আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

= দিব্য যেন দু'চোখ জুড়ে

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

প্রিয় প্রজন্ম, ঈর্ষণীয় দিন কি চলে গেছে, না কি চলছে কিংবা আগামীতে অপেক্ষা করছে; কিছুই নির্দিষ্ট করতে পারছি না। জীবনের ধুম্রোজালে ঠিক মত কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। আগে তো খোলা চোখেই পৃথিবীকে দেখতে পেতাম; ছোট বেলায় অবশ্য অনেক কাছের গাছালী কিংবা প্রান্তরশেষের গ্রামকে দূরের মনে হত, ছোট চোখ বলেই হয়ত, তারপর বড় হওয়ার সাথে সাথে যেন দৃষ্টির আয়তনও বাড়তে লাগলো। অথচ এখন দেখতে হয় স্বল্প পাওয়ারী হলেও একটি গ্লাসের আড়াল হতে; যেন অনেকটা উঁকি মেরে। হবেই বা না কেন, একদার আগ্রহ, আকর্ষণ অথবা নিতান্তই অজানাকে জানার প্রেরণায় যে কম্পিউটারকে মন থেকে চেয়েছিলাম, কে জানতো যে সে এখন দিনের চব্বিশ ঘন্টার প্রায় পনর/ষোল ঘন্টাই গলায় ঝুলে থাকবে? কখনো তো তারো বেশী, অবশ্য ছুটির দিনগুলোতে কিছুটা নিষকৃতি মেলে।

প্রজন্ম, তোদের জীবনকেও কি প্রযুক্তি এমনি দায়বদ্ধতায় নিমজ্জিত করেছে? আমার কি মনে হয় জানিস্, স্রষ্টা যেন দৃষ্টির লেন্স বিভাজনের সময় অজস্রতা এনেছেন আর সেখান থেকে আমায় দিয়েছেন আড়ালগুলো দেখার ভাগটি; অনেকেই পেয়েছেন তেমনটি হয়ত, কিন্তু আমার দারুন পছন্দ হয়েছে এমন ধারার লেন্স; তাইতো প্রতিটি দৃষ্টিময় ভাবনাতেই আমি সপ্রশংস আন্তরিক সিজ্দা করি তাঁর সমুন্নত সকাশে। অবশ্য এমন দিব্যতেও জ্ঞানের বাইরে তেমন কিছুই দেখতে পাইনা। বুঝতে শেখার দিনগুলোতেই দারিদ্রতা আর কিছুটা দুঃখ আমাদের জড়িয়ে নিল বুকে। সচ্চলতা আর সুখের সাথে আমাদের কি আড়ি ছিল; তা আমার জানা ছিল না। জীবনের যে অংশটাকে যখনি বুঝতে শিখতাম, পৃথিবীময় যেন তারই স্বরূপ খুঁজতে শুরু করতাম, কি জানি এটাই হয়ত আমাদের মৌলিক স্বভাবের একটি, নয়ত টিপু, অপু, সুলতানা, সোহাগ ওদেরেই কেন খেলার জন্য বেছে নিলাম; অথচ বড়দের অনেকেই কত্ত আদর করত তাদের কোলে যাওয়ার জন্য।

ভুবনময় যেন খুঁজে বেড়াতাম ব্যাথার দোসর, হয়ত এ কারণেই যে, যদি জানতে পারতাম এ শুধু আমার একারই নয়; এ পথের ক্লান্ত পথিকের দল অনেক বড়, তবেই যেন ক্লান্তি মুছে যাবে, শক্তি ফিরে আসবে; যমীনকে শক্ত ভিত্তি করে আকাশের নীচে আমি দাঁড়াতে পারবো মাথা উঁচু করে। দৃষ্টির দিব্যতায় আমি স্থির তাকাতাম (এখনো তাকাই) রিকশা ওয়ালার প্রতি, হাত-পা হীন ভিক্ষুকের প্রতি, সন্তানকে একটি বিস্কিট কিনে দিতে পারায় তৃপ্ত বাবার প্রতি, একজন বিধবার প্রতি, একটি ইয়াতীমের প্রতি, সম্পদের প্রাচুর্যে এবং অকাজের প্রাবল্যে নূয়ে পড়া কারো প্রতি, সাম্যবাদের অন্ধত্বে নিমজ্জিত ক'জনের প্রতি, যুলুমের শিকার এক সস্প্রদায়ের প্রতি, যালেমের বিরুদ্ধে একদল মুজাহিদের প্রতি, আল্লাহর ভালবাসায় পৃথিবীর প্রতি নির্মোহ একজনের প্রতি; আমি হারিয়ে যেতাম, কখনো বেদনায়, কখনো ঈর্ষায়, কখনো চেতনায়। তারপর আমি জানলাম প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথাঃ তিনি দৃষ্টিকে নীচের দিকে রাখতে বলেছেন; ঊর্ধ্বে নয়, তবেই সম্ভব অপ্রাপ্তির যন্ত্রণা থেকে নিস্কৃতি পাওয়া। অমানিশার অন্ধকার রাত্রিতে উদ্ভ্রান্ত পাঞ্জেরীর সরণদ্বীপের সন্ধান লাভের মতই জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেল আমার। না চাইতে যা পেয়েছি আর পেয়ে যাচ্ছি তা নিয়েই রীতিমত লজ্জিত, প্রশংসাকারী, অবনত; কি লাভ বলো অন্যের গাছের টসটসে পাকা আম দেখে দেখে নিজের জিভের জল অব্ধলী দেয়ায়? প্রজন্ম, তুই ভাল আছিস্ রে? থাকিস্ অন্ততঃ, আমার জন্য।

তোরই- "ফএমু" ৫-৬.০৩.২০০৭, মদীনা মুনওয়ারা, সৌদি আরব। ছবির জন্য !@@!544825 যেখানে। !@@!544827 !@@!544828 !@@!544829 !@@!544830

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।