আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই পুচকেটা আমার বোনের।

খুব গোলমেলে, নিজেও ভাল জানি না। তবে আছে,এই ঢের।

এই পুচকেটা আমার বোনের। রবিবার সন্ধ্যেয় সে পৃথিবীর আলো দেখে। ওর আসার কথা ছিল আরও একমাস পরে কিন্তু ওর বোধ হয় ভীষণ তাড়া ছিল পৃথিবীর আলো দেখার যার জন্যে সে এক মাস আগেই চলে আসে।

আমার বোন বলে, ওর নাকী খালামণিকে দেখার তাড়া ছিল। একমাস পরে এলে সে খালামণিকে দেখতে পেত না তাই একমাস আগেই... সেদিন সন্ধ্যেয় যখন ওটি থেকে বেরিয়ে ডাক্তার আমার হাতে ওকে দিলেন, আমি ওকে দেখে একেবারে অভিভূত! কী মিষ্টি কী মিষ্টি! মায়ের গায়ের ওড়নাতে জড়ানো এক দেবশিশু আমার দু হাতের মধ্যে। কোন এক জরুরী কাজে এই পুচকের বাবা তখন হাসপাতালের অন্য ফ্লোরে। ওটির সামনে শুধু আমি! জরুরী ভিত্তিতে বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করায় কেউই তখনও পর্যন্ত হাসপাতালে এসে পৌঁছুতে পারেনি। বোন ভালো আছে ডাক্তারের এই আশ্বাসবাণীতে একটুও আশ্বস্ত না হয়ে পুচকেকে কোলে নিয়ে ওটির সামনে বসে পড়ি একটা চেয়ার চেয়ে নিয়ে (রিতিমত ধর্না দিয়ে)।

বোনকে না দেখে এখান থেকে নড়ছি না ! সময়ের আগেই পৃথিবীতে চলে আসার দরুন হয়ত ও একটু চুপচাপ ছিল। নো কান্নাকাটি। আধফোটা চোখ দিয়ে মাঝে মাঝে শুধুপিটপিট করে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিল, কোথায় এলো!! এই শিশুটিকে কোলে নিয়ে বসে থাকাকালীন আমার একবারও মনে হয়নি যে ও ছেলে। ও শুধুই এক শিশু। এক মানবশিশু।

যাকে দেখার জন্যে আমার ছোট্ট বোনটা হয়ত ঘুমন্ত অবস্থায়ও ছটফট করছে। ওকে কোলে নিয়ে আমি ভুলে যাই, ছেলে সন্তানের জন্যে কী ভীষণ আকাঙ্খা নিয়ে এই আট মাস অপেক্ষা করেছে আমার বোনের স্বামী । আমি ভুলে যাই, মেয়ে হলে তাহলে তার স্বামীর প্রতিক্রিয়া কী হবে তাই নিয়ে আমার বোনের দুশ্চিন্তা। আমার একবারও মনে হয় না, ছেলে হওয়াতে আমার বোন নিশ্চিন্ত হবে। তার স্বামী খুশি হবে।

আমি শুধু দেখতে পাচ্ছিলাম এই দেবশিশুকে দেখার পর আমার বোনের মুখে ফুটে উঠবে এক স্বর্গ ীয় হাসি। এক মায়ের হাসি। এই পুচকে, তুই যেন তোর মায়ের ছেলে হোস এই খালামণির শুধুএটাই প্রার্থনা। ভালো থাকিস। মায়ের কোল জুড়ে থাকিস।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।