আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

13 is an unlucky number



“13 is an unlucky number” ছোটবেলায় কি জানি কিভাবে এই বাক্যটা কানে এসেছিল সেই থেকে যে মাথায় এমনভাবে ঢুকেছে যেন পুরো মস্তিষ্ক খালি হয়ে গেলেও এই বাক্যটি ঠিকই অক্ষত থেকে যাবে। যদিও ভিত্তিহীন এ বাক্যের অর্থকে একজন উদার ও আধুনিক মনের মানুষ হয়েও বিশ্বাস করতে চাইনা ঠিকই তেমনি এ সংখ্যাও (১৩) আমার পাছ ছাড়তে চাইনা। মনে পড়ে, ক্লাস ৯ এ প্রথম এ বাক্যের তরজমা নিয়ে মস্তিষ্ক তার মূল্যবান সময় নষ্ট করে। সেবার ক্লাসে রোল হল একেবারে আনলাকি নাম্বর মানে ১৩। পাত্তাই দিলাম না।

আচ্ছা আজ না হয় আমার ১৩ হয়েছে কিন্তু আমার না হলেও তো কারও না কারও ১৩ হতই। এস.এস.সি পরীক্ষার রেজাল্ট হল, ৪সাবজেক্টে লেটার মার্ক পেলাম কিন্তু স্টার মার্ক পাওয়া হলনা মাত্র ৯ মার্কের জন্য। এক বন্ধু তখন বলে “দেখেছিস ১৩’র রেজাল্ট” এইচ.এস.সি ফাস্ট ইয়ার, এ্যাডমিশন টেষ্টে রোল নম্বর হল ২১৩। এবারো সেই ১৩ আগে অবশ্য একটি ২ আছে। ভালই চলছিল, ফাইনাল পরীক্ষার ঠিক ১৫দিন আগে এ্যাপিন্ডিসাইটস’র ব্যাথা শুরু হল।

তারপর টানা ১মাস হাসপাতালে। সেবার পরীক্ষা আর দেয়া হলনা। মাথার ভিতর কি জানি ভন ভন করত একটা সংখ্যা নিয়ে সবসময়। টোফেল-এ ভর্তি হলাম। সিরিয়াল নম্বর ছিল ১৩৮।

সেই ১৩, শুধে পরে একটি ৮ সংখ্যা। শুরু করলাম ভালই, চলছিলও ভাল। হঠাৎ এক ঝড়ে আমার জীবন ওলট পালট হয়ে গেল। টোফেল ছাড়তে তো বাধ্য হলাম-ই। উপরন্তু বেসরকারী ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েও আর ক্লাস করতে পারিনি।

ইউনিভার্সিটিও ছাড়তে হল। জীবনটা মোড় নিল অন্য এক রাস্তায়। মাত্র ইন্টার পাস করে সংসারের হাল ধরতে ঢুকে গেলাম চাকরি নামক এক বিশাল দায়িত্বপূর্ন পরিধিতে। নিজেকে প্রস্তুত করতে সময় নিলেও একটি অবস্থানে আসার প্রবল ইচ্ছাই পরিশ্রম থেকে কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে শপে দিলাম। এখানেও ১৩ পিছু ছাড়লনা।

পার্সোনাল আইডি নম্বর হল ২১৩২। ১৩’র সামনে পিছনে একটি করে ২। এই প্রথম বোধহয় ১৩’র কোন ইফেক্ট হলনা। দেড় বছরও হয়নি তার আগেই একটি প্রমোশন পেয়ে গেলাম। ১৩ এখানে কোন একটিভ ভূমিকাই পালন করতে পারলনা।

এ ঘটনার পর ১৩’কে আর পাত্তাই দেইনা। পরে কলেজে ভর্তি হলাম সেখানেও রোল নম্বরে ১৩ আছে। এখনও পর্যন্ত ভালই চলছে। আজ কিছুদিন হল এই ১৩’টা আমাকে আবার প্রচন্ড বিরক্ত করছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির দিকে তাকাতেই ৫:১৩মিনিট।

অফিসে পৌছালাম কার্ড সুইপ করছি, দেখি ৯:১৩। মিটিং ১২:৩০-এ কনফরান্স রুমের ঘড়িতে তখন ১২:১৩। মিটিং মেম্বার হিসেবে সিগনেচার করলাম ১৩ নম্বর সিরিয়ালে। সিনেমা হলে টিকেট কেটেছি সিট নং-১৩। বাড়িতে যাব বাসের টিকেটও ১৩।

এরকম যদি বলা শুরু করি তাহলে আর শেষ করা যাবেনা। এই ১৩ আমাকে ১২টা থেকে ১টা বেশী মানে ১৩টা বাজিয়ে দিচ্ছে। এমনটা যেন মস্তিষ্কের নার্ভ গুলোর সাথে একটা গলায় জড়াজড়ি ভাব। যেকাজই হোক ১৩ আগে আছে। হয় বাস্তবে নয়তবা কল্পনায়।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।