আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ডন- দ্য পেইন বিগিনস



হিন্দী ছবি খুব একটা কখনোই দেখা হয় না। তিন ঘন্টা ফালতু হাবিজাবি দেখে সময় নষ্ট না করে বরং ঘুমানোটাই বেশী প্রোডাক্টিভ মনে হয় আমার কাছে। তবে কেউ রিকমেন্ড করলে বাছাই করা সিনগুলো দেখি, নিয়মিতই দেখি। আর উইকএন্ডে সাধারণতঃ একটা রুটিন মেইনটেইন করে চলার চেষ্টা করি, সারাদিন ঘুম, তারপর ঘন্টাকয়েক টিভি দেখা, আর রাত একটু গভীর হলে পোলাপান যোগাড় করে খানিক সময় মজবার আসর বসানো। হলে বসে মুভী দেখার আইডিয়াটা আমার একদমই না-পসন্দ।

অন্ধকারে চুপচাপ বসে থাকা, বিড়ি ফোঁকা যায় না, আশে-পাশে অনেক সৌন্দর্য থাকলেও ঠিক আয়েশ করে তা উপভোগ করাও যায় না। তাই পারলে এড়িয়েই চলার চেষ্টা করি। কিন্তু এবার ঢেঁকি গিলতেই হল, সবাই প্ল্যান করেছে ডন দেখবে, খুব নাকি ফাটাফাটি ছবি। বিকেল পাঁচটায় সাধের ঘুমটা ভাংলো ফোনের আওয়াজে। সাড়ে সাতটার শো, সাতটায় ইফতারি সেরেই ছুটতে হবে, পোলাপান ছবির আগের ট্রেইলার মিস করতেও নারাজ।

এদিকে আজকেই ম্যান ইউনাইটেড আর লিভারপুলের খে লা, এমন জটিল একটা খেলা মিস হবে, ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিনতু প্রতিবারই বিভিন্ন ছুতোয় এড়িয়ে গেছি, আজকেও একই কাজ করতে ঠিক সাহস হলো না, তাই বুকে পাথর বেধেঁই রওনা দিলাম। তবে ইফতারের সময়টা অবশ্য খারাপ কাটেনি। ফুড কোর্টে হাজার রকমের মানুষের সমাগম, ভিন্ন দেশের, ভিন্ন রঙের। দেখে দেখে সময়টা ভালই কাটছিল।

যাহোক, ইফতার শেষে গিয়ে ঢুকলাম হলের ভেতর, আর এক দফা মনটা খারাপ হল। ঠিক পেছনের রো'তেই এক ঝাঁক মাইয়াপান, দেখলেই মনটা উদাস হয়ে যায়। বারবার পেছন ফেরাও যায় না, কেন যে শালার সামনে বা পাশে বসল না, শুরুতেই এমন একটা দাগা। যাউকগা, বহুত কষ্টে নজর দিলাম সামনের দিকে, ছবি শুরু হয়ে গেছে। পুরনো ডনের কাহিনীটা খুব একটা মনে নেই, তাই মেলানোর চেষ্টাও করছিলাম না।

কিন্তু শাহরুখকে অমিতাভের জায়গায় কোনভাবেই বসানো যাচ্ছিল না। ব্যাটা মুশি মুশি রোমান্টিক টাইপের ছবি করে একেবারে টাইপড হয়ে গেছে, কোনভাবেই রাফ এন্ড টাফ ডন বলে মনে হচ্ছিল না। আর ছবির কাহিনীও পুরাপুরি হিজিবিজি হিজিবিজি। চুয়িংগামের মত লম্বা করতে করতে প্রায়ই খেই হারিয়ে ফেলছিল, মাঝে মাঝেই ঘুমিয়ে পড়ছিলাম; তিন-চারটা ছবির মাল-মশলা এক ছবিতেই কাভার করতে চাইলে যা হয়। আর আমি শিওর মালয়েশিয়ান ট্যুরিজম বোর্ডের ইনভেস্টমেন্ট আছে এই ছবিতে।

কোন কারণ ছাড়াই কে.এল সি.সি আর লাংকাভিতে ক্যামেরার অনর্থক ঘোরাঘুরি মেজাজটাই খারাপ করে দিচ্ছিল, এমনকি 'খাইকি পান বানারসওয়ালা' গানটাও ব্যাটারা শ্যুট করেছে কে.এল সি.সি -র পাশে। তবে গানটা শুরুর আগে এক হিজাবী মালে বুড়ীর নাচটা ছিল দেখার মত। যাইহোক, পুরা ছবিটাতে প্রিয়াংকা চোপড়া ছাড়া আর কিছুই ছিল না দেখার মত, সাথে শুরুর দিকে কারিনা কাপুরের কঠিন একটা হট গান। এককথায় তিনঘন্টার অ্যাবসলুট ডিসএ্যাপয়েন্টমেন্ট, প্রিয়াংকা চোপড়া বাদে অফকোর্স। তবে আমি কানে ধরছি, আর সিনেমা হলে হিন্দী ছবি দেখতে যাওয়া না, ঘরে বসে বাছাই করা সিন-সিনারী দেখা অনেক বেটার।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।