আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুভ জন্মদিন কবিগুরু:

বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা

শুভ জন্মদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৪১৪ সালের পঁচিশে বৈশাখ। কবিগুরুর জন্মদিন। বাংলার কবিতা গান, সাহিত্য, ও সমাজ চিন্তাকে প্রবলভাবে ব্যাপকভাবে শাসন করছেন কবিগুরু। রবীন্দ্রচেতনা বাস করে তার রচিত সঙ্গীতের সুর মুর্চ্ছনায়, ছন্দময়তায় আর বিশ্ব মননে।

কবির পংক্তিমালা আমার ভাবনা, আর আনন্দ বেদনার নিত্য সঙ্গী। আমার ভাবনায় অসম্ভব প্রেরণা জোগায়। শক্তি দেয়, সাহস দেয়। তার লেখনী হতাশা আর অন্ধকারের মাঝে সূর্যের উজ্জ্বলতা আনে। সেখানে ধারণ করে আছে সামনে এগোবার আস্থা ও শক্তির অন্তহীন উতস।

আজকের জীবনের শত নৈরাশ্যের যাপিত জীবনে একখন্ড প্রত্যয় আর প্রত্যাশার প্রতীক হিসেবে কবি আমাদের বুকে সাহস জোগায়। রবীন্দ্রনাথ এক বিশাল প্রত্যয়, তাকে বোঝা আর বোঝানো আমার মতো অতি নগণ্য মানুষের জন্য অসাধ্য। রবীন্দ্রনাথকে বুঝতে হলে তার লেখাকে পরিচিত করে তুলতে হবে সকলের কাছে। কারণ, তার লেখার বৈচিত্র্য আর প্রাচূর্যে বিমূর্ত হয়ে আছে আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় আর শেকড়ের অস্তিত্ব। কবিগুরু তোমাকে বড্ডো দরকার আমাদের আজকের চৈতন্যের শুস্ক নিষ্প্রাণ চৌহদ্দিতে।

শুভ জন্মদিন। প্রণতি জানাই তোমায়। এই মানুষ হতে না পারা অভাগা বাঙ্গালী জনসমস্টির জন্য কবিগুরু তোমাকে বড্ডো প্রয়োজন। তুমি ফিরে এসো আমাদের চৈতন্যে তোমার কর্মের বিপুল করুণাধারা নিয়ে। আমাদের ভাবনার দারিদ্র্য অবসানে এর যে কোন বিকল্প নেই।

আমরা আনন্দভরা, নির্মল, শান্তিময় ও উচ্ছ্বসিত জীবনের প্রত্যাশায় প্রহর গুণছি সেই অনাদিকাল থেকে। কবি বলে দাও কবে আমরা তোমার সুরে গাইতে পারবো: "নব আন্দে জাগো আজি নবরবিকিরণে শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে। উতসারিত নব জীবননির্ঝর উচ্ছ্বাসিত আশাগীতি, অমৃতপুষ্পগন্ধ বহে আজি এই শান্তিপবনে"। শান্তির নীড় পারব কি রচিতে? বেদনা, ব্যর্থতা, কান্না, যন্ত্রণা, দু:খ, দ্বন্দ্ব, আর মৃত্যুকে অতিক্রম করে প্রশান্ত, স্থিত, সুখী, ও আলোকিত জীবন চাই। বারবার কবি তোমার সুরে প্রশ্ন জাগে, "আর কত দূরে আছে হে আনন্দধাম।

আমি শ্রান্ত, আমি অন্ধ, আমি পথ নাহি জানি"। কবে তোমার কামনা আর প্রার্থনা সত্য হবে বাংলার ঘরে ঘরে? "কামনা করি একান্তে হউক বরষিত নিখিল বিশ্বে সুখ শান্তি। পাপতাপ হিংসা শোক পাসরে সকল লোক, সকল প্রাণী পায় কূল সেই তব তাপিতশরণ অভয়চরণপ্রান্তে"। "নাই নাই ভয়, হবে হবে জয়" বলে ক'বার আমরা বাইরের পাণে তাকাবো। নিজের সত্বাকে অপমানিত করে নির্বাক হয়ে থাকবো।

সকল অন্যায় আর অনাচার চোখ বন্ধ করে নির্বোধ আর নিষ্প্রাণ হয়ে থাকবো। ভোর তো প্রতিদিনই হয়, সূর্য আসে। কিন্তু আমাদের তিমিররাতের অবসান হয় না কেন? বারবার মেঘাচ্ছন্ন হয়, বৈশাখী রুদ্রতা লন্ডভন্ড করে দেয় আমাদের প্রাণশক্তিকে। বারবার গাইতে হয়, "প্রাণ দাও, প্রাণ দাও, দাও দাও প্রাণ হে, জাগ্রত ভগবান হে"। আমরা আনন্দধ্বনি চাই চারদিকে।

বিজয় উল্লাস চাই। জনতার শক্তি দেখতে চাই। দৈবের আশীর্বাদ চাই না। নিয়তিকে নিজের হাতে গড়তে চাই অস্তহীন সূর্যসকালের প্রত্যাশায়। আজকের সকালে আমার হৃদয়ে বেজে উঠা সুরগুলো সকল বাঙ্গালীর হৃদয়কে উদ্ভাসিত করে বেজে উঠুক: "জয় হোক, জয় হোক নব অরুণোদয়।

পূর্বদিগঞ্চল হোক জ্যেতির্ময়। এসো অপরাজিত বাণী, অসত্য হানি- অপহত শঙ্কা, অপগত সংশয়। এসো নবজাগ্রত প্রাণ, চিরযৌবনজয়গান। এসো মুত্যুঞ্জয় আশা জড়ত্বনাশা- ক্রন্দন দূর হোক, বন্ধন হোক ক্ষয়"।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।