আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

۞۞ মাত্র কয়েকটি স্থানে ধনী-গরীবের কোন ভেদাভেদ নেই ۞۞

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই।

মাত্র কয়েকটি স্থানে ধনী-গরীবের কোন ভেদাভেদ নেই ============================== মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। এই সৃষ্টির সেরা জীব জগত সংসারে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত। কেউ বা ধনী আবার কেউবা গরীব। ধনীরা উচু উচু দালান-কোটায় বসবাস করে ভাল খাবার খায়, ভাল পোষাক পরে, টাকার জোরে দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ায়, দামী গাড়ীতে চলাফেরা করে।

সমাজের সর্বত্র মাথা উচু করে থাকতে পারে। আর গরীবরা নিন্মমানের বাসস্থানে বসবাস করে, তারা তিন বেলা খাবার জোগাড় করতেও পারে না, তারা ভাল পোষাক পরতে পারে না, দেশ-বিদেশ ঘুরতে পারে না, দামী গাড়ীতেও চড়তে পারে না। সমাজ সংসারে তাদেরকে নিচু হয়ে থাকতে হয়। ধনীদের নিকট মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। দুইভাগে বিভক্ত এই ধনী-গরীব শ্রেনীর মানুষগুলোকে মাত্র কয়েকটি জায়গায় একত্রে দেখা যায়।

এই যেমনঃ মসজিদে অবস্থানঃ মসজিদ আল্লাহর ঘর। ধনী ও গরীবদের জন্য আলাদা কোন মসজিদ নাই। এই আল্লাহর ঘর ধনী ও গরীব সবার জন্য সমান। মসজিদে ধনী ও গরীব একজনের পাশে আরেকজন বসে, সালাত আদায় করে, কোরআন তেলোয়াত করে, আল্লাহর জিকির করে, রমজান মাসে এতেকাফ করে। নামায আদায়ঃ মসজিদে ধনীরা এক কাতারে আর গরীবরা অন্য কাতারে নামায আদায় করে না।

ধনী-গরীব সবাই একি কাতারবন্দী হয়ে নামায আদায় করে। মুসলিম পরিবারের কোন সদস্য মারা গেলে ধনী-গরীব সবাই জানাযায় অংশগ্রহন করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জানাযার নামায আদায় করে। ঈদের নামাযেও ধনী-গরীব একত্রে নামায আদায় করে। নামায শেষে কোলাকুলি করে। কবরস্থানঃ পৃথিবীতে ধনী ও গরীবদের জন্য কোন আলাদা কবরস্থান আছে বলে আমার জানা নেই।

মৃত্যুর পর সবাইকে কবরস্থ করা হয়। ধনীর কবরের পাশে গরীবকে দাফন করা হয়। আবার গরীবের কবরের পাশে ধনীকে দাফন করা হয়। কবরস্থানে ধনী-গরীবের কোন ভেদাভেদ নাই। কিন্তু মসজিদে সহ অবস্থান, নামাযে অংশ গ্রহন ও মৃত্যুর পর কবরে কবরস্থ করা ছাড়া অন্য কোন জায়গায় ধনী-গরীবের মিল দেখা যায় না।

যুগে যুগে ধনীরা গরীবদের উপর জুলুম-অত্যাচার করে আসছে। ধনীরা গরীবদের সম্পদ অন্যায় ভাবে গ্রাস করছে। কোন কোন দাওয়াতে গরীবদের জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্টানে গরীব ঘরের মেধাবী সন্তানকে চাকরী না দিয়ে ধনী পরিবারের সন্তানকে চাকরীতে নিয়োগ দিতে দেখা যায়। রাষ্টীয় কোষাগার থেকে গরীবের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ সরকারী কর্মকর্তা ও সমাজের উচু শ্রেনী মানুষগুলো ভোগ করে থাকে।

সমাজের সর্বত্র গরীবদেরকে ঠকানো হয়। তাদেরকে ঘৃনা করা হয়। ধনীদের কাছে আমার প্রশ্ন? ۞۞ মসজিদে গরীবের সাথে সালাত আদায় করেন, মৃত্যুর পর কবরে থাকতে কোন অসুবিধ বোধ করবেন না তাহলে অন্যসব ক্ষেত্রে তাদের প্রতি অবিচার, অবহেলা করেন কেন? ۞۞ এক সাথে সালাত আদায় করতে লজ্জাবোধ করেন না তাহলে বিভিন্ন দাওয়াতে একসাথে এক টেবিলে খাবার খেতে লজ্জাবোধ করেন কেন? ۞۞ নিজেরা ভাল ভাল খাবার খেয়ে খাবারের বাকী অংশটুকু কেন তাদেরকে দিবেন? কেন তাদেরকে সমান ভাবে খাবার খেতে দিবেন না? জানি এই সব প্রশ্নের উত্তর আপনারা দিতে পারবেন না কারন আপনারা গরীবদেরকে ঘৃনা করেন। অথবা মনে মনে বলতে থাকেন, “নীচু জাত বা গরীবদেরকে বেশী প্রশ্রয় দিতে নাই। ” মনে রাখবেন আপনি না হয় গরীরদেরকে অবেহলো করলেন কিন্তু যিনি আপনাকে ও গরীবকে সৃষ্টি করেছেন সেই মহান আল্লাহ তায়ালা গরীবের জন্য বিশেষ পুরস্কার ঘোষনা করেছেন।

যা আপনি পাবেন না। কাল কিয়ামতরে দিন আপনাকে বিশাল অর্থ সম্পদের হিসাব দিতে হবে। আর গরীবরা খুব সহজভাবে পুলসিরাত পার হয়ে জান্নাতে যেতে পারবে যদি তারা মুমিন হয়ে থাকে। পরিশেষে একটি হাদিস শেয়ার করে শেষ করতে চাই। আমাদের প্রিয় নবীর (সাঃ) একটি হাদিসঃ জাহান্নামে প্রবেশ করবে প্রতাপশালীরা আর জান্নাতে যাবে দুর্বল অসহায় মানুষগুলোঃ আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: জান্নাত ও জাহান্নাম পরস্পর বিতর্ক করবে।

জাহান্নাম বলবে, আমাকে প্রতাপশালী, শক্তিধর, স্বৈরাচারদের দেয়া হয়েছে। আর জান্নাত বলবে, আমার যে কী হলো? শুধু আমার এখানে দুর্বল আর সমাজের পতিত মানুষগুলো আসছে। তখন আল্লাহ জান্নাতকে বলবেন: তুমি হলে আমার রহমত ও করুনা। আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা আমার রহমত দ্বারা অনুগ্রহ করি। আর তিনি জাহান্নাম-কে বলবেন: আর তুমি হলে আমার আযাব।

বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা আমি আমার আযাব দিয়ে শাস্তি দিয়ে থাকি। (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম)


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।