আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালচাড়াল গল্প

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

কাসিদ প্রশ্নটা শুনেই ভাবতে বসলো, তারপর বললো, ভাই আপনি আমাকে 1 সপ্তাহ সময় দেন, 1 সপ্তাহ পর আপনাকে আপনার উত্তর জানাবো ইনশাল্লাহ। ঠিক আছে কাসিদ ভাই আমি 1 সপ্তাহ পরে আসবো বলে বেড়িয়ে গেলো বাসিক, ধু্যত শালা গবেষণার সময় যন্ত্রপাতি হাতের কাছে পাই না বলে হতাশায় শ্রাগ করে, অমনি মনে হয় সিংহপুরির চত্তরে ইথারে ভেসে আসে সঙ্কেত, এই নেটওয়ার্ক কানেকটর না খুঁজে ওখানে বসে গুগলে সার্চ দিয়ে গবেষণার কাজটা চালিয়ে নেওয়া যাবে, আজকাল ইন্টারনেট হচ্ছে গবেষণার স্বর্ণখনি, কিন্তু আহারে নাফরমান বান্দারা ওরা পর্নো সাইটে যাবে কিন্তু এইসব গবেষণার কাজে সময় নষ্ট করবে না, থরে থরে মনিমানিক্য সাজানো, গুগুলে একটা গুতা দিলেই ঝরঝর ঝরঝর ঝড়েছের মতো জ্ঞান ঝড়ে পরে,ঝর্নার মতো জ্ঞানপ্রসবনে ল্যাপ্পি ভিজে যায়। অবশেষে পরীক্ষিত সঙ্গিনী মাহিজাবিনের কাছে ইমেইল-মাহিজাবিনের উত্তর চলে আসে অতিসত্ত্বর, আপনি কাশেম ভেজালপুরী কিংবা রহমান দহলীজির সাইটে যান ওখানে পাবেন সব কিছুই, কিংবা ইউসুফ জবরজংও কনসালট করতে পারেন, 1000 বছর আগে ওরা এইসব ইন্টারনেটে রেখেছিলো, কি আশ্চর্য জানো কোরানের ফজিলতে সেই 1300 বছর আগে যেই জ্ঞান ওরা রেখেছিলো ইথারে তাই ইন্টারনেট দিয়ে এখন নামানো যাচ্ছে। মাঝে মাঝে আবেগী হয়ে মাহিজাবিন যখন তাকে তুমি বলে তখন কি সুইট লাগে শুনতে। সপ্তাহ খানেক পরের কথা, কাসিদ গলা খাঁকরি দিয়ে শুরু করে, বুঝলে ভায়া আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে পাপ কি? কেনো পাপ হয়? আমাদের বুঝতে হবে বৈধ্য-অবৈধ্যর সংজ্ঞা,সেই 1400 বছর আগে যখন গানবাজনা হতো তখন কাফেররা সব হিসাব করে ওয়াজ মেহফিলের দিনে গানের জলসা বসাইতো, তাতে নব্য সাহাবারা ওয়াজ না শুনে গানের জলসায় গিয়ে বসে থাকতো, আর তখন জানোইতো আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ, বেলী ড্যান্স হইতো, সেই বেলী ড্যান্স দেখে সাহাবাদের সংযম বাসনা কেটে গিয়ে সংগম বাসনা জাগরুক হতো, সাহাবাসমাজের চিত্তচাঞ্চল্য নির্বাপনের জন্য তখন ঘোষণা দেওয়া হলো ওয়াজ শেষে যে বলতে পারবে ওয়াজের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আগামি যুদ্ধে গনিমতের মাল হিসেবে যে কয়টা মেয়ে আসবে তাদের সবাইকেই তার সাথে রাখার ব্যাবস্থা করা হবে।

