আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক লেখকের কথা

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

রাগ ইমনের প্রেমের জন্যে পাগলামী পোষ্টটি পড়ে আমারও এক ঘটনা মনে পড়ে গেল। মনে পড়ে গেল বললে ভুল হবে। ভুলে গেলে সেটা মনে পড়ার প্রশ্ন আসে।

এ এমন এক ঘটনা যা ভুলে যাওয়ার চান্স ভুল করেও নেই। শোন তবে বলি। এক দেশে এক শাহজাদী ছিল। আর আরও কেউ একজন ছিল ছিল। তবে সে কোন রাজকুমার নয়।

সে শিল্পী। । সে লেখক। । আর বেশ খানিকটা পাগল।

। যাই হোক। তো সেই পাগল মানুষটা আমাদের এই শাহজাদীর প্রেমে পড়ে। শাহজাদীও পড়ে। তবে সে শাহজাদী তো! তার অনেক চিন্তা।

ভাবনা। নানাবিধ সমস্যা প্রেমে পড়ার। তাই সে পাগলকে খুব একটা আমলে দেয় না। আবার মাঝে মাঝে একটু দেয়ও। তো একদিন এই পাগলে শাহজাদীরে মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখাতে নিয়ে গেছে।

ফিরতে অবধারিত বেশ রাত। ও হ্যাঁ বলতে ভুলে গেছি, শাহজাদী থাকে এক শহরে আর সে থাকে অন্য শহরে। মাঝে এক নদী। এই কূলে আমি আর ঐ কূলে তুমি কেস। তো সিনেমা দেখিয়ে ফেরার পথে পাগলের একটু বেশি প্রেম পায়।

নদী পেরুতে পেরুতে পূর্ণিমার রাতে ( পূর্ণিমা ছিল কী? যাগ্গে, কি যায় আসে! ) সে চুমু খেতে যায় শাহজাদীকে। শাহজাদী যায় ক্ষেপে। কী! সাথে সারথী আছে, যে কিনা শাহজাদীর বাহন চালায় তার সামনেই চুমু খাওয়া?! শাহজাদী সত্যিই ক্ষেপে যায়। সিনেমা দেখা, রাত করে মহলে ফেরা তবুও মানা যায় তাই বলে চুমু? না! শাহজাদী মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে বসে। মুখে কোন কথা নেই।

লেখক মানুষটার কোন প্লটে এই সিন যায় না। সে আবার স্যরি ট্যরিও বলতে পারে না আর শাহজাদীরও শোনার মুড নেই। তো মহলের সামনে এসে শাহজাদী বিনা বাক্যব্যয়ে নেমে এগিয়ে যায় মহলের দিকে। লেখক বেচারা খানিকক্ষণ চরম বেচারা মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে। শাহজাদী আবার ফিরে ঝাঁঝিয়ে আসে, দাঁড়িয়ে কেন? বাড়ি যাও! লেখক বাড়ির পথে রওয়ানা হয়।

কিন্তু বাড়ি যায় না। নদীর পারে, উড়ালপুলের তলায় তলায় ঘুরে বড়ায় অনেকক্ষণ। অবশেষে ফিরে যায় কিন্তু নিজের বাড়ি নয় , এক বন্ধুর বাড়িতে। চলে সুরাপান। পাগল মাথা আরো পেগলে যায়।

উঠে হাঁটা দেয় রাত দুটোর সময়। সে শাহজাদীর বাড়ি আসবে। রাস্টায় কোন বাহন খুঁজে পায় না সে। তো কী হয়েছে? হন্ঠন হন্ঠন করে তার শহরের শেষ মাথায় নদীর পারে এসে দাঁড়ায় লেখক। পুলের উপর কী উঠতে দেবে সরকারি রক্ষিবাহিনী? কেউ কোথাও নেই।

হাঁটতে থাকে সে। পুল, উড়ালপুল মিলিয়ে সাড়ে চার কিলোমিটার তার সাথে আরো কয়েক কিলোমিটার হাঁটে সে। রাত্রিকে দেখে সকাল হতে। নতুন সূর্যকে দেখে অন্ধকারের বুক চিরে জেগে উঠতে পূবাকাশে। সে হাঁটে।

এক শহর থেকে অন্য শহরে। একসময় পৌঁছেও যায় শাহজাদীর মহলের সামনে। চারদেওয়ালের ভেতর শাহজাদী কি ঘুমে অচেতন, মগ্ন কি কোন সুখস্বপ্নে। টুং টাং শব্দে জানান দেয় মুঠোফোন, সংক্ষিপ্ত বার্তা এলো। শাহজাদী জানতে পারে, তার মহলের নিচে পরিখার ধারে লেখক এসে বসে আছে ভোর হতে।

ছুটে যায় শাহজাদী, কেউ দেখে ফেলেনি তো লেখককে! দ্বাররক্ষকেরা ধরে পিট্টি দেয় নাই তো! শীত তখন আসি আসি করছে। লেখকের মুখে চোখে ক্লান্তির ছাপ। রাত্রি জাগরণের। বহুদূর হেঁটে আসার। শাহজাদীর কী একটু মায়া হয়?! এর পরে কি হইসিলো এখন আর মনে পড়ে না।

শাহজাদী অবশ্য বলেছিল আমিই ভুলে গেছি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।