আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্ট্রিং থিওরী------------------------------------- সহজ কথায় যা বুঝি ২

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

প্রথম পর্ব থিওরী অব এভরিথিং, স্ট্রিং থিওরী এবং কেন দরকার এই সুপার স্ট্রিং থিওরী? স্কুল লেভেলে যারা ম্যান্ডেলিফের মডেলটা পড়েছেন তারা এই জিনিসটা জানবেন যে এই মহাবিশ্বের সকল কিছু তৈরী এইসব মৌলিক পদার্থ দিয়ে। হয়তোবা আরও দুয়েকটা থাকতে পারে অনাবিষ্কৃত কিন্তু দুনিয়াবী জিনিসপত্র সব এগুলো দিয়েই তৈরী। এর বাইরে কিছু নেই। এখন কথা হলো এগুলো কি দিয়ে তৈরী? এর জন্য আছে তেমনি একটা স্মরনী যাকে আমরা স্ট্যান্ডার্ড মডেল বলেই জানি।

এই স্ট্যান্ডার্ড মডেল দ্বারা প্রায় সবকিছুর ব্যাখ্যা করা গেলেও অনেক প্রশ্নের উত্তর এখনও দিতে পারে নাই। এই যেমন বিশাল মহাবিশ্বের দিকে তাকালে দেখা যাবে সবাই সবার থেকে দুরে চলে যাচ্ছে কিন্তু কেউ কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়ছে না অথবা কেউ হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে না। কিন্তু মহাবিশ্ব সম্প্রসারমান। ডার্ক ম্যাটার আর ডার্ক এনার্জী এর পেছনে কাজ করলেও এগুলো কি সেটা আমরা জানি না। আবার সবকিছু যদি বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে সৃষ্টি তাহলে সবকিছু একত্রিতই ছিলো বলা যায় অল্প কিছু সময়ের জন্য।

তাহলে সবকিছুই উচ্চশক্তিতে এবং চাপে একত্রিত হবার কথা। এই পথ ধরেধরেই গুটি গুটি পায়ে আইনস্টাইন আর ম্যাক্সওয়েল সাহেব তড়িৎ আর চুম্বকীয় বলকে একীভূত করেছেন যার ফলে আমরা মোবাইলে একে অপরের সাথে কথা বলতে পারছি। প্রকৃতিতে আলোর অস্তিত্বও সেটাকে ঘোষনা করে। আবার গ্লাসগো, ওয়েইনবার্গ আর মুসলিম হয়েও কাফের সালাম সাহেব তিনজনে এই তড়িৎচৌম্বকীয় বলের সাথে দুর্বল আনবিক বলকে একত্রিত করে তড়ীৎ দুর্বল বলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। আসলে এর সবকিছুই একটা গুরুত্বই ব হন করে।

সবকিছুই একত্রিত হবে, সবকিছু একত্রে ছিলো একসময় এবং একটা অনুর ভেতর সবকিছুই একীভূত আছে এবং এসব কনিকা-প্রতিকনিকার সৃষ্ট সংঘর্ষের ধারাভিকতায় থেকেই এই মহাবিশ্বের পরিপূর্ন বহিঃপ্রকাশ। যখন আরও পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে থাকি উচ্চ শক্তিস্তরে এই দুর্বল তড়িৎ বল আর শক্তিশালী আনবিক বল কিভাবে কাজ করে তখন তারা ১০^১৬ GeV একীভূত বলের ন্যায় আচরন করে। অর্থাৎ এদের চালচলন সব একক বলের ন্যায় আচরন করে। ঠিক এভাবেই ১০^১৯ GeV গ্রাভিটি কি রকম আচরন করে সেটাও দেখার বিষয়। স্ট্রিং থিওরীর কাজটা এটাই.....ঠিক ১০^১৯ GeV এই চারটি বলের আচরন কেমনভয় সেটা পর্যবেক্ষন করা।