এক ফাজিল ধরনের সাহাবা প্ররোচনা দিলো সবাইকে "চল আমরা সবাই এর পর ঐ বেলী ড্যান্সারদের কাফেলা লুট করবো, ওরাতো ইসলাম মানে না, ইসলামে জায়েয আছে এইসব অনাচার দুর করার জন্যই ইসলাম এসেছে ধরনীতে, তখন রথ দেখা কলা বেচা একসাথে চলবে, আমাদের ঘরেই বেলীড্যানসার থাকলো, ওদের দিয়ে গা মালিশও করানো যাবে আবার বেলী ড্যান্সও করানো যাবে, সংস্কৃতির চর্চা করতে হবেতও, নবী জোড় নির্দেশ দিয়েছেন কালচারাল হয়ে উঠতে হবে, সব মুসলিম দিন দিন চাড়াল হয়ে উঠছে ওদের কালচারাল হতে হবে, এবারের সংগ্রাম চাড়াল থেকে কালচারাল হয়ে উঠার সংগ্রাম, ভাইসব আপনারা দলে দলে ঘোড়া নিয়ে প্রস্তুত হন আমরা আজকেই বেলী ড্যান্সারদের কাফেলা লুট করতে যাবো, আমাদের ইসলাম ধরে রাখতে হবে, ইসলাম কালচার নিয়ে মাতামাতি করে, আরবের কালচার ছিলো নবীর ভিতরে আমরা সেই কালচারাল লোকালিটি বাড়াবো আরও বেশী, আমরা মিশরের কালচারও ঢুকিয়ে ফেলবো এখানে- আমি গত কাল স্বপ্নে দেখেছি সেখানে বান্না বলে একজন আসবে 1300 বছর পরে, সেখানেই ইসলামের তীর্থ হবে। আমাদের মিশরীয় সংস্কৃতি ধারন করতে হবেই হবে, তাই প্রস্তুত হও জনগন আগামি কাল ভোরের আলো ফোটার াগেই ঘোড়ার খুরে আগুনের ফুলকি তুলে আমরা যাবো বেলী ড্যান্সারদের কাফেলা আক্রমন করতে, কোরানে বলা আছে- কসম সেই সব ধাবন্ত আগুনের ফুলকির যা প্রতু্যষে ঝাপিয়ে পড়বে, দহলীজী দহলিজে বসে বসে তামুক খাচ্ছিলেন এটা হালাল না হারাম এটা তখনও নির্ণ ীত হয় নি, তিনি অবশ্য তামুককে হালাল করার পক্ষে, এমন কি রমজানেও মাঝে মাঝে দুপুরে তার টামুক ইচ্ছা হলে যেনো খেতে পারে, রুপার গরগরায় গোলাপজল, সাজিয়ে, তিনি গুরুক গুরুক করে তামকু খান, আর এটাতো ধোঁয়া, ধোঁয়া কি আর কোনো খাদ্য, যদি তাই হলো তাহলে এই যে রান্নার সময় ধোঁয়া উঠে, সেই খাদ্যবাসযুক্ত ধোঁয়া গলধঃকরন করে সব মেয়েদের রোজা ভেঙে যেতো না। রোজা যদি ধোঁয়া খেলে না ভাঙে, তাহলে তামুকের ধোঁয়া টানলে ক্যানো রোজা ভাঙবে? তা কি বলছিলাম মনে আছে, কি নামটা বললাম, আহা ঐটা মান্না না বান্না, শব্দ বুঝতে হবে, নাক আর কান একই অক্ষর দিয়ে তৈরি কিন্তু নাকের কাজ কি কান দিয়ে হয়? তুমি উলটে গেলেও নাকের কাজ নাক করবে, কানের কাজ করবে কান, আমাদের আরও গভীর ভাবে বুঝতে হবে পাপ বলতে কি বুঝায়। যদি তোমার গান শুনে অনাচারের ইচ্ছা হয় তবে সে গান শোনা খারাপ। এই যে মিউজিক ভিডিওগুলো দেখছো ওগুলো দেখে কি মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা থাকে? কাসিদের নতুন গবেষণা ক্ষেত্র হলো শব্দ ভাঙাগড়ার খেলা, বান্না মান্না, নাক-কান এই সব নিয়ে অনেক ভেবেছে সে আজকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কথাটা বলতে পরে নিজের প্রতি প্রসন্ন হয়ে উঠলো সে।

