আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইটস এ্যা মেমোরী

মিডিয়া

আমি এবং এঞ্জেলা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করলাম, এঞ্জেলা বলছিলো আমি তো ডঃইউনুসের আজকের বক্তব্য শুনিনি তাই তুমিই আগে ইন্টাভিউ করো। তারপর তোমার প্রশ্নশুনে আমি দুএকটা প্রশ্ন করবো। আমি এঞ্জলাকে বলছিলাম, শোন কোন রাজনৈতিক প্রশ্ন করেনা ওনিহয়তো উত্তর নাও দিতে পারেন, কারন এই মুহুর্তে বাংলাদেশের রাজনীতি নিষিদ্ধ। এমন কথাবার্তার ফাঁকে ডঃ ইউনূস এসে হাজির হলেন, মাইক্রোফোন বাড়িয়ে পেশাগত দায়িত্বপালনের জন্য প্রশ্ন করতে যাবো নোবেল বিজয়ী ডঃ ইউনুস কে.. আমাকে থেমে যেতে হলো,থামিয়ে দেয়া হলো্। রীতি মত আমার উপড় চড়াও হলেন ইউনুস সাহেবের ভাই মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

"এইযে আপনাকে নিষেধ করেছিনা ইন্টারভিউ নেয়া যাবেনা"। গতকালও এভাবেই তিনি আমার স্বাক্ষাতকার নেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ করেদিয়েছিলেন বলে আমার চেহারা ভুলে যাননি। আমার স্মৃতি শক্তি আরো গভীরে চলে গেল, আমি যখন প্রথম লণ্ডনে আসার জন্য শপিং করতে গিয়েছিলাম , মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের সাথে বঙ্গবাজারে আমার প্রথম দেখা। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তাজা ছাত্র। দিন রাত পত্রিকা পড়ি, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের লিখা প্রথম আলোর মিডিয়া ভাবনার নিয়মিত পাঠক।

লেখক কে কাছে পেয়ে তরুন পাঠক হিসাবে আমি সময় তার সাথে শপিং করলাম একসাথে । ফিরবার পথে আামকে একটা 150 টাকা দিয়ে একখানা সার্ট কিনে দিয়ে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেছিলেন, "ইটস এ্যা মেমোরী", সেই সার্ট আমি তিন বছর সু্যটকেসে রেখে দিয়েছিলাম শুধু মাত্র স্মৃতি ধরে রাখার জন্য। আজ নতুন একটি মেমোরি যুক্ত হলো, সেই পুরোনো সার্টটি হয়তো এখন সুটকেসে রাখার প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে। এঞ্জেলা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো, অবাক হলো উপস্থিত অনেকেই। "নো এক্লুসিভ, আপনাকে ইন্টারভিউ নিতে হলে ঢাকা থেকে অনুমতি নিতে হবে"।

এমন যুক্তিতে আমাকে থামতেই হলো। বললাম,ইভেন্ট কাভারেজে কোন সেলিব্রেটির ইন্টারভিউ করতে আগে ঢাকা থেকে অনুমতি নিতে হয়! এই তথ্য আমার জানা ছিলোনা। তবুও বাংলাদেশী হিসাবে আমাদের নিশ্চই ডঃ ইউনুসকে প্রশ্ন করার অধীকার আছে। তবুও হলোনা। আমাকে সেখানেই থামতে হলো।

এঞ্জেলা বললো আমি হতাশ, বিবিসি লণ্ডনের মত টেলিভিশন চ্যানেলে যদি তোমরা ইন্টারভিউ দিতে না চাও তবে ক্ষতিটাতো তোমাদের, তাছাড়া নোবেল জয়ী মাইক্রোক্রেডিটের এই জনককে আমাদের দর্শকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার সুযোগ আর দ্বিতীয়টি নেই। এঞ্জেলার এই আবেদনও গ্রাহ্য হলোনা। ফিরে যেতে হলো তাকেও। আমি ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, তুমি হতাশ, আর আমি মর্মাহত। মনে মনে বললাম, আমি বৃটেনের অসংখ্য শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও সেলিব্রেটিদের ইন্টার ভিউ করেছি।

নোবেল বিজয়ের পর হাউজ অফ লর্ডসে ডক্টর ইউনুসের স্ব্ক্ষাতকারও আমি এর আগেও নিয়েছি, এমনকি টনী ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরি ব্লেয়ারের জন্ম দিনের পার্টিতে গিয়েও তাকে প্রশ্ন করেছি , উত্তর পেয়েছি সানন্দে চিত্তে। কিন্তু আজ আমার দেশের সোনার ছেলের বেলায় আমাকেই বাধা দিলো আমাদেরই আরেক সোনার ছেলে! পরে খোঁজ খবর নিয়ে জানলাম মুল বিষয় হলো- অর্থ, ডঃইউনুসের স্বাক্ষাতকার নিতে হলে এখন নাকি অর্থ দিতে হয়। আগে থেকে রেজিষ্ট্রেশন করে মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের ঢাকা অফিসে কিছু নিয়ম নীতি মানতে হয়। শুধূ তাই নয় ইউনুস সাহেব বিদেশে কোন অনুষ্ঠানে গেলে সেখানে 'নৃত্যাঞ্চল' নামে সাংস্কৃতিক দলকেও আমন্ত্রন জানাতে হয়। সেখানে বড় অংকের অর্থ দিতে হয়।

গত বছর 14 ডিসেম্বর লণ্ডনের আলেকজ্রান্দ্রিয়া প্যালেসে আয়োজিত ডঃ ইউনুসের গনসংম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে 2হাজার 7শ পাউন্ড বাড়তি দাবী করেছিলেন মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে যদি নিজ দেশের সুর্য সন্তানকে নিয়ে আমরা ব্যবসায় মেতে উঠি তাহলে আমাদের অর্জিত সম্মানকি আমরাই নষ্ট করে ফেলছিনা? পাঠক ,আমার তথ্য বিভ্রাট হলে শুধরে দেবেন। । এসংক্রান্ত নতুন কোন তথ্য জানা থাকলেও শেয়ার করবেন।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।