আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আ থ্যাংক ইউ নোট

সব অভিমান আকাশের চেনা চেনা..

সবাই শতক পেরুলে বেশ রেওয়াজ করে বক্তৃতা দেয়। শতক পুরো করার দৌড় দেখে কোন একটা কারনে শতক পুরো না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম। আজকে কেন জানি মনে হল খুব সহজে আর লেখা হবে না এখানে, অন্তত বেশ কিছু দিনের জন্য। তাই বড় ইচ্ছে হল ফিরে দেখতে, মনের ভেতর জমে থাকা অনেকগুলো ধন্যবাদ দিয়ে দিতে.. আমি কখনই লেখক ছিলাম না, না শিল্পী না কবি। ভুলোমনা প্রযুক্তিপাগল হয়তো বলা চলে।

ইংরেজী ব্লগ এ লেখার উৎসাহ পাই নি কখনও। সামহয়ারের কথা যখন মাশীদ বলল, তখন প্রথমটা বেশ মজাই লাগল। লেখার বিষয় ছিল না, কিন্তু উৎসাহ ছিল প্রবল। নতুন ক্যামরো কিনেছি। প্রচুর ছবি তোলা হয়ে গেছে।

তাই তোলা ছবি গুলোকে ভরসা করেই লেখা শুরু করলাম। আমার প্রথম দিকের লেখার প্রধান পাঠক ছিল মাশীদ। আমার ব্লগে সে লেখে, আমি লিখি তার ব্লগে। সম্ভবত অলস কাব্য বলে একটা লেখায় প্রথম অচেনা কেউ (রাহী) মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু মন্তব্য তখন প্রধান ছিল না।

লিখছি, নিজের লেখা পড়ে নিজেই মুগ্ধ হচ্ছি (মানের জন্য নয়, প্রকাশিত হবার আনন্দে) । এরই মধ্যে লক্ষ্য করলাম প্রচন্ত বিতর্ক চলছে, শোমচৌ, অপ বাক, দীক্ষক দা্রবিঢ়, সুমন চৌধুরী, মইন, হাসিমুখ, ঠুনকো, সাধক শঙ্কু, তীরন্দাজ, আড্ডাবাজ, মুখফোড়, রাসেল (........) প্রমুখ লড়ছেন মুক্তমনা ভাবনা নিয়ে । বিরোধী শিবিরে ছিলেন ওয়ালী, দাদা, বদরুল আহমেদ প্রমুখ.. । মাঝখানে নির্বিরোধী ভাবনা নিয়ে চলতেন হিমু, ধানসিড়ি, কালপুরুষ, জাকিরুল, জুয়েলের মতো ব্লগারেরা। শোমচৌ আর অপ বাকের এর লেখা পড়ে নিজেকে ছোটই লাগতো, কারন এ'দুজন প্রচুর পড়ে লিখতেন তা মহার্ঘ বা ছাইপাশ হোক না কেন।

একবার ইজিপ্ট নিয়ে লেখার পর দেখি শোমচৌ কমেন্ট করেছেন। জ্ঞানদাস শোমচৌ এর পদধূলি প্রাপ্তি বেশ আনন্দের ছিল। মূলত এই লোকটিই কিছুটা ধরে ধরে ব্লগিং করা শেখালেন (শিখেছি কি?)। তারপর হঠাৎ একদিন অমি রহমান পিয়াল বলে একজন এসে সমানে স্ক্যানড 71 এর দলিল পোস্ট করতে লাগলেন। রেফারেনস না দেওয়ায় শোমচৌ এর ঝাড়িও খেলেন।

আসলেন শ্রেয়সী বসু, মাসুদা ভাট্টি। রাইসু ছিলেন আগে থেকেই। কিন্তু স্বভাবসুলভ আমি সাতপাচে ভিড়তাম না। কেউ কবিতা লিখলে প্যারোডি করতাম, সুমন চৌধুরীকে পচাবার প্রবল বাসনাও ছিল তখন, কি যে ছাইপাশ লিখে যেতেন । ইতোমধ্যে জিম ক্রোসের গান নিয়ে পোস্ট করলাম।

সেই পোস্টটা বদলে দিল অনেক কিছু। 107 টি মনতব্য পড়ল। আমার মতো সাতে পাচে না থাকা লোকের ব্লগে 107টা মন্তব্য বিস্ময়কর ছিল। মানবিক যোগাযোগের বিষয়টা তখন অনুভব করতে শুরু করলাম, সেই সাথে শুরু আসক্তি। মুক্তমনা আর বিরোধী বাহিনীর সব লেখাই পড়তাম।

