আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দখল-দূষণে মৃতপ্রায় শীতলক্ষ্যা

মরতে বসেছে এক সময়ের স্রোতস্বিনী শীতলক্ষ্যা।

দখল ও দূষণের কারণে ক্রমে মরে যাচ্ছে নদীটি। নদীর স্বচ্ছ ও সুপেয় পানি শিল্প-কারখানার বর্জ্যে এখন বিষাক্ত হয়ে উঠছে। পচে উৎকট গন্ধ ছড়াচ্ছে। ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো নদীর পানি এখন পুরোপুরি দূষিত হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া নদীর সংযোগ খালগুলো ধীরে ধীরে ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথও পরিবর্তন হতে চলেছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)-এর তথ্য মতে, শীতলক্ষ্যা নদী অবৈধ দখলের তালিকায় রয়েছে ১২৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। বুড়িগঙ্গার পর আগামীকাল শীতলক্ষ্যা নদী অবৈধ দখল মুক্ত করতে শুরু হচ্ছে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম। দূষিতের তালিকায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বোর্ড মিল, ডাইং, অয়েল রিফাইনারি কারখানা, লেদার প্রক্রিয়াকরণ কারখানা, পাল্প অ্যান্ড পেপার মিল। জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) মো. আলমগীর হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা ঢাকার চারপাশের চার নদী রক্ষায় কাজ করছি।

এ ছাড়া চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি শীতলক্ষ্যার পানি দূষিত করার অভিযোগে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, দুই ধারে গড়ে উঠা কারখানাগুলোতে বর্জ্যের ড্রেনেজ সিস্টেম রয়েছে সরাসরি শীতলক্ষ্যায়। আর এই নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর। ফলে সব কারখানার বর্জ্য পরিশোধন ছাড়াই এসব নদীতে এসে পড়ে। তার সঙ্গে এই নদীতে পড়ছে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলির বর্জ্য।

এ ছাড়া ঢাকা শহরের উত্তরাঞ্চলের সব কারখানা ও বর্জ্য বালু নদীতে পড়ে। সেখান থেকে সোজা চলে আসে শীতলক্ষ্যায়। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের আশপাশের শিল্প-কারখানা থেকে ৪২ ধরনের রাসায়নিক বর্জ্য নদীর পানিতে মিশছে। বর্ষাকালে নদীর পানি বেশি থাকায় ততটা বোঝা না গেলেও শুষ্ক মৌসুমে পারাপারের সময় মানুষের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পানির দুর্গন্ধে নদীর দুই তীরে বাস করাও কষ্টকর।

বিভিন্ন শিল্প বর্জ্যের কারণে দেশের দ্বিতীয় দূষিত নদী হিসেবে শীতলক্ষ্যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিষাক্ত শিল্পবর্জ্যে শীতলক্ষ্যা এখন মুমূর্ষুপ্রায়। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জ জেলার ১০ থানা এলাকার তিন শতাধিক ডাইং ফ্যাক্টরির মধ্যে বৃহৎ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এফলুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) বা বর্জ্য পরিশোধন প্রকল্প স্থাপন বাধ্যতামূলক হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই ব্যয় বৃদ্ধির কারণে তা স্থাপন করা হয়নি। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা বিচ্ছিন্নভাবে নদী রক্ষায় কাজ করলেও তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। এ ব্যাপারে নৌ-পরিবহন সচিব মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, নদী রক্ষায় ওয়াকওয়ের নির্মাণ কাজ চলছে।

শীঘ্রই নদীর পানি দূষণ রোধ ও অবৈধ দখলদার মুক্ত করার জন্য অভিযান শুরু করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. তুহীন মালিক বলেন, স্বরাষ্ট্র ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতায় ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করতে হবে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।