তখনই টুংটাংটুং বাজলো টেলিফোন। এ্যাই জানো আমার না আইপডটা কাজ করছে না, ক্যামোন জড়ানো জড়ানো স্বরে গান বাজছে। বোধ হয় ব্যাটারি ডাউন, কিংবা সার্কিটে পানি পড়ছে, আরে নারে বাবা নতুন ব্যাটারি লাগিয়েও একই অবস্থা, কি ঘোড়ার ডিমের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছো। কাসিদ বলতে পারে না যে সে পড়েছে আসলে ক্যামিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বৈদু্যতিক যন্ত্রপাতির সাথে এর যোগাযোগ টিউব লাইট জ্বালানোর মতোই। ঠিক আছে তুমি বলো কিভাবে ঘটনাটা ঘটলো? কাসিদ গলার স্বারে ভারিককি এনে বলে।

ঐ দিন টিউবে চেপে আসছিলাম, রাতের বেলা ইউনি থেকে ফিরি, কাকপক্ষিও থাকে না স্টেশনে, এমন সময় এক লোক বীয়ারের কেস হাতে উঠলো টিউবে, আমার সামনের সীটে বসে বীয়ার খেলো, আমিতো ভয়ে শ্যাষ, কি ভয়ংকর ঢুলুঢুলু চোখ,কাসিদ আতংকিত নিশ্বাস ছাড়ে, মেয়েদের নিয়ে সমস্যা হলো এই যে এক কথা থেকে অন্য কথায় ছুটাছুটি করতে করতে কখন প্রসঙ্গ ছেড়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যাবে বুঝতেই পারবে না, এই যে মাতালের গল্প শুরু হলো এটা নির্ঘাত শেষ হবে তার কোনো বান্ধবির মাতালের হাতে হেনেস্থা হওয়ার গল্প দিয়ে, যা সন্দেহ করেছিলো ঠিক তাই ঘটলো 25 মিনিট পরে, জানো না ময়নার কি সাহস, ঐ দিন এক মাতাল ওর সামনে আসে বললো ইউ ড্যাম নিগার গো এন্ড **** এ্যাট ইয়োর অউন রিস্ক। ও সামনে গিয়ে কনফ্রন্ট করলো, যদিও কাসিদ বুঝে না পিছন থেকে কনফ্রন্ট করার কোনো ঘটনা ইতিহাসে ঘটেছে কি না। আমার তো ঘটনা শুনেই লোম দাঁড়া হয়ে গেলো। কাসিদ মিনমিন করে বলে দেখো মোবাইলে চার্জ প্রায় শেষ, কি যেনো বলছিলো তোমার আই পড নিয়ে, ওটা নষ্ট হলো যেনো কিভাবে? ও আচ্ছা মনে পড়েছে, হারিয়ে যাওয়া কথার খেই খুঁজে পায় মাহিজাবিন, তো মাতালটা যখন বীয়ারে চুমুক দিচ্ছিল তখন আমি জানে আলমের গান শুনতেছিলাম, ইশকে দিগম্বর মাওলা, গানটা শুনেছেন, একেবারে ফ্যাব- আমার দিকে তাকিয়ে একবার হ্যালো বললো আর তখন থেকেই না আই পডের সমস্যা। ক্যামোন জড়িয়ে জড়িয়ে গান গাইছে জানে আলম।

