আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

[রং=#339999][সাইজ=5]মিতুর কথা[/সাইজ](প্রথম পর্ব)[/রং]

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

[সাইজ=3][আন্ডার]মামুন ম. আজিজ[/আন্ডার]/2006[/সাইজ] মিতুর সাথে রাতুলের বয়সের পার্থক্য পাঁচ ছয় বছরের কম না। বয়সে রাতুল মিতুর সিনিয়িার হওয়া সত্ত্বেও ওদের বন্ধুত্বটা তুমি থেকে তুই তে উপনিত হতে বেশীদিন সময় লাগেনি। রাতুলের স্পষ্ট মনে পড়ে মিতুর বাসায় নিজের 26তম জন্মদিনের অপ্রত্যাশিত চমক। এরকম অনাড়ম্বর কিন্তু নিগুড় বন্ধুসুলভ এবং স্বচ্ছ আনন্দ ছড়ানো জন্মদিন কখনও পালিত হয়নি রাতুলের ব্যাস্ত কাটখোট্টা জীবনে এর আগে। সেদিন মিতুদের বাসায় মিতু , মিতুর আদরের ছোট লক্ষীবোনটা, মিতুর অসুস্থ ছোট ভাই এবং মিতুর দুজন বান্ধবী হরেক রকম চমক নিয়ে বসে ছিল ।

রাতুল কে আসতে বলেছিল বাসায়, কিন্তু বলেনি এ সারপ্রাইজ আয়োজনের কথা। রাতুল ঘরে ঢুকতেই বেলুন ফাটিয়ে মাথায় জরি ঢেলে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিলো ওরা। নির্ভেজাল আনন্দে ওরা রাতুলের জন্য ওর প্রিয় চটপটি রেঁধেছিল। ছিল আর ও কিছু হালকা খাবারের আয়োজন। ছিল ছোট ছোট উপহার।

কেকও একটা আনিয়েছিল ওরা নিজেদের জমানো পয়সায়। দু'মাস কেটে যায়, ব্যস্ত সবাই যে যার ব্যস্ততায়। রাতুল নতুন চাকুরীতে জয়েন করেছে তখন সবেমাত্র । মিতুও অনার্সে ভর্তি হয়ে ক্লাশ নিয়ে ব্যস্ত। ছাত্রী হিসাবে মিতু একদম আপার ক্লাসের কাছাকাছি।

মাঝে মাঝে কথা হয় মোবাইলে দু বন্ধুর। নিভের্জাল বন্ধুত্ব। হঠাৎ একদিন দুপুরে রাতুলের মোবাইলে মিতুর কল এল। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে মিতু বলল, রাতুল বাবা হঠাৎ আমার বিয়ে ঠিক করেছেন। ছেলে পছন্দ না আমার।

সেটার চেয়ে বড় আমি বিয়ে করবনা এখন, পড়াশোনা করব। রাতুল কি বলবে বুঝে উঠতে পারছিলনা। মিতু চেপে ধরেছিল বিয়ের ভাঙার কিছু একটা ব্যবস্থা করেতে । একটা ফন্দিও এঁটেছিল ওরা ক' বান্ধবী মিলে। যে মিতু সব বান্ধবীকে উপদেশ বিলিয়ে বেড়াত, সমস্যা সমাধান দিত আজ সেই অন্যের কাছে সমাধান চাচ্ছে।

রাতুল চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ছেলে প আর মিতুর বাবা যত সমস্যাই দেখা দেখ না কেন পণ করেছেন যেন বিয়ে দিয়েই ছাড়বে। পরদিন সকালে মিতু ফোন করে বলেছিল সেদিন বিকালে বিয়ে । মিতু হঠাৎ নিরবে রাজী হয়ে গেল । একরাতে ভোল পাল্টে গেছে অথবা জোর করে মন কে পাল্টাতে হয়েছে পারিবারীক চাপে।

রাতুল সেদিন মিতুর কন্ঠে দেখেছিল ভীষণ শান্ত একটা ভাব। জল শুকিয়ে বিল যেমন চৌচির খটখটে হয়, ঠিক তেমনি কান্না শুকানো নিরুত্তাপ কন্ঠ যেন মিতুর। সন্ধ্যায় কাজ ছিল রাতুলের । বিকেলে ঘরোয়া বিয়ের সাদামাটা ডামাডোলের মধ্যে বাসায় গিয়ে মিতুর সাথে দেখা করে আসে। ভবিষ্যত সুখ কামনা করা ছাড়া আর কিছু বলার ছিলনা রাতুলের ।

যদিও সেদিন মিতুর মায়াবী মুখে মায়ার তীব্র অনুপুস্থিতি দেখেছিল রাতুল। মিতুর মা ওকে তো ছাড়বেইনা। কিন্তু উপায় নেই । চলে আসতেই হলো। বিয়েও হয়ে গেলো সেদিন মিতুর।

বিয়ের পর প্রথম প্রথম মিতু ফোন করত বাবার বাসায় এলে। মাঝে মধ্যেই আসত। ক্লাস শুরু করেছিল। ক্লাশ শেষে মার সাথে দেখা করতে আসত , বিকালে ওর হাসবেন্ড নিয়ে যেত এসে। অথবা গাড়ী পাঠিয়ে দিত।

মিতুর কাছে জানল ওর স্বামী মহাশয় টি বেশ ভাল মানুষ। ভালই আছে মিতু, সেরকমই বলতে চাইল। ও বাড়ীর বড় বউ। বেশ কদর। রান্না বান্নাও মাঝে মধ্যে করতে হয়।

শশুর শাশুড়ী তাই চায়। ছেলেরা বেশ বিত্তশালী মিতুর নানান কথায় তা বুঝতে পেরেছিল রাতুল। রাতুল কে বলেছিল সুযোগ করে একদিন পরিচয় করিয়ে দেবে। মিতু খুশী মনে সংসার করছে জেনে রাতুলের ভাল লাগল। কিন্তু ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও পড়ালেখাটা মনে হয় বন্ধ করতেই হলো মিতুকে।

বড়লোক শশুড় শাশুড়ী তাদের বড় বউমাকে সংসারের গুরু দায়িত্ব অনেকটাই অর্পণ করেছিলেন । পড়াশোনার গুরুত্বটা তাই সেখানে ছিল ঠুনকো । শেষ যে দিন মিতুর বাবার বাসায় রাতুলের মিতুর সাথে দেখা হলো সেদিন মিতু ওকে জানাল ও কনসিভ করেছে। রাতুল শুনে সত্যিই অনেক খুশি। আরও খুশি বড়লোকী হাসি মাখা মুখ টা দেখে।

যদিও রাতুল জানে বাংগালী বধূদের মুখ দেখে আসল সত্য বোঝা অনেক কঠিন। [রং=ৎবফ] [আন্ডার](বাকী অংশ পরবর্তী পোষ্টে)[/আন্ডার]...................................[/রং]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।