আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১১ই মে কুরআন দিবস :: ১৯৮৫ সালের এই দিনে



১০ই এপ্রিল ১৯৮৫। কলিকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি মিসেস খাস্তগীরের আদালতে কুরআনের সকল আরবী কপি ও অনুবাদ বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানিয়ে পদ্ম চোপরা ও শীতল সিং একটি রীট আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে ১২ই এপ্রিল’৮৫ বিচারপতি তিন সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি নির্দেশ দেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ভারতসহ সারা বিশ্ব প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের মুসলিম জনতাও এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকে মিছিল সমাবেশের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জেও সর্বাত্মক প্রতিবাদের উদ্দশ্যে আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা হোসাইন আহমদকে আহ্বায়ক করে একটি প্রতিবাদ কমিটি গঠন করা হয়। মাওলানা হোসাইন আহমদ এর আহ্বানে ১১ই মে বিকাল ৩ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ঈদগাহ ময়দানে রীট আবেদনের প্রতিবাদে এক জনসভার আয়োজন করা হয়। ঐ দিন সকালের দিকে প্রতিবাদ কমিটিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডেকে চাপ দিয়ে সভা স্থগিতের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। প্রশাসন নিজ উদ্যোগে সভা স্থগিত করা হয়েছে মর্মে সভা শুরুর কয়েক ঘন্টা আগে থেকে মাইকিং করা শুরু করে। কিন্তু জনতা প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে ঈদগাহ ময়দানে সমবেত হতে থাকে।

উচ্ছসিত জনতার মিছিল শ্লোগানে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। এ সময় কুখ্যাত ম্যাজিস্ট্রেট ওহেদুজ্জামান মোল্লা ক্ষিপ্ত হয়ে জনতাকে গালি গালাজ করতে থাকে এবং কোনভাবেই এখানে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে জানায়। এ পরিস্থিতিতে মাওলানা ইসারুল হক সাহেব ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে শুধুমাত্র মুনাজাত করেই সভা শেষ করে চলে যাওয়ার অনুমতি চান। কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ওহেদুজ্জামান মোল্লা এ আবেদন প্রত্যাখান করলে জনগন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠি চার্জ শুরু করলে জনতার সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

ম্যাজিস্ট্রেট নিরস্ত্র জনতার ওপর গুলি চালাতে নির্দেশ দিলে ঘটনা স্থলেই এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে ৮ জন মৃত্যু বরন করে। সেদিন সেখানে ম্যাজিস্ট্রেটের বিদ্বেষমূলক আচরনের কারনেই সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম হয়। পুলিশের নিশৃংসতা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, গুরুতর আহতদের নিয়ে রাজশাহী হাসপাতালের উদ্দেশ্যে যখন থানার সামনে দিয়ে একটি বাস যাচ্ছিল তখন সেই বাসেও তারা হামলা চালায় এবং গুলি করে একজনকে হত্যা করে এবং হেলপারসহ অনেককে আহত করে। এই দিনে এদেশের ইসলাম প্রিয় জনতা প্রমাণ করে ইসলামের বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র নিজের জীবন দিয়ে হলেও তারা প্রতিরোধ করবে ইনশাল্লাহ্‌ । এদিকে বিশ্ব মুসলিমের প্রতিবাদের মুখে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এ মামলাটি খারিজের জন্য এটর্নী জেনারেলকে নির্দেশ দেয়।

১৩ই মে কলিকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বি. সি. বসাকের আদালতে স্থানান্তরিত হলে মামলাটি তিনি খারিজ করে দেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।