আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ আত্মীয়-পরিজনের উপর সৎ ও অসৎকর্মের প্রভাব

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

এ পর্ব বুঝতে হলে পোষ্টের নীচে দেয়া লিংক থেকে পর্বগুলো পড়া প্রয়োজনঃ @ দো'আপ্রাপ্ত (২/৭)=ঈমানদার, তাওবাকারী ও আল্লাহর পথের অনুসারীরা এবং তাদের সৎকর্মশীল আত্মীয়-স্বজন। সমাজবদ্ধতায় যেমন পাওয়া যায় জীবনের বিস্তৃত সীমানার সহযোগী, তেমনি অসংখ্য কারণে বাধে সংঘাত-সংঘর্ষ; যার কোনটাই হয়ত বৈরাগ্য জীবনে পাওয়া সম্ভব নয়। অথচ বৈরাগ্যতা একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষের জন্য কখনোই বাঞ্ছনীয় নয়। উল্লেখ্য করা প্রয়োজন যে, ইসলামে আধ্যাত্মজীবন লাভের জন্য বন-জঙ্গল নয়; বরং লোকালয়ের মসজিদে ই'তেকাফের বিধান রয়েছে, যার ব্যাপারে রমাদানের শেষ দশদিনের ফযীলত সবচেয়ে বেশী বর্ণিত রয়েছে। এ প্রসঙ্গ এ কারণে যে, সামাজিকভাবে জীবনকে যাপন করতে হলে পারস্পরিক সৎ ও অসৎকর্মের প্রভাবে প্রভাবিত হওয়া আবশ্যক।

এখানেও সেই দু'টি ধারা বর্তমান অর্থাৎ, ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সমস্ত কাজেকর্মেই পরিবারের সদস্যগণ, প্রতিবেশীগণ, আত্মীয়-স্বজন এবং সমাজ ও দেশের মানুষেরা যদি সৎকর্মে প্রবল হয়, তবে তার প্রভাবে তাদের পরস্পরের জীবনও সুন্দর, শালীন ও সফলতায় প্রোজ্জ্বল হয়ে উঠতে বাধ্য। অন্যদিকে যদি পরিবার থেকে শুরু করে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যাপী চলতে থাকে দুষ্কর্ম, অন্যায়, যুলুম, অশ্লীলতা ইত্যাদি, তাহলে তার কুফলও সবাইকে ভোগ করতে হবে আজ নয়ত কাল, চাই তা হোক শুধুমাত্র পরিবারে কিংবা শুধু সমাজ ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপকতায়। অন্যকথায়, ব্যক্তির ভাল বা মন্দ হওয়া তার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, সমাজ ও রাষ্ট্রে বিরাট প্রভাব ফেলে, যার মাধ্যমে সূচিত হয় সামাজিক শান্তি কিংবা অশান্তি। আল্লাহ্ তা'আলার দয়া তাঁর প্রিয় সৃষ্টির প্রতি অপরিসীম, তাইতো তিনি পূণ্যের হিসাবে অংকের সবক'টি ধারাকে সচল করেছেন সৎকর্মী থেকে শুরু করে তাদের আত্মীয়-পরিজনদের পর্যন্ত। তিনি বলেনঃ ((যারা 'আরশ ধারণ করে আছে এবং যারা এর চারপাশ ঘিরে আছে, তারা তাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সাথে এবং তাতে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মু'মিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে, 'হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী।

অতএব যারা তাওবা করে ও আপনার পথ অবলম্বন করে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করুন এবং জাহান্নামের শাস্তি হতে রক্ষা করুন। 'হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তাদেরকে প্রবেশ করান জান্নাতে, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাদেরকে দিয়েছেন এবং তাদের পিতামাতা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকাজ করেছে তাদেরকেও। আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। 'এবং আপনি তাদেরকে শাস্তি হতে রক্ষা করুন। সেদিন আপনি যাকে শাস্তি হতে রক্ষা করবেন, তাকে তো অনুগ্রহই করবেন; এটাই তো মহাসাফল্য!')) [সূরা গাফেরঃ ৭-৯] লক্ষ্যণীয় যে, ফিরিশ্তাদের দো'আয় প্রথমে তো এসেছে স্বয়ং সৎকর্মীদের কথা, তারপর স্থান পেয়েছে তাদের পিতামাতা অর্থাৎ, আমাদের উপরোল্লেখিত আত্মীয়তার বিভাজনে এটি প্রথম পর্যায়ের।

