আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে তিন সন্ত্রাসীর মামলা থেমে আছে

চট্টগ্রামের তিন শীর্ষ সন্ত্রাসীর কাছ থেকে একে ৪৭ রাইফেলসহ অস্ত্র উদ্ধারের মামলা ২১ মাস ধরে থেমে আছে। কারণ, মামলার বাদী সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না। বাদী অন্য কেউ নন, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।

মহানগর দায়রা জজ এস এম মজিবুর রহমানের আদালতে মামলাটি বিচারাধীন। তিন সন্ত্রাসী হলেন শিবিরের ক্যাডার সরোয়ার, নুরনবী ম্যাক্সন ও গিট্টু মানিক।

সাক্ষীর বিরুদ্ধে আদালত প্রথমে সমন ও পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পরও হাজির না হওয়ায় মামলাটি কয়েক দিন আগে অন্য আদালতে স্থানান্তর করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির দাবি, সাক্ষী যথাসময়ে হাজির হলে মামলাটি এত দিনে নিষ্পত্তি হয়ে যেত। বিচারের আওতায় আসতেন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা।

চট্টগ্রাম আদালত ভবন থেকে কোতোয়ালি থানার দূরত্ব মাত্র দেড় শ গজ।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের মতে, মামলার বাদী সাক্ষ্য না দিলে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করা যাবে না। এমনকি আসামি খালাসও পেতে পারেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর কামাল উদ্দিন আহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ২১ মাস ধরে মামলার বাদী ওসি এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না। বিষয়টি পুলিশ কমিশনারকে জানানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে হাজির না হওয়ায় আদালত মামলাটি গত সোমবার তৃতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করেন।

ওসিসহ এ মামলায় নয়জন সাক্ষী।

বাদীর সাক্ষ্য ছাড়া মামলা নিষ্পত্তি হলে আসামিরা পার পেয়ে যেতে পারেন উল্লেখ করে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, সাক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও আদালতে হাজির না হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। তা ছাড়া ওই সাক্ষী একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি দেখছি। ’

মামলার বর্ণনা অনুযায়ী, ছাত্রলীগের আট নেতা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শিবিরের ক্যাডার সাজ্জাদ আলীর সহযোগী গিট্টু মানিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি ম্যাগাজিনসহ একটি একে ৪৭ রাইফেল, ২৭টি গুলি, শ্যুটারগান, পিস্তল ও এলজি উদ্ধার করে বায়েজীদ থানার পুলিশ।

২০১১ সালের ৬ জুলাই ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন বায়েজীদ বোস্তামী থানার ওসি মহিউদ্দিন সেলিম। পরে এ ঘটনায় তিনি নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই থানার উপপরিদর্শক জহির হোসেন তিন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন একই বছরের ৮ আগস্ট। পরের বছরের ২৬ জানুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষীর প্রতি সমন জারি করেন।

আদালত পরে সাক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন।

২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে গত সোমবার পর্যন্ত ১৫টি ধার্য দিনে আদালতে হাজির হননি ওসি মহিউদ্দিন সেলিম। নথিতে দেখা গেছে, ২০১২ সালের ৪ মার্চ, ৩ এপ্রিল, ১০ মে, ১৪ জুন, ২৪ জুলাই, ১১ সেপ্টেম্বর, ৪ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি, ২২ জানুয়ারি, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ৪ এপ্রিল, ১৪ মে, ২৩ জুন, ৬ জুলাই এবং সর্বশেষ গত ২৩ সেপ্টেম্বর আদাতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি বাদী পুলিশ কর্মকর্তা।

এ মামলায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরোয়ার ও ম্যাক্সন জামিনে আছেন। তবে অন্য মামলা থাকায় তাঁরা এখনো কারাবন্দী। আর গিট্টু মানিক জামিন পাননি।

সমন, পরোয়ানা পেয়েও হাজির না হওয়া প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাঝেমধ্যে সমন ও পরোয়ানা পেয়েছি। আমি এখনো এ মামলায় সাক্ষ্য দিইনি। ব্যস্ততার কারণে হাজির হওয়া হয় না। চট্টগ্রামে আমিই একমাত্র ওসি সাতটি একে ৪৭ রাইফেল উদ্ধার করেছি। ’

 



সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.