আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১৫ বছর পর পাকিস্তানকে হারালো জিম্বাবুয়ে

ঐতিহাসিক এক জয় পেল জিম্বাবুয়ে। দীর্ঘ ১৫ বছর পর টেস্টে তারা পাকিস্তানকে হারালো। টান টান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে ২৪ রানে হারিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-১ ব্যবধানে ড্র করল।

সব শেষ ১৯৯৮ সালে পেশওয়ারে পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের জিম্বাবুয়ে। এর আগে ১৯৯৫ সালে এই হারেরেতেই অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের জিম্বাবুয়ে পরাজিত করেছিল পাকিস্তানকে।

অতঃপর ব্রেন্ডন টেলরের হাত ধরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তৃতীয় জয় পেলে জিম্বাবুয়ে।

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার ও অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের দলে তারকার অভাব ছিল না। গ্রান্ড ফ্লাওয়ার, গাই হুইসেল, গডউইন, নিল জনসন, হেনরি ওলঙ্গা _সেটা ছিল জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাতিহাসে 'সোনালি যুগ'। মুগাবে সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে তারকারা খেলা ছেড়ে দেন। ২০০৫ সালে তো জিম্বাবুয়ে স্বেচ্ছায় টেস্ট খেলা থেকে বিরত থাকে।

তারপর ঘর গুছিয়ে ৬ বছর পর আবার তারা ২০১১ সালে টেস্টে ফিরে আসে। আর এসেই চমক। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১-১ ব্যবধানে সিরিজ ড্র করে। এবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও তারা সিরিজে পিছিয়ে পড়ে সমতা আনল।

ঐতিহাসিক এই জয়ে উচ্ছ্বসিত ক্রিকেটাররা।

আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ। দুর্দান্ত এই জয়ের পুরো কৃতিত্ব ক্রিকেটারদের দিলেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। তিনি বলেন, 'বিশ্বমানের এক দলকে হারিয়ে যে কতটা ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। গত ছয় মাস থেকে আমাদের কোন বোলিং কোচ নেই, তারপরেও বোলাররা যে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। প্রতিনিয়ত আমরা উন্নতি করছি।

এখন আমাদের এমন কয়েকজন পেসার দরকার, যারা নতুন বলে ভালো বোলিং করতে পারেন। টেস্ট ক্রিকেটে প্রতি সেশনেই ভালো করতে হয় এবং আমরা তা করে দেখিয়েছি। প্রথম টেস্টে বিশাল ব্যবধানে পরাজয়ের এমন জয়ে খুবই ভালো লাগছে। ' পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ্-উল-হকও জিম্বাবুয়ের প্রশংসা করলেন। তিনি বলেন, 'দুই টেস্টেই তারা অনেক ভালো খেলেছে।

আমাদের উপর চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছে। তাই এই জয়টা জিম্বাবুয়ের প্রাপ্যই ছিল। আমি শুধু ভেবেছি কিভাবে আরও বেশি রান করা যায়। জিম্বাবুয়ের এই পরিস্থিতিতে আমাদের বোলাররা অনেক ভালো বোলিং করেছে কিন্তু আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে আরও চিন্তা করতে হবে। অবশ্য প্রথম টেস্টে বড় অবদান ছিল ইউনুস খানের।

'

শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মিসবাহ্। পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। কিন্তু হ্যামিল্টন মাসাকাদজার দুর্দান্ত থ্রতে রাহাত আলী আউট হয়ে যায়। জয়ের জন্য নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মাসাকাদজা বলেন, 'আমি ভেবেছিলাম বলটি সরাসরি গিয়ে স্ট্যাম্পে লাগবে। কিন্তু না লাগলেও চোকি (চাটারা) সময় মতো বল ধরে স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়েছে।

যাই হোক রান আউট তো হয়েছে। প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর এভাবে ম্যাচ জয়টা সত্যিই অনেক বড় কিছু। '

দ্বিতীয় ইনিংসে টেন্ডাই চাটারার দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে ধস নামে। ৬১ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। ম্যাচ জয়ের পর চাটারা বলেন, 'প্রথম ইনিংসে আমি তেমন ভালো করতে পারিনি।

দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিংয়ের আগে নিজেকে বুঝিয়েছি, আমাকে লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করতে হবে। আর এই কাজটা আমি করতে পেরেছি। '

প্রথম ম্যাচে ইউনুস খানের ডাবল সেঞ্চুরির জন্য বড় জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচেও দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। তাই সিরিজ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন পাকিস্তানি এই ব্যাটসম্যান।

কিন্তু এমন হার মেনে নিতে পারছেন না ইউনুস খান। তবে জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটারদের প্রশংসা করেছেন তিনি। ইউনুস খান বলেন, 'এই জয়ের পুরো কৃতিত্ব জিম্বাবুয়ে দলের। বিশেষ করে তাদের ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক অসাধারণ। এই ম্যাচে আমাদের হারার অনেক কারণ আছে।

একটা বড় ব্যাপার হচ্ছে মাঠের বাইরে পরিস্থিতি আমাদের ভালো ছিল না। মিসবাহ্ অনেক ঠাণ্ডা মাথার মানুষ, কিন্তু তিনি আমাদের যথেষ্ট সমর্থন দিতে পারেননি। তাছাড়া আমি মনে করি, এ ম্যাচে আমরা উইকেটে গিয়ে অনেক সময় কাটিয়েছি। ওদের বোলাররা অনেক ভালো বোলিং করেছে। তাই জয়ের কৃতিত্ব জিম্বাবুয়ে বোলারদের।

'

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।