আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভ্রমন আনন্দময় হয়েছিলো । । শেষ পর্ব

এ ব্লগে আর কোন মৌলিক লেখার দরকার নেই, যেহেতু আমি আমার নিকৃষ্টতম লেখার স্বত্ব ও কাউকে দিতে রাজী নই

। ২। শামসুদ্দীন ফিরে এলো ভুনা মাংসের ঘ্রান নিয়ে । রাত কতো হলো আমাদের কারোরই বোধ করি খেয়াল নেই । ডাকবাংলোতে ডায়ানামোর আলো ।

বাইরে সবুজ জোছনা । জোছনা ও সবুজ হয় এমোন! খাসিয়া পাহাড়ের গায়ে থোকা থোকা আলো । পাহাড়ীদের গ্রাম । শামসুদ্দীন ফিরে এলো টিফিন ক্যারিয়ার ভর্তি খাবার নিয়ে । খাবার মুখ্য নয় তখন, আমাদের পানীয় প্রয়োজন ।

তেলতেল মুখে শামসুদ্দীন হাসে 'মামারা বড়ো দিরং হয়ে গেলো । এত রাতে কই পাই? ঠিক আছে তবু একটা ঘুরান দিয়া আসি' আমরা ও 'ঘুরান' দেবো শামসুদ্দীন । সবুজ জোছনায় মদিরার খোঁজে! শামসুদ্দীন হাঁটে । আমরা হাঁটি । ডিসেম্বরের পাহাড়ী ঠান্ডা গায়ে কামড় বসায় ।

আবীরের গায়ে লেদার জ্যাকেট 'হারামজাদা শুয়োরের বাচচা', চৈতী কে তুই ছিনিয়ে নিবি জানিয়ে আমি । ঐ যে গায়ে জোছনা মাখছে নিঃশব্দে, পার্থ-কবি সে, কবি বলেই চৈতীকে হারাবে । আমি জানি, জানি এই সব । ধবধবে বালিয়াড়ীতে আমরা হাঁটতে থাকি । উথালপাতাল দিক শুন্য পূর ।

শামসুদ্দীন পাওইনিয়ার । এই মাতাল রাতে তৃষ্ণার জল খুঁজে দেবে আমাদের! একটা ঘুপচির সামনে এসে থামে সে । দেখে মনে হয়ে কোনো পাথর শ্রমিক থাকে । টিমটিমে কুপির আলো । আমি ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে ফেলে আসা আলোকিত ডাকবাংলো দেখি ।

অর্থহীন । শামসুদ্দীন ঘুপচি থেকে বেরিয়ে আসে । মাথা নাড়ে । আমরা হতাশ হই । কোন কথা নেই ।

কোনো কথা বলার নেই । ব্যর্থ পাইওনিয়ার ফিরতি পথ ধরে । আমাদের কেবল অনুসরন । এই তৃষ্ণার্ত রাত কতো দীর্ঘ হবে কেজানে? ডাকবাংলোর আলো কাছে চলে এসেছে । শামসুদ্দীন একটুপিছিয়ে আসে ।

আমাদের কাছাকাছি আসে । গলা খাঁকারী দেয় । তেলতেলে হাসে । 'মামারা, বোতল তো মিললোনা । কাইল ঐপার থাইকা এক কেইস আইনা দিমুনে ।

তয় এখন যদি--' আমরা নিঃশ্বাস ফিরে পাই । ভরসা দাও কমরেড ! শামসুদ্দীন আবারো তেলতেলে হাসি ছুঁড়ে দেয় 'এখন যদি ইনজয় করতে চান, মনে লয় ম্যানেজ করতে পারুম । লাগাইবেননি?' নজু নাক কোঁচকায় । একমাত্র সেই মাতাল নয় । বাকি তিনজন ঘাড় কাত করি ।

শামসুদ্দীন আবার হাঁটে । আমার আবার অনুসরন করি । একটা ভাংগা পাঁচিলের মতো । একটা ভাংগা দালানের কাঠামো । টিমটিমে কুপির আলো ।

একটা শীর্ন হাত । নারী দেহের ছায়া । শামসুদ্দীন গলা খাঁকারী দেয় । ছায়া জিজ্ঞেস করে - 'কয়জন?' আমরা নিঃশ্চুপ । তেলতেল মুখ বলে - 'চারজন' ছায়ার দীর্ঘশ্বাস শুনি ।

ছায়া ফিস্ফিসিয়ে বলে- 'চারজনরে লাগাইতে দিলে, আগে আমার খাওন লাগবো ' তেলতেল মুখ হিসহিস করে- 'খাইয়া ল মাগী ' ছায়ার দীর্ঘশ্বাস আরো ধারালো শুনায় 'খাওনের তো কিছু নাই । বেবাক তো ডাকবাংলায় নিয়া গেছেন' । ৩। রাত বোধ হয় ফুরোলো প্রায় । আবীর ঘুমোচ্ছে ।

ওর মুখে সুখী মানুষের ছায়া । ওর ঠোঁটের কোনে পাতলা হাসি । আবীর চৈতিকে ছিনিয়ে নেবে । বাথরুমে পানির শব্দ । নজু বোধহয় গোসল করছে কিংবা ওজু করবে ।

তাহাজ্জুদের ওয়াক্ত হয়ে গেছে মনে হয় । পার্থ বালিয়াড়ীতে চিৎ হয়ে জোছনা মাখছে । হয়তো কবিতা বুনছে। এই ছেলে চৈতীকে হারাবে । আমি বারান্দায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ।

কেউ কেউ কেবল দেখে যায় ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।