আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যা ভেবেছি তাই লিখেছি



আপন ইচ্ছার অনুচারীরা সবসময় অন্যকে অনুকরণ করতে পারেনা । যে পেশা গ্রহণ করলে নিজের সূক্ষ্ম অনুভূতি ও সৌন্দর্যবোধ ধ্বংস হ্ওয়ার সম্ভাবনা সেই পেশাটাকে আমি আমার সূক্ষ্ম অনুভূতি ও সৌন্দর্যবোধ বাচিয়ে রাখার স্বার্থেই এড়িয়ে যেতে চাই। যে ব্যবস্থা ব্যক্তির মেধা প্রতিভা বিকাশের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করে তা আমার ভাললাগার কোন কারণ নেই। যে ব্যবস্থায় ব্যক্তি তার মনের ভাবটি কোনোরকম সংকোচ না করে প্রকাশ করতে অক্ষম সে ব্যবস্থা আমার অপছন্দ। ভাল চাকর হতে পারাই ভাল নেতা হওয়ার সম্ভাবনা বলে আমি মনে করিনা।

জগ‍তটাকে যেরকম পাচ্ছি সেটাই মেনে নেয়ার মাঝেই কল্যাণ এটা্ও আমি মনে করিনা। আমি আমার চারপাশকে যেরকম দেখতে চাই সেভাবে তাকে গড়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালানোতেই আমার আনন্দ। সকল সাফল্য অর্জনের আনন্দোৎসব কিংবা কোন প্রাপ্তির বিজয়োৎসবে আমাকেই স্বীকৃতি পেতে হবে, সবার সামনে থাকতে হবে এসবের প্রয়োজনীয়তা আমি অনুভব করিনা। তবে চ্যালেন্জ মোকাবেলায় ও আন্দোলনে সংগ্রামে ঝুকি নিয়ে সামনে থাকার ক্ষেত্রে পিছুটান মোটেই নেই। আসলে সামাজিক র্মযাদায় শীর্ষে অবস্থান, ব্যাপক প্রভাব প্রতিপত্তি, বিত্ত বৈভব আর সামাজিক স্বীকৃতি, জনপ্রিয়তা অর্জন আর সস্তা সম্মনের দিকে আমার দৃষ্টি নেই।

পার্থিব জীবনের সাফল্য মাপতে পরের জন্যে আমি কিছু করতে পারছি কিনা, বেশি বেশি ভাল কিছু করার জন্যে আমার সার্মথ্য দিন দিন বাড়ছে কিনা সেদিকেই আমার মনোযোগ। তবে বাইরের বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর বলে মনের ভেতরের অন্তর্নিহিত ব্যাপারকে কম গুরুত্ব দেয়ার মানুষ আমি নই। নিজে সৎ না হয়ে অন্যকে সততার কথা বলা অর্থহীন। নিজে অসচেতন থেকে অন্যকে সচেতন করার দায়িত্ব্ও নেয়ার কোন মানে হয়না। নিজে স্বার্থপর ও জটিল হয়ে অন্যকে সরলতা ও পরের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করা অসম্ভব।

আমার মানবিকতা থাকলেই কেবল অমানবিক সকল কাজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নৈতিক বৈধতা আমি রাখি। ফলে এসকল গুণ করায়ত্বের মাধ্যমে নিজ দুর্বলতা দূর করা ও বৃহৎ কাজের উপযুক্ত করে নিজেকে প্রস্তুত করণেই আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত। অন্যকে সবসময় অনুকরণ করার ইচ্ছা আপন ইচ্ছার অনুচারী মানুষের থাকেনা। আমি যদি আমার নিজের হৃদয়ের কথাই নিজে না শুনি তবে আমার স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবেনা। তাই আমি আমার গন্তব্য অনেক দূরে ঠিক করেছি এবং সেখানে যাবার জন্যে কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

