আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@ সিয়াম অপরিহার্য হওয়ার পর্যায়গুলো

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আল্লাহ্ সোবহানাহু ওয়াতা'আলা আমাদের উপর এমন কোন বোঝা চাপিয়ে দেননি যা আমাদের বহন করা দুঃসাধ্য; বরং তিনি বড় বড় ব্যাপারগুলোকে এক বারে ফরয না করে ধীরে ধীরে বিভিন্ন পর্যায়ে আমাদের জন্য অপরিহার্যতার বিধান নাযিল করেছেন। যেমনটি আমরা দেখতে পাই সালাত, সিয়ামের ব্যবস্থাপনার বিধানে, মদ হারাম হওয়ার বিধানে এবং আরো অন্যান্যতে। এখানে সালাতের ব্যবস্থার মত সিয়ামের ব্যবস্থাপনাও তিনটি অবস্থা অতিক্রম করে- [গাঢ়]প্রথম ঃ[/গঢ়] রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনা আগমণ করে প্রথমদিকে প্রতিমাসে তিনটি সিয়াম ও আশুরার সওম পালন করতেন। তারপর যখন আল্লাহ্ তা'আলা আয়াত নাযিল করেন- [গাঢ়]((হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববতর্ীদেরকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার। )) (সূরা আল-বাকারাহ্ ঃ 183)[/গাঢ়] -তখন এই ইখতিয়ার দেয়া হলো যে, যার ইচ্ছা রমাদান মাসে সিয়াম পালন করবে আর যার ইচ্ছা সিয়ামের প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীন খাওয়াবে।

এটাই ছিল প্রথম অবস্থা। [গাঢ়]দ্বিতীয় ঃ[/গাঢ়] অতঃপর যখন পরবর্তী আয়াতগুলো নাযিল হয়, যেখানে বলা হয়েছে- [গাঢ়](184) এগুলো গণা কয়েক দিন। তোমাদের মধ্যে কেউ অসুস্থ হলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করে নিতে হবে । আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদ্য়া তথা একজন মিসকীনকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর।

আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণের যদি তোমরা জানতে। (185) রমাদান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হেদায়াতের জন্য এবং সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস পাবে তারা যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে । তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে । আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না, এজন্যে যে, তোমরা সংখ্যা পূর্ণ করবে এবং তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করার কারণে তোমরা আল্লাহ্র মহিমা ঘোষণা করবে এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার।

(সূরা আল-বাকারাহ্ ঃ 184)[/গাঢ়] -তখন সুস্থ মুকীমদের (যারা নিজ নিজ বাড়ীঘরে অবস্থান করছেন) জন্য সিয়াম অপরিহার্য করা হয় এবং রুগ্ন ও মুসাফিরের (যারা নিজ বাড়ীঘর থেকে দূরে কোথাও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সফরে গিয়েছেন) জন্য সুস্থ ও মুকীম অবস্থায় কাযা আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়। এটাই ছিল সিয়ামের দ্বিতীয় অবস্থা। [গাঢ়]তৃতীয় ঃ[/গাঢ়] আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা হতে আলী ইবনে তালহা বর্ণনা করেন- [গাঢ়]রমাদান মাসে মুসলমানগণ যখন এশার সালাত সম্পন্ন করতেন, তারপর হতে পরবর্তী দিনের মাগরিব পর্যন্ত তাদের জন্য পানাহার ও স্ত্রী-সঙ্গম হারাম হয়ে যেত। তথাপি তাদের কারো কারে জন্য রমাদান মাসে এ ব্যতিক্রম কাজ ঘটে যেত। এদের মধ্যে উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহুও ছিলেন।

ফলে একদল লোক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এই অভিযোগ উত্থাপন করেন। তখন আল্লাহ্ তা'আলা আয়াত নাযিল করেন- ((সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য স্ত্রী-সম্ভোগ বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোষাকস্বরূপ এবং তোমরাও তাদের পোষাকস্বরূপ। আল্লাহ্ জানেন যে, তোমরা নিজেদের প্রতি অবিচার করছিলে। তারপর তিনি তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হয়েছেন এবং তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন।

কাজেই এখন তোমরা তাদের সাথে সংগত হও এবং আল্লাহ্ যা তোমাদের জন্য বিধিবদ্ধ করেছেন তা কামনা কর। আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কালোরেখা থেকে ঊষার সাদা রেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রকাশ না হয়। তারপর রাতের আগমন পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। . . . )) (সূরা আল-বাকারাহ্ ঃ 187)। [/গাঢ়] সোবহান আল্লাহ্! দয়াময় রাব্বুল 'আলামীন আমাদের কষ্ট হবে ভেবে কতই না সহজ করে দিয়েছেন।

আল্লাহ্ পবিত্র এবং তিনি পবিত্রতা পছন্দ করেন। তাই তো তিনি রমাদানের এই এক মাসে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আমাদের শারীরিক, মানসিক ও কর্মের সংশোধন-সংযমের মাধ্যমে চাইছেন আমাদেরকে পবিত্র করেন। সেজন্যও তিনি খুব বেশী কষ্ট চাপিয়ে দেননি; বরং করেছেন অনেক সহজ যা আমাদের সাধ্যের সীমায় অত্যন্ত সাধারণ, যদি আমরা তা চাই। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন। আমীন।

(চলবে) ছবির জন্য [link|http://www.msa-wmu.org/images/flyer_ramadan_mubarak.jpg|K

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।