আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চোর-এর "বোখারী শরীফের মুখবন্ধ ও আমার কিছু প্রশ্ন" এবং আমার কথা

প্রতিটি সর্যাস্তে বুক বাঁধি একটি অন্যদিনের সূর্যোদেয়র প্রত্যাশায়.......

চোর এইবার আসল জায়গায় হাত দিয়েছেন। ব্লগে পেচাল ছাইরা একেবারে ইসলামী ফাউন্ডেশানের লাইব্রেরীতে। আমি একবার আমার ব্লগে ওনাকে এই পরামর্শটা দিয়ে এখন খুব বিপদে পরে গেছি। আমাকে ওনি ওনার "ছাগুরাম"-দের তালিকায় তালিকা ভূক্ত করে নিয়েছেন। আমি মাইন্ড খাইনি।

এখন উনি ইসলামীক ফাউন্ডেশানের লাইব্রেরীতে হাদিসের উপর পড়াশোনা শুরু করেছন দেখে সব ভূলে গেলাম। আমি আশা করি, জানার উৎসাহ আর আগ্রহ নিয়ে এভাবে চালিয়ে গেলে একদিন ব্লগে যারা হাদিসের বিপক্ষে বলবে, তাদের উত্তর তিনিই দেবেন। হাদীস গ্রন্থ গুলোর মধ্যে যেটা সব চাইতে গ্রহণযোগ্য, সেটা নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। ভাল লাগছে এই ব্যাপারটায়ও। চোর মশাই এক্কেবারে ভুমিকা থেকেই শুরু করেছেন।

এইটাও ভাল খবর। ভুমিকাতেই তিনি যে সব ভূল পেয়েছেন, তা তিনি তুলে ধরেছেন। তবে এ অধম বান্দা (আল্লাহর) তার (চোর) কয়েকটি প্রশ্নের মোকাবিলায় কিছু বলার দুঃসাহস করছি। ভুল হলে ক্ষমা করে দিয়েন। প্রশ্ন-1ঃ মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃতু্যর অনেক পর ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওসমান (রাঃ)-এর তত্ত্বাবধানেই কিন্তু পবিত্র কোরআরনের প্রথম সংকলন প্রকাশ হয়েছিল।

তার আগে সম্পূর্ণ কোরআনের কোন সংগ্রহ কারো কাছেই ছিল না। এক এক জন সাহাবীর কাছে কোরআনের এক একটা অংশ ছিল। কোন আয়াত কোন সুরায় অন্তভর্ূক্ত হবে, কোন সুরা কোরআন শরীফের প্রথমে থাকবে এ সবই হয়েছে হযরত ওসমান (রাঃ)-এর সময়। তাহলে কি আপনি প্রশ্ন করবেন, কেন মুহাম্মদ (সাঃ) নিজেই কোরআনের সংকলন করেননি। তবে কি নবীর সময় এমন কোন ইসলামীক স্কলার ছিলেন না, যিনি কোরআনের সংকলন করতে পারেন? কিংবা হযরত ওসমান (আঃ) কেন নবী জীবিত থাকতেই কোরআনের সংকলন করেননি? মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মৃতু্যর পরে কোরআন সংকলন করার আগ পর্যন্ত কোরআনের বিভিন্ন আয়াত বিক্ষিপ্ত ভাবে যেমন সাহাবীদের কাছে সংরক্ষিত ছিল এবং পরে হযরত ওসমান (রাঃ) সে গুলোকে সংকলিত করে বর্তমান কোরআনের আদল দান করেছেন, তেমনই রাসুলের (সাঃ) হাদিসগুলোও তাঁর মৃতু্যর 200 বছর পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত ভাবে এক এক জনের কাছে ছড়িয়ে ছিল।

ইমাম বোখারী (রঃ) প্রথম সেগুলো সংকলিত করার উদ্যোগ নেন। তার আগে হয়তো কেউ হাদিসগুলো সংকলিত করার এতটা প্রয়োজবোধ করেননি। কোরআন যদি রাসুলের (সাঃ) মৃতু্যর অনেক পরে (40 বা 50 বছর হতে পারে। আমার ঠিক মনে নেই) সংকলিত হতে পারে এবং তার শুদ্ধতা নিয়ে কোন প্রশ্ন না উঠে, তবে হাদিস 200 বছর পরে সংকলিত হলে সেটা নিয়ে কেন প্রশ্ন উঠবে? এটা খুব একটা প্রশ্নবোধক কিছু নয়। প্রশ্ন-2ঃ খুবই সহজ উত্তর।

