আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যা বলছে তাই কি দিচ্ছে?

বিজ্ঞাপন মানেই কী একটু বেশি বাড়িয়ে বলা! অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নির্মাতারা কাটতি বাড়াতে স্মার্টফোনের ক্ষমতা,পারফরমেন্স, তথ্য ধারণ ক্ষমতা নিয়ে যে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে তাতে কিছুটা লুকোচুরি করছে। অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর বেশ কয়েকটি স্মার্টফোনের বেঞ্চমার্ক পরীক্ষার পর প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা এ কথা বলছেন।

বেঞ্চমার্ক হচ্ছে পারফরমেন্স পরীক্ষা পদ্ধতি। যে কোনো ডিভাইসের ক্ষমতা নির্ধারণ এবং দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্য ব্যবহার করা হয় বেঞ্চমার্ক সফটওয়্যার। প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলছেন, স্মার্টফোন ক্রেতাদের সঙ্গে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতারণা করছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘আনন্দটেক’ দাবি করেছে, তাদের প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা কয়েকটি মডেলের অ্যান্ড্রয়েডনির্ভর স্মার্টফোনের বেঞ্চমার্ক পরীক্ষা করেছেন। এ পরীক্ষায় তাঁরা স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেঞ্চমার্ক ফলাফলে প্রতারণার বিষয়টি ধরতে পেরেছেন। আনন্দটেকের দাবি, তাদের ফলাফলে স্যামসাং, এইচটিসি, আসুস ও এলজির বেঞ্চমার্ক ফলাফলে কারচুপি দেখতে পেয়েছেন।

এইচটিসি ওয়ান, এইচটিসি ওয়ান মিনি, এলজি জি২, স্যামসাং গ্যালাক্সি ট্যাব ১০.১, গ্যালাক্সি এস৪ ও গ্যালাক্সি নোট থ্রির ক্ষেত্রে সিপিইউয়ের ক্ষমতা অতিরিক্ত দেখানো হয়েছে।

অ্যাপল ও গুগল নেক্সাস প্রযুক্তি বিশ্লেষকেদের পরীক্ষায় পাশ করে গেছে। অবশ্য সনির স্মার্টফোন পরীক্ষা করেননি তাঁরা।

সমালোচনায় স্যামসাং

বেঞ্চমার্ক ফলাফল অতিরঞ্জিত করার বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এর আগে চলতি বছরের আগস্ট মাসে স্যামসাং তাদের গ্যালাক্সি এস৪ স্মার্টফোনটির প্রসেসিং ক্ষমতা নিয়ে লুকোচুরি করছে বলে অভিযোগ করেন ইউরোপের প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা। তাঁরা দাবি করেছিলেন, গ্যালাক্সি এস৪ স্মার্টফোনটির প্রসেসরের ক্ষমতাকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করেছে স্যামসাং।

অবশ্য এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছিল স্যামসাং কর্তৃপক্ষ। গবেষকরা তখন জানিয়েছিলেন, স্যামসাংয়ের দাবি করা প্রসেসরে ৫৩২ মেগাহার্টজ ক্লক স্পিড বেশ কয়েকটি পরীক্ষায় দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।

সম্প্রতি বেঞ্চমার্কে ফলাফল নিয়ে আবার সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে স্যামসাং। প্রযুক্তি সাইট আর্স টেকনিকা দাবি করেছে, গ্যালাক্সি এস ফোরের পর স্ন্যাপড্রাগন ৮০০ ভিত্তিক গ্যালাক্সি নোট৩ এর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে।

দ্য রেজিস্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যামসাংয়ের কর্তৃপক্ষ এবারও বেঞ্চমার্ক ফলাফলে কারচুপির ঘটনা প্রত্যাখান করেছে।

স্যামসাং কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেটকে জানিয়েছে, স্যামসাংয়ের সিপিইউ ও জিপিইউ যখন যতটা দরকার তখন ততটা পারফরমেন্স দেখাতে পারে। বেঞ্চমার্ক ফলাফল অতিরঞ্জিত করার সুযোগ নেই।

অবশ্য আনন্দটেক সাইটটির দাবি, তাঁরা পরীক্ষা করে কারচুপির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। শুধু স্যামসাং নয়, যে প্রতিষ্ঠানগুলো একই সিপিইউ অপটিমাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহার করছে সবার ক্ষেত্রে বেঞ্চমার্ক ফল নিয়ে লুকোচুরির বিষয়টি দেখা গেছে বলেও তাঁদের দাবি।  

১৬ কিন্তু ১৬ নয়!

নতুন একটি স্মার্টফোন কিনেছেন আর এ স্মার্টফোনটিতে তথ্য সংরক্ষণের জন্য ১৬ গিগাবাইট তথ্য সংরক্ষণের সুবিধার কথা বলা হয়েছে।

কিন্তু তথ্য সংরক্ষণের জন্য আপনি কি ১৬ গিগাবাইট জায়গা পাচ্ছেন? প্রযুক্তি বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ‘হুইচ?’-এর তথ্য অনুযায়ী, মুঠোফোনে তথ্য সংরক্ষণের জন্য যত বিজ্ঞাপনে যতটা দেখানো হয় বাস্তবে ততখানি জায়গা ক্রেতারা পান না। যেসব মুঠোফোনে ১৬ গিগাবাইট পর্যন্ত তথ্য সংরক্ষণের সুবিধার কথা বলা হয়, সে মুঠোফোনগুলোতে ক্রেতা তার তথ্য সংরক্ষণের কাজে অনেক সময় ৯ গিগাবাইটের চেয়েও কম জায়গা পান। এ তালিকায় রয়েছে, স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস ফোর, সনির এক্সপেরিয়া জেড, ব্ল্যাকবেরি জেড ১০,  গুগল নেক্সাস ৪। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ফোরে ব্যবহারকারী পান ৯ গিগাবাইট, এক্সপেরিয়া জেডে পান ১০ গিগাবাইট, ব্ল্যাকবেরিতে ১১ গিগাবাইট, নেক্সাসে ১৩ গিগাবাইট, এইচটিসিতে ১৫ গিগাবাইট জায়গা। আইফোন ব্যবহারকারী পান ১৩.৫ গিগাবাইট জায়গা।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকেরা বলেন, অপারেটিং সিস্টেম, বিল্ট ইন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য জায়গা দিতে গিয়ে মেমোরির সামান্য অংশই ফাঁকা পান ক্রেতারা। ফলে বিজ্ঞাপনের সঙ্গে বাস্তবের সাদৃশ্য থাকে না।

স্মার্টফোন নির্মাতাদের সত্ হওয়ার পরামর্শ দিয়ে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ক্রেতাদের আগেভাগেই সচেতন করে পণ্য বিক্রি করা উচিত্।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।