আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

। । দাস ব্যবসা বিলুপ্তির দুশো বছর:: পর্ব 1 । ।

এ ব্লগে আর কোন মৌলিক লেখার দরকার নেই, যেহেতু আমি আমার নিকৃষ্টতম লেখার স্বত্ব ও কাউকে দিতে রাজী নই

[রং=#666666] [গাঢ়] এ বছর 2007 সালে উদযাপিত হচ্ছে বৃটেনে দাসপ্রথা বিলুপ্তির 200 বছর। মিডলসেক্স বিশ্বিবদ্যালয়ের আফ্রিকান স্টাডিজ বিভাগের এর ড: হাকিম আদি 'রসাথে এ সংক্রান্ত একটি আলাপচারিতা প্রকাশিত হয়েছে 'এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনাল' এর মাসিক ম্যাগাজিনে। এমনেষ্টি'র অনুমতিক্রমেই আলাপচারীতার বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে । [/গাঢ়] [/রং] ----------------------------------------- [গাঢ়] এমনেষ্টি ম্যাগাজিন [/গাঢ়] :: বৃটেনের প্রেক্ষাপটে দাসপ্রথার প্রভাব নিয়ে কি কিছু বলবেন? [গাঢ়] ড: হাকিম: [/গাঢ়] প্রকৃত অর্থে, আধুনিক বৃটেনের এমন কোনো দিক খুঁজে বের করা মুশকিল, যা কোনো না কোনো ভাবেই দাস ব্যবসা দ্্বারা প্রভাবিত নয় । অস্ত্র উৎপাদন থেকে শুরু করে জাহাজ তৈরী, শিল্প বিপ্লব, ব্যাংক-বীমা ব্যবসা - যা কিছুই বৃটেনের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে তার সাথে দাস ব্যবসা কোনো না কোনো ভাবে জড়িত ।

বৃটেনের সকল বন্দর নগরী, উদাহরন হিসেবে ম্যানচেষ্টারের কথা বলা যায়, এর 80% অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এসেছে দাসব্যবসা থেকে । 16 শতকের মাঝামাঝি থেকে 19 শতক পর্যন্ত তিন শতাব্দী ধরে এটাই ছিলো এদের প্রধান বানিজ্য । বৃটিশরা মুলত: আফ্রিকার পশ্চিম উপকুল থেকে দাসদের অপহরন করে নিয়ে যেতো তাদের আমেরিকান ও ক্যারাবিয়ান কলোনী গুলোতে । এটা ছিলো খুবই লাভ জনক ত্রি-মুখি ব্যবসা । বৃটেনের বন্দর গুলো থেকে অস্ত্র , গোলাবারুদ সমৃদ্ধ হয়ে জাহাজ যেতো আফ্রিকান উপকুলে ।

অস্ত্র গোলাবারুদ খালাস করার পর জাহাজ গুলো ভরতো বন্দী দাস দিয়ে, তার পর যেতো আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ান কলোনীতে । সেখানে দাসদের খালাস করে জাহাজ ভরা হতো পুরনো দাসদের দিয়ে উৎপাদন করানো খাদ্য শস্য দিয়ে । এই খাদ্য শস্য বোঝাই জাহাজ ফিরে আসতো আবার বৃটিশ বন্দরে । [গাঢ়] এমনেষ্টি ম্যাগাজিন [/গাঢ়] :: বিনিময়ে আফ্রিকা কি পেলো? [গাঢ়] ড: হাকিম: [/গাঢ়] একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী 16 শতকে ইউরোপিয়ানরা আফ্রিকা গিয়েছে এ কারনে নয় যে, আফ্রিকা অনুন্নত ও দরিদ্্র ছিলো । বরং তারা গিয়েছে কারন আফ্রিকা অনেক সমৃদ্ধ ও সম্পদশালী ছিলো ।

ইউরোপিয়ান রা প্রথমে গিয়েছে সোনা ও হীরা ও অন্যান্য খনিজ আহরনের লোভে । লক্ষ্যনীয় এ সময়টাতেই ইউরোপে এক নতুন অর্থনৈতিক পদ্ধতি বিকাশ লাভ করছে, যা পরিচিতি পেলো ' পুঁজিবাদ ' নামে । এর উপজাত হিসেবে ই শুরু হলো দাসব্যবসা । ইউরোপিয়ান রা আফ্রিকান মানুষদের কে ও সোনা হীরার মতো বিনিময় যোগ্য পণ্য হিসেবে বিবেচনা করলো, কারন এ সময়ে তারা আবিস্কার করেছে নতুন মহাদেশ আমেরিকা । তারা ভেবেছে এই নতুন মহাদেশ হবে তাদের ফসলের মাঠ, 'বাস্কেট অব ব্রেড' ।

আর এ কাজে লাগানো যাবে আফ্রিকার অত্যন্ত সবল, কর্মঠ কালো মানুষ গুলোকে । এ ভাবেই আফ্রিকান দেশ গুলোর সবচেয়ে সবল, কর্মক্ষম , উদ্যমী মানুষগুলো দাস হয়ে পাচার হয়ে গে লো । ফলে গোটা আফ্রিকা জুড়ে রয়ে গেলো দুর্বল ও অসুস্থ রা । এ ভাবে আফ্রিকা হারালো তার কর্মক্ষমতা, উদ্যম ও উদ্ভাবনী শক্তি । এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি এই সময়ে আফ্রিকা তার কি পরিমান জনশক্তি হারিয়েছে ।

দশ কোটি? বিশ কোটি? হতে পারে তারো বেশী । সংখ্যাটা যাই হোক, সিদ্ধান্ত টা এরকম, আজকের আফ্রিকার দরিদ্্র, যুদ্ধ বিধ্বস্ত, অসুস্থ চেহারা মুলত: ইউরোপিয়ানদের তিনশো বছরের দাসব্যবসার পরিনতি । (অসম্পূর্ন...)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।