কোরআন অবতীর্ণ হওয়ার পরে আগের সমস্ত আসমানী কিতাব বা ধর্মগ্রন্থের কার্যকারিতা শেষ হয়ে যায়। এ সম্পর্কে কোরআন শরীফে সুস্পষ্ট লেখা আছে (আমার এ মুহুর্তে আয়াতটা মনে নেই। যদি কারো জানা থাকে তবে উল্লেখ করে দিয়েন)। আর আল্লাহর বানীর সাথে হাদিসের কোন তুলনা বোখারী শরীফের ভুমিকায় (আপনার উল্লেখিত অংশে) করা হয়নি। বলা হয়েছে, কোরআনের পরে সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ কিতাব হল হাদিস।

এই "পরে" শব্দটা কোরআন এবং হাদিসের মধ্যে বেবধানটা তৈরী করে দিয়েছে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। প্রশ্ন-3ঃ আপনার গল্পটা এখানে প্রযোজ্য নয়। বিশুদ্ধ হাদিস সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাঁকে (ইমাম বোখারী রঃ) এমনই রলা হয়। কারণ, হাদিস সংকলনের পর সেসব হাদিসের বিশুদ্ধতা এবং নির্ভযোগ্যতা নিয়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে (যেমন ঐতিহাসিক রেফারেন্স, প্রত্নতাত্তিক এভিডেন্স) অনেক গবেষণা হয়েছে এবং সব গবেষক এমন কথাই বলেছেন।

তাই বোখারী সম্পর্কে আপনার এই মন্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আপনিও যদি ইমাম বোখারীর সংকলিত হাদিসের উপর গবেষণা করে তাঁর ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেন, আমরা সেটাকে সাদরে গ্রহণ করব। তার আগে আপনার মন্তব্য গ্রহণ করতে পারছি না। প্রশ্ন-4ঃ আপনার শেষ কথাগুলো শ্লেষাত্তক। মনে হচ্ছে আপনি ইমাম বোখারীকে নিয়ে, তার হাদিস সংকলনের ব্যাপারটা নিয়ে একটু কৌতুক করলেন আরকি।

কিন্তু আপনি কি জানেন, পৃথিবীতে উল্লেখযোগ্য যত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার হয়েছে, সেগুলোর পেছনে আবিষ্কারকগনের কি রকম অধ্যবসায় ছিল? দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর পৃথিবী বাহ্যিক সব কিছু থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রেখে এক মনে গবেষণা করে গেছেন। তারপর একটা কিছু আবিষ্কার হয়েছে, যার ফল আমরা খুব আরামছে ভোগ করছি। বিজ্ঞানীরা শত শত হাইপোথিসিস-এর উপর গবেষণা করে তা থেকে একটা সুত্রের আবিষ্কার করেন। সুতরাং ইমাম বোখারী 600000 হাদিস থেকে কয়েক হাজার হাদিসকে সহীহ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সে গুলো সংকলিত করেছেন, ব্যাপারটা কি নিতান্তই অযৌক্তিক? সে যাক, সব শেষে একটা সত্য ঘটনা বলে শেষ করছি। ডঃ মরিস বোকাইলী-র নাম অনেকে শুনে থাকবেন।

প্রথমে খ্রীষ্টান ছিলেন। কোরানের ভূল ধরার জন্য তিনি নিজে আরবী ভাষা শিকক্ষা করে কোরানের তরজমা করেন এবং তা বুঝতে চেষ্টা করেন। অন্য কোন ইসলামীক স্কলারের তাফসীর পড়েননি। শেষে যা হল, তিনি কোরানের কোন ভুল তো পেলেনই না, বরং কোরআনের শুদ্ধতায় মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে গেলেন। আমার ও মনে হয়, হাদিসের ভুল ধরতে গিয়ে তিনি (ভাচর্ুয়ালি যার পরিচয় আমাদেও কাছে চোর), নিজেই একদিন হাদিসের ভক্ত হয়ে যাবেন।

ইমাম বোখারী (রঃ) সম্পর্কে তথ্যসমৃদ্ধ কিছু লিংক [লিংক=যঃঃঢ়://িি.িংঁহহধয.ড়ৎম/যরংঃড়ৎু/ঝপযড়ষধৎং/রসধসথনঁশযধৎর.যঃস][/লিংক] [লিংক=যঃঃঢ়://বহ.রিশরঢ়বফরধ.ড়ৎম/রিশর/ওসধসথইঁশযধৎর][/লিংক]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।