আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছবি রিভিউঃ গহিন জঙ্গলের গভীর মমতার ছবি ‘শিম্পাঞ্জী’


একটি প্রাণীর সামাজিক বন্ধন,তাঁদের আবেগ অনুভূতি নিয়ে কি কখনো চিন্তা করি? কখনো কি ভাবি বনের গহিন জঙ্গলের প্রাণীদের পরিবার নিয়ে? প্রাণীদের বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম, তাঁদের হাসি-আনন্দ, দুঃখ-কষ্ট, আবেগ-ভালবাসা কোনটাই কি আমাদের চেয়ে কম? আমরা কি কখনো এগুলি বুজতে চেষ্টা করি? বন্যপ্রাণী নিয়ে অসাধারণ ছবি ‘শিম্পাঞ্জী’ আমাদের চিন্তা ভাবনাকে তুমুল নাড়া দিবে একথা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।
হাই রেজুলেশনের এই ছবির প্রায় প্রতিটি দৃশ্য অসাধারণ দক্ষতায় ও বুদ্ধিমত্তায় গ্রহণ করা হয়েছে। ছবির নির্মাণ টিম ছিল এই কাজে খুবই অভিজ্ঞ ও দক্ষ। প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয় করা হয়েছে ছবিটি বানাতে। প্রতিটি দৃশ্য ধারণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, সাথে প্রাণীবিজ্ঞানীদের অক্লান্ত গবেষণা ও শ্রম।


কাহিনীঃ ‘শিম্পাঞ্জী’ বন্যপ্রাণী বিষয়ক ছবি হলেও এর কাহিনী খুবই চমৎকার। এই ছবির কাহিনী গড়ে উঠেছে একটি তরুণ শিম্পাঞ্জীর জীবনের উত্থান পতন নিয়ে যার নাম অস্কার। অস্কার এর জন্ম আফ্রিকার এর গহীন জঙ্গলে একটি শিম্পাঞ্জী দলে যে দলের নেতা ফ্রেডি। শিশু অস্কার জীবন যাপনের জন্য তাঁর মা ঈশার উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। বনের পরিবেশ যেখানে খাবার খুবই অপ্রতুল ও পাওয়া কষ্টসাধ্য সেখানে বেঁচে থাকার জন্য দরকার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ।

এই প্রশিক্ষণ অস্কার পেয়ে থাকে তাঁর মা ও দলের অন্যদের কাছ থেকে। তাছাড়া নিজেদের এলাকা দখলমুক্ত ও নিরাপদ রাখতে প্রতিপক্ষ দলের সাথে তাঁদের প্রায়ই যুদ্ধ করতে হয়। খাবারের জন্য অস্কারদের এলাকায় প্রায়ই আক্রমণ করে স্কার এর নেতৃত্বে আরেকটি শক্তিশালী শিম্পাঞ্জীর দল।
এক বৃষ্টিস্নাত দিনে দুর্বল মুহূর্তে সুযোগ বুজে স্কার তাঁর দলবল নিয়ে অস্কার এর দলের উপর হামলে পড়ে। অস্কার এর মা ঈশা আহত হয়ে হারিয়ে যায়।

অস্কার এর জীবনে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। মাকে সে সারাক্ষণ খুঁজে ফিরে কিন্তু পায়না কারণ আহত ঈশা হয়ত কোন শিকারি প্রাণীর পেটে চলে গেছে। ক্ষুধার্ত অস্কার এখনো পাথর ব্যবহার করে শক্ত ফল ভেঙ্গে খাবার বের করতে উপযুক্ত হয় নাই। এখনো পুরোপুরি শিখে নাই খাবার সংগ্রহের অন্য পদ্ধতিগুলি। দলের অন্য শিম্পাঞ্জী মায়ের কাছে গিয়ে সাহায্য চায় কিন্তু তারাও তাকে তাড়িয়ে দেয়।

অস্কার দ্রুত দুর্বল হতে থাকে, তাঁর ওজন কমে যায় মারাত্মক পর্যায়ে।
অস্কার এর জীবনে তখন আশার আলো হয়ে দেখা দেয় দলনেতা ফ্রেডি। শিম্পাঞ্জীদের সকল আচরণকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে দলনেতা পুরুষ ফ্রেডি অস্কার এর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়। স্কার শক্ত খোলস ভেঙ্গে অস্কারকে খাবার বের করে দেয়, পিঠে বসিয়ে সাথে বহে বেড়ায়। ধীরে ধীরে অস্কার দলের মধ্যে স্থান পেতে থাকে।

দলেও শৃঙ্খলা ফিরে আসতে থাকে। এরই মধ্যে আরেকবার স্কার এর দল হামলা করতে আসে। এবার না পালিয়ে অস্কার এর দল ফ্রেডির নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ায়। তুমুল যুদ্ধে ফ্রেডির কাছে স্কার পরাজিত হয়। পালিয়ে যায় হামলাকারী স্কার, বিপদমুক্ত হয় অস্কার এর দল ফিরে পায় তাঁদের নিজস্ব এলাকা।

এদিকে অস্কারও ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। অন্য সকলের সাথে তাঁর সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে থাকে। তরুণ শিম্পাঞ্জীদের সাথে অস্কার হেসে খেলে বেড়ায়। দলে আবারো স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসে।
এই ছবিটি বানিয়েছে বিখ্যাত ন্যাচার ফিল্ম কোম্পানি ‘ডিজনিন্যাচার’,।

কাহিনী রচনা, পরিচালনা ও প্রযোজনা করেছেন ব্রিটিশ লেখক মার্ক লিনফিল্ড ও এলাস্টিয়ার ফটারগিল। এদের সহায়তা করেছেন ডন হ্যান ও এলিক্স টিডমার্স।
যারা প্রাণী নিয়ে পড়ালেখা ও গবেষণা করেন তাঁদের জন্য এই ছবিটি ভাল একটি শিক্ষণীয় বিষয় হবে বলা যায়। এই ছবির প্রতিটি দৃশ্য ধারণের দক্ষতা ও কৌশল খুবই অতুলনীয়। ফ্রেমিং এর কৌশলের কারণে ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারদের জন্যও এই ছবিটি চরম উৎসাহ জোগাবে।

সবাইকে ধন্যবাদ
মাইন রানা mayeenrana17

সোর্স: http://www.sachalayatan.com/     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।