আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন পায়ে ফুটবল!



তিন পায়ে ফুটবল খেলে অমর হয়ে আছেন স্পেনিশ ফুটবলার টেলমু জারা। তার তৃতীয় পা-টি ছিল মাথায়। ফুটবল পন্ডিতরা তার বুক হিমকরা হেড দেখে ওটাকে মাথা না বলে পা বলেই তৃপ্তি পেতেন বেশি। 1950 বিশ্বকাপ। মাঠে স্পেনিশ দাপটে ইংলিশদের 'ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি' অবস্থা।

তারপরও হার না মানা ফাইট চলছে। সান্ত্বনা একটাই দুর্ধর্ষ জারা আজও হেডে সুবিধা করতে পারেননি। কৌশলে সামান্য পরিবর্তন আনলো স্পেনিশরা। লেফট উইঙ্গার গেইনজা তীর বেগে ছুটলেন বল নিয়ে । ইংলিশ ডিফেন্ডাররা তাকে ছাতার মতো ঘিরে ফেললো মুহূর্তেই।

অবস্থা বেগতিক দেখে বলটা তিনি ইংল্যান্ডের গোল মুখে লব করলেন। ইংলিশ ফুলব্যাক রামসে বুঝতে পারেননি, জারা কোন ফাঁকে এসে তার ঠিক পেছনে এসে দাঁড়িয়ে গেছেন। বলের দিকে চোখ রাখতে রাখতে তিনি উল্টোমুখো হলেন। ততক্ষণে বল জারার কবজায়। সবাই ধরে নিলেন, জারা বুঝি হেড নিচ্ছেন।

কিন্তু না, জারা হেডে আগ্রহ দেখালেন না। বরং সাইড ভলি মেরে ইংলিশ গোলকীপারকে কাবু করলেন। নিখুঁত হেডের কারণে স্পেনিশ চ্যাম্পিয়নশিপে জারা টানা ছয় বার হন শীর্ষ গোলদাতা। বলের প্রতি তার একাগ্রতাকে দেশীয় চ্যাম্পিয়ন বুল ফাইটার মানোলিতের একাগ্রতার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে বারবার। তার ক্যারিয়ারের সেরা গোলগুলো হেড থেকে এলেও 1950 বিশ্বকাপে তিনি সেই বিধ্বংসী 'হেড-অস্ত্র' কাজে লাগাতে পারেন নি।

কিন্তু ইংলিশদের বিরুদ্ধে তার সেই জয়সূচক গোলের তাৎপর্য ছিল আলাদা । গোলের পর গলায় ঝোলানো 'কুমারী মেরী'র মাদুলিটা উঁচিয়ে জারার উল্লাস দেখে স্পেনিশদের আসল মনোভাব বুঝতে কষ্ট হয়নি কারো। ম্যাচ শেষে স্পেনিশ ফুটবল কর্মকর্তা আর্মান্দো মুনোজ ক্যালিরো কুখ্যাত জেনারেল ফ্রাঙ্কোর কাছে পাঠানো রেডিও ম্যাসেজে লিখলেন : 'মহাশয়, আমরা ইংলিশ দুর্বৃত্তদের খতম করে দিয়েছি'। আর স্পেনিশরা বলল : 'হঁ্যা এতো দিনে আমরা 1588 সালে ইংলিশ চ্যানেলে সেই আর্মাডা যুদ্ধে হারের প্রতিশোধ নিলাম'। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির একান্ত অনুগত ক্যালিরো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ঐতিহাসিক জয়কে উৎসর্গ করলেন 'বিশ্বের সকল সামরিক শাসকের নামে'।

তবে পরের ম্যাচটি তিনি কারো নামে উৎসর্গ করার সুযোগ পেলেন না। ব্রাজিল 6-0 ব্যবধানে ডুবিয়ে দেয় স্পেনকে ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।