আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ পরিচিতি থাইল্যান্ড



দেশ পরিচিতি থাইল্যান্ড থাইল্যান্ড দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম থাইল্যান্ড রাজ্য। এর বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম ব্যাংকক। থাইল্যান্ড একমাত্র দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় রাষ্ট্র যা যুদ্ধকালীন সময় ব্যতীত কখনও কোন ইউরোপীয় বা বিদেশী শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল না। ১৭৮২ সাল থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পরম রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত ছিল।

১৯৩২ সালে বিদ্রোহীরা একটি অভ্যুত্থান ঘটায় এবং দেশে সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত থাইল্যান্ড বহু সামরিক ও বেসামরিক সরকারের অধীনে শাসিত হয়েছে। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত দেশটি শ্যামদেশ নামে পরিচিত ছিল। ঐ বছর এর নাম পরিবর্তন করে থাইল্যান্ড রাখা হয়। তবে ১৯৪০ এর শেষের দিকে আবারও এক শ্যামদেশ নামে ডাকা হত।

১৯৪৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো থাইল্যান্ড নামটি গ্রহণ করা হয়। থাইল্যান্ডের মধ্যভাগে রয়েছে বিস্তীর্ণ উর্র্বর সমভূমি। এই সমভূমির মধ্য দিয়ে দেশের প্রধান নদী চাওফ্রায়া এবং শাখা নদী ও উপনদীগুলি প্রবাহিত হয়েছে। এই অঞ্চলে দেশের ধান ও অন্যান্য ফসলের অধিকাংশ আবাদ হয়। মধ্যভাগের সমভূমি পশ্চিমের পর্বতশ্রেণী দক্ষিণ দিকে মালয় উপদ্বীপে প্রসারিত হয়েছে।

থাইল্যান্ডের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ থাই জাতি প্রায় ৯৫ শতাংশ বৌদ্ধ ধর্মের, মুসলিম ৩.৮ শতাংশ, অন্যান্য ০.০৬ শতাংশ। থাইল্যান্ডের পরিশীলিত ধ্র“পদী সঙ্গীত ও নৃত্য লোকশিল্প বিখ্যাত। দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ থাইল্যান্ড। বছরে ১১ শতাংশ উন্নয়ন ঘটেছে ১৯৮৭-৯০ সালে। থাইল্যান্ডের উন্নতির অভিযান অব্যাহত আছে।

কৃষিই জাতীয় উৎপাদনের প্রধান অংক। রপ্তানীর প্রধান পণ্য চাল ও ট্যাপিওকা। পর্যটন শিল্প খুবই উন্নত এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান সূত্র। জাতীয় উৎপাদনের ২৫ শতাংশ আসে শিল্প ও খনিজ পদার্থ থেকে। মোট জাতীয় উৎপাদন ৯,৫০০ কোটি ডলার, মাথাপিছু আয় ৬,০০০ ডলার প্রায়।

রাজনীতি: থাইল্যান্ড একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৬ এর ক্যু পর্যন্ত দেশটি একটি কার্যকর গণতন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে একটি বহুদলীয় মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশটিতে গণতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। থাইল্যান্ডের সংবিধানে রাজাকে খুবই কম ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের প্রতীক। থাইল্যান্ডের বর্তমান রাজা হলেন রাজা ভূমিবল অতুল্যতেজ।

তিনি ১৯৪৬ সাল থেকে রাজপদে অধিষ্ঠিত আছেন এবং জনগণের উপর তাঁর বিরাট প্রভাব রয়েছে। ২০০৭ সালের সংবিধান অনুযায়ী থাইল্যান্ডের জাতীয় আইন সভা দুইটি কক্ষে বিভক্ত বিভক্ত: সিনেট বা উচ্চকক্ষ এবং প্রতিনিধি সভা বা নিম্ন কক্ষ। উচ্চ কক্ষের সদস্য সংখ্যা ১৫০, এদের মধ্যে ৭৬ জন জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত, প্রতি প্রদেশ থেকে ১ জন করে নির্বাচিত হয়ে আসেন। বাকী ৭৪ জন সিনেট সদস্য নির্বাচন কমিশনের তৈরি করা একটি তালিকা থেকে বিচারক ও ঊর্ধ্বতন অফিসারদের দ্বারা বাছাই হন। নিম্নকক্ষে ৪৮০ জন সদস্য এবং এদের মধ্যে ৪০০ জন থাইল্যান্ডের বিভিন্ন জেলা ও নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন।

বাকীদের বিভিন্ন দলের তৈরি করা তালিকা থেকে আনুপাতিক হারে বাছাই করা হয়। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের গভর্নর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। কিন্তু থাইল্যান্ডের বাকী ৭৫টি প্রদেশের গভর্নর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিযুক্ত হন। থাইল্যান্ডের আইন ব্যবস্থাতে ঐতিহ্যবাহী থাই এবং পশ্চিমা আইনের সম্মিলন ঘটেছে। সংবিধান অনুসারে সাংবিধানিক আদালত হলো, আপিল বিভাগের সর্বোচ্চ আদালত।

বিচারক, সংসদীয় নেতা এবং ঊর্ধ্বতন নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের একটি কমিটি সাংবিধানিক আদালতের সদস্যদের মনোনয়ন দেন। সিনেট থেকে তাদের মনোনয়ন নিশ্চিত করে এবং রাজা তাদেরকে নিয়োগ দেন। ভৌগলিক অবস্থান ঃ থাইল্যান্ডের ৫,১৪,০০০ বর্গ কিলোমিটর এলাকা যা মূল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যভাগে পরেছে। দেশটির এই ভৌগলিক অবস্থান জাতির সমাজ এবং সাংস্কৃতিকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছে। দেশটি এশিয়া থেকে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুর যাওয়ার একমাত্র পথ নিয়ন্ত্রণ করে।

৫,১৪,০০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিশিষ্ট থাইল্যান্ডকে ভৌগলিকভাবে কয়েকটি অঞ্চলে ভাগ করা যায়। দেশের উত্তরাঞ্চল পাহাড়ী, সর্বোচ্চ শিখর দোই ইস্থাননের উচ্চতা ২,৫৭৬ মিটার (৮,৪৫১ ফুট) উত্তর-পূর্বঞ্চলে রযেছে খোরাত মালভূমি, যার পূর্ব সীমা দিয়ে বয়ে চলেছে মেকং নদী। দেশের মধ্যঞ্চলের বৃহদাংশ জুড়ে ক্রী যোজক মালয় উপদ্বীপ বিস্তৃত হয়েছে। এখানকার জলবায়ু বিষুবীয় এবং মৌসুমী বায়ু দ্বারা প্রভাবিত। মধ্য মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম উষ্ণ থেকে মধ্য মার্চ পর্যন্ত উত্তর-পূর্ব শুষ্ক, শীতল মৌসুমী বায়ুর প্রভাব দেখা যায়।

দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়া সব সময় উষ্ণ ও আর্দ্র থাকে। ভাষাঃ থাই ভাষার আদর্শ রূপ থাইল্যান্ডের সরকারি ভাষা। এই আদর্শ থাই ভাষাতে এখানকার প্রায় ৪০% লোক কথা বলেন। এ ছাড়া থাই ভাষার অন্যান্য উপভাষায় প্রায ৫০% লোক কথা বলেন। থাইল্যান্ডে প্রায় ৭০টি ভাষা প্রচলিত আছে।

আন্তর্জাতিক কর্মকান্ডে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।