আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক শনিবারের আড্ডা

বাংলাদেশ নিয়ে ভাবনা, প্রত্যাশা ও সম্ভাবনার সংগ্রহমালা

বেশ কয়েক সপ্তাহ থেকে সবার সাথে আলাপ করেই আড্ডার দিনক্ষণ ঠিক হলো। নাগরিক জীবনের ব্যস্ততায় খালি ছোটাছুটি। আড্ডার ফুসরত কোথায়? তাই সবার সম্মতিতে ঠিক হলো শনিবার দিন ধানমন্ডির 27 নম্বর রোডে এক চাইনীজ রেস্টুরেন্টে বিকেল বেলা আমরা দু'ডজন বন্ধু বসব। যেমন কথা তেমন কাজ। শনিবার দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আমরা দুই বন্ধু যথাসময়ে হাজির।

ঢুকেই বললাম, টেবিল লাগাতে। জিগ্যেস করল, ক'জন লোক। বললাম, দু'টো টেবিল এক করে 20 জনের মতো বসার আয়োজন করতে। ওয়েটারকে বললাম, এখানে যখনই গেস্ট আসে তখনই যাতে খাবার দেওয়া হয়। সময় গড়ায়।

বন্ধু বান্ধব সবাই আসছে। মোবাইল ফোনের দৌরাত্মের কারণে সবাই 15 মিনিটের মধ্যে চলে আসছে। যদিও বেশ ভাল করেই জানি, অনেকে বনানীতে বা মগবাজারে জ্যামের মধ্যে বসেও বলছে 15 মিনিটের মধ্যে আসছে। কি আর করা? কেউ আসল শুধু বউ নিয়ে। কেউ আসল বউ(দের?) ও বাচ্চাদের নিয়ে।

কেউ আসলই না। কেউ হাজির হলো রাত নয়টার দিকে। ছেলেরা এক পাশে বসল। বউরা তাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে আরেক পাশে। হঠাৎ করে সবার বয়স খুব কমে গেল।

শুরু হয়ে গেল আগের মতো আড্ডা আর খিস্তি (অবশ্যই নীচু গলায়)। কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। যারা অফিস আর ব্যবসায়িক কাজকর্মের কথা পাড়তে চাইলো তাদেরকে উওম মধ্যমের হুমকি দেওয়া হলো। তার মধ্যে এক বন্ধুর বাচ্চা বমি করাতে সে তার বউ বাচ্চা নিয়ে উধাও। আরেক বন্ধুর ছেলে আলু ভাজির (ফ্রেঞ্চ ফ্রাই) জন্য কান্না শুরু করলো।

বাবা আর 4 বছরের ছেলে দু'জনেই বেশ গোঁ ধরে থাকাতে কিছুণের জন্য আড্ডার ব্যাঘাত ঘটলো। একজন খেতে চায় আর আরেকজন ভাবে ওতো বেশী খেলে বদহজম হবে। ওয়েটার ভাবে এটা কি ধরণের আয়োজন? 4/5 জন করে আসছে। খাচ্ছে আবার চলে যাচ্ছে। টেবিলের এক দিকে জটলা করে আবার ক'জন আড্ডা মারছে।

ও ব্যাটা বুঝবে কি করে যে, যুৎসই আড্ডা দেওয়ার জন্য এধরণের ওপেন চাইনীজ ছাড়া আর কোন বিকল্প আমাদের হাতে ছিল না। তার মাঝে ঢাকায় কয়েক ঘন্টার জন্য বিদু্য থাকে না। বাইরে গরম। তাই চাইনীজ খাওয়া হলো, ঠান্ডাও পাওয়া গেল। তারই ফাঁকে ফাঁকে যদ্দুর সম্ভব আড্ডা মেরে নেওয়া।

চলল রাত 11টা পর্যন্ত। মন্দ না। দেশে যখন সময়ের ব্যাপারে সবাই খুব স্বাধীন, তাই বাঙ্গালীর আড্ডার জন্য অপেন আইটেম হিসেবে আড্ডার ব্যবস্থা করা হলো। সন্ধ্যা 7 টা থেকে রাত 11টার মধ্যে যদি কোন বন্ধু ঢুঁ মারতে না পারে তা হলে অবশ্যই ডাল মে কুছ কাল হ্যা। আড্ডা হয়েছে কি না জানি না, তবে সবাইকে জড়ো করতে পেরেছি আর তাদের দন্তবিকশিত বদনখানি দেখতে পেরেছি, সেটা কি আর কম আনন্দের(ক্লোজআপহাসি)?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।