আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাস্তার দু’পাশে অভাবিত জনস্রোত:



রাস্তার দু’পাশে অভাবিত জনস্রোত: নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া অভাবিত সাড়া পেয়েছেন উত্তরাঞ্চলে। রংপুর ও রাজশাহীর দু’টি সমাবেশ উপলক্ষে শনিবার দুপুরে রাজধানীতে রওনা দেন খালেদা জিয়া। বগুড়া পৌঁছতেই বেজে যায় রাত ১০টা। উত্তরা থেকে বগুড়া পর্যন্ত রাস্তায় দু’পাশে যেন বসেছিল মানুষের মেলা। তাদের স্লোগান মুখর সমর্থন ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরকে এগোতে হয়েছে রীতিমতো কচ্ছপগতিতে।

শনিবার রাতে বগুড়া সার্কিট হাউজে বিশ্রাম নিয়েছেন খালেদা জিয়া। গতকাল সকাল থেকেই সার্কিট হাউজের চারপাশে ভিড় জমেছিল কর্মী-সমর্থকদের। দুপুরে রংপুরের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু বগুড়া থেকে রংপুরের ১০০ কিলোমিটারের যাত্রাপথ ছিল আরও অভাবিত। রাস্তার দু’পাশে বাঁধভাঙা স্রোতের মতো নেমে আসে সাধারণ মানুষ।

নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ সব শ্রেণীপেশার মানুষের এমন সমর্থন মানসিকভাবে উদ্দীপ্ত করেছে বিরোধীদলীয় নেতাদের। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে গায়ে হলুদের শাড়ি পরে ফুল ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানান শতাধিক তরুণী সমর্থক। খালেদা জিয়ার সফরকে কেন্দ্র করে রংপুরের সমাবেশকে রঙিন করতে অন্যরকম এক সাজে সেজেছিল রংপুর। রাস্তায় ছিল ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণের আধিক্য। কিন্তু সেগুলোকে ছাপিয়ে চোখে পড়েছে গরুর গাড়ি, ঘোড়া আর পাকা ধানের শীষ।

বগুড়া থেকে রংপুর মহাসড়কটি রীতিমতো ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। একটি সুসজ্জিত অশ্বারোহী দল খালেদা জিয়াকে রংপুর সার্কিট হাউজে স্বাগত জানায়। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম শেষে সমাবেশ মঞ্চে গেলে ভাওয়াইয়া গান দিয়ে তাকে অভিবাদন জানানো হয়। এ সময় প্রিয় নেত্রীকে একটি আম্রপালির চারা ও কার্পেট উপহার দেন জেলা বিএনপি নেতারা। এক সপ্তাহ ধরে মাইকে ক্যাসেট প্লেয়ারে খালেদা জিয়ার বক্তব্য বাজিয়ে প্রচারণা চালিয়েছে রংপুর জেলা বিএনপি।

কয়েক দিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে শ’ শ’ মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়েছেন নেতাকর্মীরা। সার্বিক প্রস্তুতি ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে খালেদা জিয়ার সমাবেশে উত্তরাঞ্চলের ৯ জেলার প্রতিটি রাস্তা যেন মিশেছিল নতুন বিভাগীয় শহর রংপুরে। সমবেতদের অনেককে বলতে শোনা গেছে, আগে কখনও এত মানুষ দেখেননি রংপুরবাসী। খালেদা জিয়ার উত্তরাঞ্চল সফরের কারণে শনিবার রাত থেকেই ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় উত্তরাঞ্চলের প্রধান সড়কগুলোতে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে জনসমুদ্র: বৃষ্টি উপেক্ষা করে রংপুরে নেমেছিল জনস্রোত।

সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিয়েছে মানুষ। লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বিরোধী নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনসমাবেশ পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। খালেদা জিয়ার বক্তব্যের আগ মুহূর্তেই হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামে সমাবেশ স্থলে। কিন্তু কোন হুড়োহুড়ি নেই। সমবেত লোকজন যে যেখানে ছিল বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়েছিলেন ঠাঁই।

উত্তরাঞ্চলের কৌতূহলী লোকজন মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন বিরোধী নেতার বক্তব্য। সমবেত অনেকেই জানিয়েছেন শেষ ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে এ বৃষ্টি তাদের কাছে স্বস্তির পরশ। জনসমাবেশে মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে অভিভূত হয়েছেন খোদ বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াও। তার বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে সে রেশ। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ইস্যু, সরকারের সমালোচনা, নির্বাচন কমিশনের প্রতি হুঁশিয়ারী তার প্রতিটি বক্তব্যেই ছিল দৃঢ়তা।

তারাগঞ্জের আবদুল গফুর বলেন, ১৪ বছর পর নেত্রী এসেছেন। সরাসরি তার বক্তব্য শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অনেক কষ্ট করে এসেছি। বৃষ্টির জন্য সমাবেশ থেকে সরে পড়ার কোন অবকাশ নেই। আবদুল গফুরের মতোই মনোভাব প্রকাশ করেছেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারী অনেকেই। তাজহাট জমিদার বাড়ি পরিদর্শন: রংপুর জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশের পর খালেদা জিয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী তাজহাট জমিদার বাড়ি পরিদর্শন করেন।

সেখান থেকে রাত ৮টার দিকে তিনি বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। রাতে বগুড়া সার্কিট হাউজে অবস্থান শেষে আজ সকালে তিনি রাজশাহীর উদ্দেশে যাত্রা করবেন খালেদা জিয়া। বিকালে রাজশাহীর মাদরাসা মাঠের জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।