এই শক্তিস্তরের চারিত্রিক গুনাবলীর মধ্যে প্লান্কের ভরকে সংজ্ঞায়িত করা যায় এবং সেটা যদি সূত্রাকারে লিখি তাহলে আমরা পাচ্ছি: m=(hc/G)^1/2 = ১.২২*১০^১৯GeV/c^২ এই উচ্চ এনার্জী স্কেলে এটা নির্দেশ করে যে আমাদের মহাবিশ্বের সবচেয়ে আদি সময়ে এরকম অবস্হায় বিরাজ করছিলো আর সবকিছুই এতে একীভূত ছিলো (তবে এখানে আমি যত স হজে বললাম তত স হজে না, অনেকে যদি বিন্দু ভেবে বসেন তাহলে ভুল করবেন, ম্যাভেরিক ভাইয়ের মতো দক্ষ গনিতবিদেরা এই বাক্যটাকে নিতান্ত এমেচারদের জন্য ছেড়ে দিতে পারেন)। কিন্তু মাত্রার শক্তিস্তর অর্জন করা এখনও কোনো পার্টিক্যাল এক্সিলারেটরের পক্ষে সম্ভব হয়নি। আর আমাদের প্রচলিত পদার্থবিদ্যের অনেক থিওরীতে এই প্লান্কের মানে নিয়ে হিসেব করতে গেলে সবকিছু ভেঙ্গে পড়ে। মোদ্দা কথা হলো যদি আমরা ধরেই নেই বিগ ব্যাং এর মাধ্যমে আমাদের এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি তাহলে এইসকল বল এবং কনিকাসমূহ অবশ্যই একীভুত ছিলো এবং আমাদের সামনে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের প্রতিটা অনু এটাই প্রমান করে যে চারটা বলা এক জায়গায় একীভূত আছে বলেও এক অনুর ভেতর সকল প্রকারের কনিকা এবং মৌলিক চারটি বল বিদ্যমান। ঠিক এই কারনেই স্ট্রিং থিওরী এতটাই গুরুত্বপূর্ন এবং ক্ষমতাশালী।

অনেকেই হয়তো একমত না হতেও পারেন কিন্তু বাস্তবতা এটাই। স্ট্রিং থিওরী কেন এটা নিয়েই দু পর্ব চলে যাচ্ছে আসলে জিনিসটা কি সেটা নিয়ে আমাদের জানা দরকার। আপনাকে প্রথম পর্বেই বলেছিলাম শক্তির সূতো দিয়েই এই সবকিছু গঠিত। তাদের বিভিন্ন সাজসজ্বাই মূলত এতসব কনিকা, বলের উদ্ভব। তাহলে এই সূতোগুলোই বা কি এবং কেন? তার আগে সূতার ব্যাপারটা একটু ক্লিয়ার করি।

ইলেক্ট্রনের কথা একটু মনে মনে চিন্তা করি। আপনারা সবাই হয়তো জানেন ইলেক্ট্রন আমরা খালি চোখে দেখি না কিন্তু এই ইলেক্ট্রনের প্রবাহের কারনেই ঘরের বাতি জ্বলে, বিদ্যুত নামের জিনিসটির উদ্ভব। তো আপনি যখন চিন্তা করবেন তখন একে নিতান্ত একটা বিন্দু বা বলপয়েন্টের একটা ডট হিসেবেই ভাববেন। এখন এর যদি দৈর্ঘ প্রস্হ উচ্চতা মাপতে যান কিছুই পাবেন না। তাহলে এর কোনো মাত্রা নাই।

আমরা সবচেয়ে মৌলিক সূতো বা তন্তুটির ক্ষেত্রেও তাই ভাববো। তবে পদার্থবিজ্ঞানীরা বলেন এর একটা মাত্রা দেয়া যেতে পারে। যত ছোটই হোক না কেন এর একটা দৈর্ঘ্য থাকবেই। আমরা গোলাকৃতিই ভাবি বা চ্যাপ্টাই ভাবি না কেন, এর দৈর্ঘ্য থাকতেই পারে। হিসাব করে বলে দেয়া যায় যে সবচেয়ে মৌলিক তন্তুটির দৈর্ঘ্য হতে পারে ১০^-৩২ সেন্টিমিটার (মানে দশমিকের পর ৩২ শূন্যের পর ১...এত ছোট)।