মনে হচ্ছে মাতাল হয়ে গেছে, আচ্ছা যন্ত্রের কি প্রাণ আছে, যন্ত্র কি মাতাল হতে পারে? আমার আই পডটাও নাঈসলামি , সবুজ রংয়ের আমি বাজার থেকে রেডিয়্যান্ট চাঁন তারা লাগিয়েছি, এই জন্যই ইউসুফ জবরজং বলেছেন শুঁড়িখানায় গান শোনা হারাম। কাসিদ অবেশেষে বলে আচ্চা রাখি, মোবাইল ট্যাট ট্যাট আওয়াজ দিচ্ছে ,চার্জ শেষ। তা আমাদের পাপ কি বুঝার পর পাপের পথ থেকে সরে দাঁড়াতে হবে, আমাদের মনে রাখতে হবে সবসময়ের জন্য মানুষের জন্ম হয়েছে ভালো কাজ করার জন্য, মানুষ যখন খারাপ কাজ করে তখন সেটা করে শয়তানের প্ররোচনায়, এই ব্যাপারে একটা মরমী কথা বলতে পারি, সবার জন্য না, যারা বুঝবে শুধু তাদেরজন্য, ফিস ফাস ফিস, কথাটা সামান্য হতে পারে কিন্তু খুব গভীর কথা। সব সত্য সবার জন্য এই জন্যই মিস্টিকরা বলে গেছেন- আচমকা ব্রেক কষে থেমে যায় কাসিদ, গুঢ় তত্ত্ব সবাইকে জানাতে গিয়েই না মনসুর হিল্লাজের হাতে হারিক্যান হয়ে গেলো। আমি আলাদা একটা পোষ্ট করেছি আমার অন্য খাতায়, ওটার লিংক দেই সময় পেলে পড়ে নিয়েন, http://www.tinyurl.com/rs4tk আমার পছন্দের বিষয় হিন্দু মাইথোলজি, অবশ্য দুষ্ট লোকেরা এটা পড়ে ভাবতে পারেন, এটা বোধ হয় মাই ঠেলে জি্ব, কিন্তু যারা বুঝবান তারা বুঝবে এটা অশালীন কিছু না, সবাই নিজের মাপে চাঁন তারা দেখে, ওখানে বলা ছিলো অর্জুন লক্ষ্য ভেদে মনোযোগী ছিলো তাই তার কাছে জগৎ সংসার সব তুচ্ছ, শুধু পাখির চোখ দেখতে পেতো সে, আমিও সময় পেলেই পাখীর চোখ দেখি।

পরবর্তি সপ্তাহে আবার চলে বাসিক, এসে বলে এসটেনজার সময় ডান পা আগে ফেলতে হবে নাকি বাম পা, আপনার বিবেচনা থেকে বলবেন- কাসিদ বুঝতে পারে ধর্ম এর হৃদয়ের অন্তঃস্থলে প্রবেশ করেছে তাই ছোটো ছোটো সব বিষয়েই তার এত সতর্কতা, এরাই আমাদের কালচারকে গড়ে তুলবে কাসিদ মনে মনে ভাবে, মুখে বলে ঠিক আছে আমাকে তিন দিন সময় দাও, আমি 3 দিন পর জানাবো, আসলে এইখানে টাট্টি ঘরের সাইজ যা সেখানে এসতেনজার সময় হাঁটাহাঁটি করতে পারি না, তা ই ভাবছি সামনের মাঠে গিয়ে কাজটা করে জানাবো কোন পা'টা ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ। নবীর কাছে একদিন এক জন মিষ্টি সমস্যা নিয়ে গিয়েছইলো নবী 3 সপ্তাহ পর তার উত্তর দিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন নিজের অভ্যাস ছিলো মিষ্টি বেশী খাওয়ার, এই অভ্যাসের জন্যই আমার ডায়াবেটিস হইলো, এখন থেকে আমার উম্মতদের জন্য নির্দেশ থাকলো অতিরিক্ত মিষ্টি খাবে না, অতিরিক্ত মিস্টি খাওয়া নিয়ে আল্লামা আলা মৌদুধী বলেছেন, এদেশের মিস্টির কারিগররা সবাই বিধর্মি, মিস্টি খাওয়া মানে কাফেরদের অর্থনৈতিক শক্তি বাড়ানো, আমাদের মিষ্টি খাওয়া ছাড়তে হবে, এটাও এক ধরনের জিহাদ। ও আচ্ছা আমি তো এসতেনজার কথা বলছিলাম, যাই হোক,এই যে এই ধর্মপ্রান মানুষেরা এরাই সব দেশের কালচার এগিয়ে নিবে, এদের কালচারাল আভে গড়ে তুলতে হবে, ভায়া কি বলেন আপনি, এভাবেই কাসিদের প্রত্যক্ষ্য তত্ত্ববধানে একদল কালচাড়াল তৈরি হলো। **** কালচাড়াল- যে চাড়ালের সামনে পড়লে মৃতু্য নিশ্চিত,*****

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.