আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব তেল-ই বাড়তে থাকে , বাড়েনা কিমি প্রতি সেই প্রাপ্য হার

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

তেলের সাথে তেমন প্রত্যক্ষ সম্পর্ক থাকেনা কোনদিনই ইকরামুলের। তবে সেইসবদিনগুলোতে তেলের দামটা শুনে নিতে হয় তাকে স্যারের গাড়ীর ড্রাইভারের কাছ থেকে যেদিনগুলোতে কোন বড় কর্মকর্তার পদধূলি পড়ে তাদের এই মফস্বলের ভাঙা অফিসে। তখনই কেবল তেলের সাথে তার মস্তিষ্কের যোগসূত্র ঘটে। অফিসের ক্যাশিয়ার হওয়ায় বড়সাহেবদের গাড়ীর ট্যাঙ্কি তৈলে ভরিয়ে তার স্যারের তেল দেয়ার পারদর্শিতার কারনে বাড়তি অর্থের হিসেবটা যে তাকেই করে দিতে হয়। জলপাই শক্তির সামর্থে পুষ্ট তত্তাবধায়ক সরাকারের এই আমলে অবশ্য সরকারী বড় কর্তাদের গাড়ীর ট্যাঙ্কির তৈল চাওয়ার নির্লজ্জতার সপষ্ট বহিপ্রকাশ কমেছে, যদিও তার স্যারের মৌখিক তেল দেয়া কমেনি, কমেনি ট্যাঙ্কির তেল ভরার পুরানো অভ্যাস।

অভ্যাস চাইলেও যে তার স্যার বদলাতে পারবেনা সেটাও ভালো করেই বোঝে ইকরামুল। চাওয়ার নির্লজ্জতা কমলেও গোপন চাপ যে কমেনা বা কমবেনা কখনই এত সহজে। হিসেবটা মিলাতে গিয়ে আজ বেশ হিমশি খেতে হচ্ছে তার। বাড়তি 40 লিটার অকটেন দিতে হয়েছে আজ আগত এক বড় কর্মকর্তার গাড়ীতে । স্যারের নির্দেশ ক্যাশের টাকা অন্য খরচের সাথে এই বাড়তি খরচ এডযাস্ট করতেই হবে।

এবং করতে হবে সম্পূর্ণ আইনানুগ সতর্কতায় যাতে দুদকের বাবারও সাধ্য না থাকে কোন খুত খুঁজে পাবার। কাজটা আজকে আগের মতো সহজ হচ্ছেনা । মাত্র গতকালই তো ঘোষনা হলো তেলের দাম বৃদ্ধির। ড্রাইভারের কাছে শুনতে হলোন। পেপার পড়েই জেনেছে অকটেন প্রতি লিটারে বেড়েছে 9 টাকা।

তারপরও স্যারের নির্দেশ পালন তো করতেই হবে। এর মধ্যে কাল তাকে যেতে হবে ঢাকায় হেড অফিসে অফিসরে কাজে। ঢাকায় কোন টু্যরের ওর্ডার এলেই ঝিমঝিম করে ওঠে তার মাথা। আজ একটু বেশী করছে। এখনও জানেনা বাসের ভাড়া কতো বাড়লো।

অনুপাতের অংক কোন বাস সমিতিই কখনও বোঝেনা সেটা সে ভালোই জানে। তা না হলে ঢাকায় লোকাল বাসেও জনপ্রতি 1 টাকা ভাড়া বেড়ে যায় যখন তেলের দামও বেড়ে যায় লিটারে মাত্র 1 টাকাও। এসবই তো পুরানো অভিজ্ঞতা । এখনতো রাজনীতি মুক্ত, দূষন(!)মুক্ত সরকার। এবার নিশ্চয় ভাড়া বাড়ার সাথে তেলের দাম বাড়ার একটা সামাঞ্জস্য অনুপাত থাকবে।

আশা করতেই পারে সে। তারপরও মাথায় চিন্তার সূতো ছুটতেই থাকে। অফিসের কাজেই তো যাবে , তাতে কি; বাস ভাড়ার বেশীর অংশই তো যাবে নিজের যতসামান্য বেতনের যতটুকু পকেটে থাকে খেয়ে না খেয়ে তার থেকেই। মাঝে মাঝে তার চেতনা আপন মনে হেসে ওঠে গত দশ পনের বছরে কত বারই তো বাড়লো তেলের দাম। [গাঢ়]কিন্তু সেই পনের বছর আগেও সে পেত ট্রান্সপোট অ্যালাউন্স প্রতি কিলোমিটারে যে এক(1) টাকা এখনও পায় তাইই।

অবশ্য যেখানে ট্রেনে যাওয়া যায় সেসব যায়গায় গাটের খরচটা একটু কমে যায়। টিএ বিলে ট্রেনের েেত্র মূল ভাড়ার সাথে 80% বেশী পায়া যায় । কেবল ট্রেন না ঘোড়ার গাড়ীর জন্যেও একই আইন। ঘোড়ার গাড়ীর এই আইন এখনও লিখিত ভাবে বিদ্যমান দেখেই বোঝা যায় কত পুরানো আমলের ব্যবস্থা এখনও আকরে ধরে আছে আমাদের সরকার। [/গাঢ়] দূর্ভাগ্য তার এই মফস্বল থেকে ঢাকায় কোন ট্রেন নেই , নেই কোন ঘোড়ার গাড়ীও।

ভাবতে ভাবতে আরেকবার উপহাসের হাসি চলে আসে মুখে। সেতো চুনোপুটি কর্মচারী। তার স্যার ,যে কিনা বিসিএস অফিসার, গ্যাজেটড কর্মকর্তা তার জন্যেও আইনে লেখা টিএ বিলে প্রতি কিমি সড়ক পথের জন্যে পাবেন মাত্র 1টাকা 25 পয়সা। ভেবে কি হবে। সকালেই ঘর থেকে টাানাপীড়ন বাজেটের থেকেই বেশ কিছু টাকা নিয়ে রওয়ানা তো দিতেই হবে ঢাকায়।

কাগজে তেলের বাড়তি হিসেব মেলাতে মেলাতে তবুও তার মনে আশা জাগে এই সরকারের তো অনেক সদিচ্ছা । নিশ্চয় এইসব অসামাঞ্জস্য আইনেও কোন দিন পড়বে সেই সদিচ্ছার ছাপ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।