আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তারেক-মামুনের মামলায় দিনভর আইনজীবীদের বাদানুবাদ

দিনভর দুই পক্ষের বাদানুবাদের মধ্যে দিয়ে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান  তারেক রহমান এবং তাঁর ব্যবসায়িক বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে করা অর্থপাচার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার আসামিপক্ষের জেরার জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মোতাহার হোসেন তারিখ নির্ধারণ করেন। এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আসামি মামুনের পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দিনভর দফায় দফায় বাদানুবাদ চলে।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, সাক্ষ্য মুলতবি রাখার জন্য আসামিপক্ষের পক্ষ থেকে তিনটি আবেদন করা হয়েছে।

আদালত তা অগ্রাহ্য করে সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আদালতের কাছে তাঁরা ঈদের পর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণের জন্য অনুরোধ জানান। কিন্তু আদালত বৃহস্পতিবার তারিখ নির্ধারণ করে এজলাস ত্যাগ করেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন বিচারককে উদ্দেশ করে ‘সরকারের দালাল’ বলেন।

এ অভিযোগের ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, এই মামলার বয়স হচ্ছে চার বছর।

এর মধ্যে ৮০টি কার্যদিবস শুনানির জন্য গেছে। ৪০টি কার্যদিবসে আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করেছে, আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। মামলাটির বিচারকাজ বিঘ্ন করতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতের দোহাই দিয়ে সময়ের আবেদন করেছেন। এ ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে সময়ের আবেদন করে আদালতের সময়ক্ষেপণ করেছেন। আসামিপক্ষের সময় আবেদন করার জন্য উপযুক্ত কারণ না থাকায় আদালত তা নাকচ করে সাক্ষ্যগ্রহণের আদেশ দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জানান, এ মামলায় আসামিপক্ষে পরপর তিনবার সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত তা অগ্রাহ্য করেন এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন। তিনি বলেন, আদালতে ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। আসামিপক্ষের আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীদের হেনস্তা করতে আদালতের ভেতরে পুলিশ ঢোকানো হয়েছে ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে।

এর আগে সকালে এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। আদালত সূত্র জানায়, তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দুদকের আইনজীবীরা আদালতে আবেদন জানান। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তা মুলতবি রাখার আবেদন করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে কয়েক দফা বাদানুবাদ হয়। এই পরিস্থিতিতে বেলা দুইটায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য সময় নির্ধারণ করে এজলাস ত্যাগ করেন আদালত।

নির্ধারিত সময় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে আবারও বাদানুবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ এসে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি শান্ত হলে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর ক্যান্টনমেন্ট থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে তারেক রহমান এবং তাঁর ব্যবসায়িক বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে দুদক।

এতে অভিযোগ করা হয়, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দিয়ে নির্মাণ কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের মালিক খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াসউদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন।

সিঙ্গাপুরে এ টাকার লেনদেন হয়। এরপর মামুন ওই অর্থ সিঙ্গাপুরের ক্যাপিটাল স্ট্রিটের সিটিব্যাংক এনএতে তাঁর নামের ব্যাংক হিসাবে জমা করেন। এ টাকার মধ্যে তারেক রহমান তিন কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এই মামলায় ২০১০ সালের ৬ জুলাই তারেক রহমান ও গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরের বছর ৮ আগস্ট  মামলায় তারেক ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।