ে গেছে, তোরা তো আর থাকবি না। ' 'হু, ব্যাপক ক্লান্ত লাগছে, বাসায় চলে যাব'।

নানা কথা, নানা অনুভুতি। ঘড়িতে চোখ, আমান অপেক্ষা করে আছে, খানিকটা আড্ডামারার শেষ ভরসা। কাজ মোটামুটি শেষ। শেষ চেকিং দিয়ে পাঠাতে পাঠাতে প্রায় ১০। দ্রুত পিসি বন্ধ করে লিফট দিয়ে নেমেই বাইরে।

সহকর্মীর নেমেই জীজ্ঞাসা, 'বস, কই যাবেন। আমার সাথে গাড়ি আছে, বাসায় নামায়ে দেই। ' উত্তরে, 'না, তবু তমি যদি পারো, এই গলিটার মাথায় নামায়ে দেও। আমার একটা বন্ধু অপেক্ষা করছে ওখানে। ' মোড়েই দাঁড়িয়ে আমান।

রাত ১০টার পরের গুলশান এলাকা। কফি হাউজ, সামনে গাড়ি এসে থামলো এক, বড়লোকের সুন্দরী তরুনী, বড়লোক সহই। যতই যা হোক, এতরাতে মেয়েকে তো একা ছাড়া যায় না। চোখ আর মনোযোগ ফিরিয়ে অতঃপর আতিপাতি রিকশা খোঁজা, মেলে না। র‌্যাবের গাড়ি পাশে বলেই বোধহয় আশপাশে রিকশার দেখাও মেলে না।

সিদ্ধান্ত, হেঁটেই ১ নাম্বার পর্যন্ত চলে যাই, ওখান থেকে পাবো নিশ্চয়ই কিছু। এবং হাটা। আমান সিগারেট বাড়ালো। আমি হাত। দেশলাইসহ, একটা সলাকা।

সারাদিন গরম শেষে রাতে বাতাস দিচ্ছে গুলশানের প্রশস্ত রাস্তা জুড়ে। সংকিত হাতে সিগারেটটা মুখে নিলাম, বাতাসে ভরসা পাই না। আমান এবার বাড়ালো হাতের জলন্তটা। এবার সঙ্কাহীন আমি। আগুন চুম্বনে আগুন জ্বালিয়ে ফেরত দিয়ে হাটতে লাগলাম পথে।

যেতে যেতে খানিকটা গানের চেষ্টা, হয় না। ১ নাম্বার পৌছে পথের ভিন্নতা। রিকশা পেয়ে গেলাম একটা। হাত নেড়ে বাসার উদ্দেশ্যে। হঠাৎ হাতে কি যেন।

তাকিয়ে দেখি, অব্যবহৃত দেশলাই কাঠিটা, সঙ্কায় জ্বলেনি যেটা আমার হাতে, রয়ে গেছে, রয়েই গেছে শেষ পর্যন্ত। আমি ইতস্তত, কি করি এটা নিয়ে। দেশলাই কাঠিটা অসহায় বড় মনেহয়, অবহেলায় ফেলে দিতে কেমন যেন লাগে। বুক পকেট নেই, ডিজুস প্যান্টর পকেটে ঢুকিয়ে রাখলাম যত্নে। ম্যাচের বাক্স পেলেই এটা বড় মূল্যবান হয়ে উঠবে এটা জানি, নিতান্ত দুঃসময়ে।

আমি য্তনে আগলে রাখি। ২ দিন পর হঠাৎ মনে পড়ল আমার দেশলাইয়ের কাঠিটার কথা। আমি খুঁজলাম তন্ন তন্ন, এপকেট, ওপকেট। নেই, কোথাও নেই সেই অসহায়, একা কাঠিটা। হ্য়ত খুঁজে নিয়েছে নিজেই কখনো বৃষ্টির বন্ধুতা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।