আর পড়তাম হাসানের লেখা। মাসুদা ভাট্টির লেখার সেনসরশিপ নিয়ে একটা জোট তৈরি হয়েছিল, আমি তাতে ছিলাম না। তবে ঐক্যের শক্ত প্রকাশ মনে হয় সেই প্রথম (একতা আগেও ছিল)। আমি তখনও হালকা পুলকা লেখা নিয়ে ব্যস্ত। কিছুটা সখ্যতাও গড়ে উঠেছে কয়েক জনের সাথে।

তারপর শুরু বেসবল ব্যাট কাহিনী। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে অনেক বদল হয়, নির্বিরোধী (বাস্তবে মহা গিরিঙ্গিবাজ!!) অরূপও ক্ষেপে যায়। অশনি সংকেত দেখেছি অনেক আগেই, বেসবল ব্যাট ধরে সেটা মাথা উচু করে দাড়ালো। সবই মানা যায়। কিন্তু অস্তিত্ব নিয়ে মশকরা দেখে অসম্ভব আহত হয়েছিলাম।

এখন তো অস্তিত্ববিনাশীদের কাচ্চা-বাচ্চারা নির্ভয়ে আস্ফালন করছে। মন শক্ত হয়েছে, বেজন্মা চেতনার প্লাবনে কিছু আসে যায় না... এতো কিছুর পর যা ঘটল সেটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। অনেক গুলো মনের মানুষ পেলাম, যাদের সাথে টান হৃদয়ের, চেতনার আর ভাবনার। তাই পিয়াল ভাই যখন প্রথম বার ব্লগত্যাগী হবার ঘোষনা দিলেন তখন আর না পেরে ঢাকায় ফোন করে ফেললাম (যদিও ভুল পত্রিকার অফিস ছিল সেটা!!!) বহুদিন কেএল-এ একলা জীবন কাটিয়েছি। রাতে বাড়ি ফিরে দেখতাম টিভির প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে গেছে (কেবল টিভি নেইনি হাঙ্গেরীতে পোস্টিং হবে বলে)।

একলা ঘরে রেডিও শুনে এপাস ওপাস করা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। আমার ব্লগার স্বজনদের পাবার পর একটা দিনও একা ছিলাম না। ব্লগ না হয় এমএসএন-এ কেউ আছেন ই। বহুদিন পর মনে হয়েছে আমি একা একা থাকি না, আমার সাথে থাকে নানা প্রান্তে নানা মনের কিছু মানুষ। পিসির সাথে আটকে থাকা সবটা সময়, কি বিচিত্র এক ভালোবাসা।

একঘেয়ে-নিরস জীবনের মাঝে অদ্ভুত এক আনন্দ ধারা ... আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা আপনাদের সকলের প্রতি। মানুষের ভালোবাসা মহা বিচিত্র জিনিস, যৌক্তিকতায় বাধা যায় না, নিয়মে আটকানো যায় না। তার প্রবাহ ধারা বয়ে যায় হৃদয় থেকে হৃদয়ে। ভালোবাসার অঅনুভূত স্পর্শ আপনারা কতো বিচিত্রভাবেই না উপহার দিলেন। বড় বুঝতে চেষ্টা করি কেন অদেখা মানুষ গুলোকে মনে হয় চিরচেনা, কেনা অসমবয়সীরা হয় কৈশোরের বন্ধুদের মতো... উত্তর পাই নি, শুধু বুঝতে পারি মমতার একটা শেকড় গেঁথে আছে বুকের ভেতর।

ভালোবাসা আর শুভকামনা রইল সকলের জন্য... হারিয়ে যাচ্ছি না, হারিয়ে যেতে চাই না.. যাদের কাছে পরম কৃতজ্ঞতাঃ শোহেইল মতাহির চৌধুরী, হাসান, অমি রহমান পিয়াল, সুমন চৌধুরী, উৎস, ধুসর গোধূলী, হিমু, মুখফোড়, শমিত, রাসেল (........), মুড়িওয়ালা, হযবরল, ঠুনকো, সাজেদ, স্বরহীন, অপ বাক, নতুন, রাবাব, কৌশিক, গোপাল ভার, এস এম মাহবুব মোর্শেদ, সাদিক মোহাম্মাদ আলম, কালপুরুষ, শুভ, আড্ডাবাজ, তীরন্দাজ, মঈন, হাসিমুখ, ঝড়ো হাওয়া, ধানসিড়ি , কনফুসিয়াস, হাবিবমহাজন, সারিয়া তাসনিম, সাধক শঙ্কু, তীর্থক, জয়কুমার, লুনা রুশদী, হাসিন এবং অবশ্যই মাশীদ আর সামহয়ারইন ব্লগের কর্মীরা

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।