তার মানে এটা এতই ছোট যে আমরা একে একটা বিন্দু সম ভাবতেই পারি আর যেহেতু এর একটা দৈর্ঘ্য পাওয়া গেছে তাহলে তার মাত্রা ১। স্ট্রিং থিওরী অনুযায়ী এই যে যতসব তন্তু বা সূতা সবকিছু দুভাগে বিভক্ত। একটা খোলা আরেকটা বদ্ধ। বদ্ধটা হবে এমন সুতার এক মাথা আরেক মাথার সাথে লেগে থাকবে। এখন আকৃতি গোলও হতে পারে, চ্যাপ্টাও হতে পারে।

এখন আপনি হয়তো বলতে পারেন এই যে একটা সুতা কোনটা বদ্ধ কোনটা খোলা তাহলে এরাতো একটা জায়গাও দখল করতে পারে। এই জায়গাটাকে আমরা বলতে পারি "ওয়ার্ল্ডশিট" বা "স্হানিকপাতা" (কেউ যদি ভালো নাম দিতে চান, দিতে পারেন)। এখন এই শক্তির তন্তু বা সুতো গুলোর কিছু নির্দিষ্ট ধরনের কম্পন আছে এবং এদের এই চরিত্রগুলোকে আমরা বিভিন্ন কোয়ান্টাম সংখ্যা যেমন ভর, ঘূর্নন ইত্যাদি নামে সংজ্ঞায়িত করতে পারি। এখন এর পেছনে মূল ঘটনাটা হলো এই যে কোয়ান্টাম সংখ্যাগুলোর একেকটা বৈশিষ্ট্য এগুলো একেকটা স্বতন্ত্র পার্টিক্যাল বা কনিকাকে নির্দেশ করে। এই যেমন এই সূতোটা এভাবে কাপছে তার মানে এটা ভর দেবে আর ভর যে দেয় সে হলো হিগস কনিকা।

তার মানে হিগস কনিকা এই ধরনের কাপুনিওয়ালা তন্তু দ্বারা গঠিত। আর এটাই হচ্ছে আমাদের কাঙ্খিত সকল কিছুর একীভূতকরন অর্থাৎ থিওরী অব এভরিথিং যা আমরা শুধু মাত্র একটা জিনিস দিয়ে ব্যাখ্যা করবো আর তা হলো এই তন্তু বা স্ট্রিং। ভায়োলিন বাজাতে পারেন বা এক তারা? কতরকমের সুর। কিন্তু সব সুর আমরা কিভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি? চারটা বা একটা বা ছয়টা তারের সম্বিলিত সুর। শুধু তাদের কম্পাংকের ধরনের কম্বিনেশনই একেকটা বিচিত্র‌্যপূর্ন অসংখ্য সুরেলা টিউনের জন্ম।

কি মজা লাগছে এখন? যদি এরপরও মজা না লাগে তাহলে বলতে হয় পদার্থবিজ্ঞান আপনার জন্য নয়। সত্যি আপনার জন্য নয়। এমনকি যে সুরে মোহিত হয়ে যান আপনি সেগুলোও আপনার জন্য নয়। এখন নীচের ছবিটা দেখুন। এটা মূলত একটা বদ্ধ তন্তু বা বদ্ধ সূতো।

তন্তুর এই রূপটির গ্রাভিটনের জন্য দায়ী। গ্রাভিটন হলো এমন একটি ভরহীন কনিকা যে গ্রাভিটি নামের বলটি বহন করে এবং এর ঘূর্নন সংখ্যা ২। এটাই হলো স্ট্রিং থিওরীর সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য্য কারন আমরা অলরেডি জেনে গেছি গ্রাভিটি কি এবং কেন এটা এতটা গুরুত্বপূর্ন। স্ট্রিং থিওরী এই ব্যাপারটাকে খুব সুন্দরভাবেই ব্যাখ্যা করে। আজ এ পর্যন্তই


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০৮ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।