আর রক্তের সম্পর্কিত এ পর্যায়টি আমরা পেয়েই থাকি আমাদের পিতামাতার নিকট থেকে, তাই আমাদের সৎকর্মের সওয়াবে তাদেরকেই আল্লাহ্ রেখেছেন সৎকর্মীর পরে প্রথম অধিকারী হিসেবে। তারপর এসেছে পতি-পত্নী, যা দ্বিতীয় বিভাগকে নির্দিষ্ট করে, আর আয়াতে এরা পিতা-মাতার পরে স্থান পেয়েছে কেননা, জন্মপর থেকে তো পিতামাতাই সৎকর্মের শিক্ষক ও সহযোগী হয়ে থাকেন আমাদের জন্য, পতি বা পত্নী তো আসেন যৌবনের পরিপক্কতার পর। তারপর আসে সন্তান-সন্ততির পর্যায়, আর সন্তান বলতে শুধু ছেলে মেয়েই নয়; বরং নাতি-পুতিসহ পরবর্তী বংশধরগণও হতে পারে। এছাড়াও পারস্পরিক মেলামেশায় একান্ত আপনজন থেকে শুরু করে যে কোন পর্যায়েরই আত্মীয় প্রতিবেশীগণ ব্যক্তির সৎকর্মের নানাবিধ সুফল লাভ করে থাকেন, যার ব্যাপারে ইসলামের বিধিবিধানে অনেক উল্লেখ রয়েছে। সুতরাং একটি চেরাগ থেকে যেমন হাজারো চেরাগ জ্বালালেও প্রথম চেরাগের আলোতে কিছুমাত্র ঘাটতি ঘটে না, তেমনি দয়াময় আল্লাহ্ আমাদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকেন উদার হস্তে, যাতে আমরা সর্বাবস্থায়ই কল্যাণ ও সাফল্যের সীমানায় অবস্থান করতে পারি।

এ মহা মহিমকে বুঝার সময় কি আমাদের জীবনের এখনো আসেনি? এই ধারার পূর্ব লেখাগুলোর মধ্যে বিগত ছ'টি পোষ্টই সূরা গাফের-এর ৭ থেকে ৯ নং আয়াতে আল্লাহ্ তা'আলা যে দয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন মানবজাতির জন্য, তার বহিঃপ্রকাশ প্রচেষ্টামাত্র। যেখানে পর্যায়ক্রমে "ফিরিশ্তাদের সম্পর্কে", "ঈমান" ও "ঈমানপোষণকারীদের প্রসঙ্গে", "তাওবা" ও "তাওবাকারীদের সম্পর্কে" এবং "আল্লাহর পথের অনুসারী"রা ও তাদের সৎকর্মশীল "আত্মীয়-পরিজন" সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। দো'আ, কে না চায় বলুন? তার উপর যদি তা হয় এমন সত্তাদের পক্ষ হতে যারা সম্পূর্ণ নিষ্পাপ, যারা আমাদের স্রষ্টা ও প্রতিপালক আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি ফিরিশ্তাগণ; যারা মানুষদের মধ্য হতে শুধুমাত্র তাদের সাথেই মুসাফাহা করে, যাদের সাথে ক্ষণিকের জন্য হলেও তাদের সত্তাগত মিল খুঁজে পায় অর্থাৎ, কোন মুমিন যখন অন্তরে ও কর্মে সম্পূর্ণ নিষ্পাপতায় অবস্থান করে তখন। কত উত্তম তাদের জীবন, তাদের সত্তা, তাদের আত্মা, তাদের কর্ম; যাদের কর্ম দেখে ফিরিশ্তাগণ তাদের রবের নিকট ঐ ব্যক্তির জন্য ও তার আত্মীয়-স্বজনের জন্য দো'আয় মুখরিত হয়ে উঠে। ঈমান, মানুষ বলেই পদস্খলনের পর তাওবা এবং জীবন জোড়া আল্লাহর পথের অনুসরণ; এই ব্যাপারগুলোর সাথে জড়িত আমাদের মৌলিকতা, স্থিতি, সফলতা-ব্যর্থতা।

সুতরাং বুদ্ধিমানের জন্য অযথাই কালক্ষেপন নয়; বরং শোনা এবং বুঝা মাত্রই উচিত দাঁত দিয়ে আঁকড়ে ধরার আপ্রাণ প্রয়াস চালানো। কেননা, কে বলতে পারবে যে, এই সুযোগ তার জন্য আগামী কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? আল্লাহ্ আমাদের তৌফিক দিন; আমীন। (এ পর্বের সমাপ্ত এখানে) (দো'আপ্রাপ্তদের ধারাবাহিকতা চলবে) !@@!581227-!@@!581228 !@@!581229 ছবির জন্য !@@!581232 যেখানে। পূর্ব পর্বসমূহ পড়ুন- [link|http://www.somewhereinblog.net/Fazalblog/post/26260|>>

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।