যারা নিজ নিজ আদর্শের জন্যে সংগ্রাম করে তাদের জীবনে সংগ্রাম করাটাই চিরসত্য। তাই আমি আজীবন স্বতস্ফূর্তভাবেই নিজ অস্তিত্বের সক্রিয় জানান দিয়ে যেতে চাই। তুলনামূলক মূল্যায়নের ফলাফল কখনো সঙ্গতিপূর্ণ আবার কখনো অসঙ্গতিপূর্ণ । বিশ্বাস জীবনাচরণকে প্রভাবিত করে। যদি কেউ বলে সে বিশ্বাস করে অথচ বিশ্বাসের প্রতিফলন কর্মে ঘটেনা তবে আমার বলতে দ্বিধা নেই যে বিশ্বাসে গলদ আছে।

প্রকৃত বিশ্বাসীদের আবেগময়তার বহি:প্রকাশ আচরণে প্রতিফলন ঘটা অবশ্যম্ভাবী। পারির্পাশ্বিকতা ও বাস্তবতাকে উপলব্ধির ক্ষেত্রে বিশ্বাসের ধরণই অধিক ক্রিয়াশীল। গন্তব্যে পৌছাতে অন্যের সহযোগিতা প্রাকৃতিক ও ঐশ্বরিক নিয়মেরই অন্তর্ভুক্ত। পরিণতি বা ফলাফলের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ আর পরোক্ষ অনুধাবনকারীর মধ্যকার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ভিন্নতা বিশ্বাসের মাত্রার উন্নতি কমিয়ে আনতে পারে। স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক দুই ধরণের অবস্থায় একজন মানুষের চিন্তা ও আচরণে ভিন্নতা আনতে পারে।

স্বাভাবিক অবস্থায় কৃত আচরণটা তার নিজস্ব চিন্তা, যৌক্তিক বোধের প্রতিফলন কিন্তু অস্বাভাবিক অবস্থায় ব্যক্তি নয় পারিপার্শ্বিক বাস্তবতাই অধিক শক্তিশালী। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উন্নতি অবনতি হঠাৎ ঘটা কোন ব্যাপার নয়। একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই টেকসই উন্নয়ন কিংবা চরম বিপর্যয় আসে। মানুষের স্বভাব, প্রবৃত্তি, প্রকৃতির পেছনে পরিবেশের প্রভাবটা তীব্রভাবে কার্যকর। তবে জ্ঞানগত ক্ষেত্রে এক স্তর থেকে আরেক স্তরে উত্তরণ আচরণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনে।

মানুষের চেতনা জাগ্রতকরণে ভয়ের প্রভাব্ও কার্যকর। শাস্তি চেতনা জাগায়, সচেতন করে তবে এটিই সংশোধনের উত্তম পন্থা নয়। এক পর্যায় থেকে আরেক পর্যায়ে পৌঁছার প্রক্রিয়াগত ভিন্নতা ফলাফলে ভিন্নতা আনে। তবে অতীত নয় বর্তমানকে বিবেচনা করেই ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করতে হবে। সংক্ষিপ্ত জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সক্রিয় থাকাই সত্যিকারার্থে বেঁচে থাকার স্বার্থকতা।

সারাজীবন প্রবাহমান নদীর মতই প্রাণবন্ত ও গতিশীল থাকাতেই জীবন হয় অর্থবহ। আসলে খন্ডিত সময়ের জন্য নিজের রুপ পাল্টানো প্রতারণার নামান্তর। নিজের আত্মপরিচয় ও বিশ্বাস অনুযায়ী কর্মপরিচালনাই স্বচ্ছ ব্যক্তিত্বের লক্ষণ। যোগ্যতা,প্রতিভাকে বিকশিত করতে সদা সচেষ্ট থাকাই যথেষ্ট নয় সময়, শ্রম, জান-মাল পরের কল্যাণে বিলিয়ে দেয়ার মধ্যেই আনন্দ। যেমন করে কোন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কর্মধারার আদর্শ উপর থেকে নীচে প্রবাহিত হয় তেমন করে নীচ থেকে উপরে প্রবাহিত কিন্তু হয়না।

আমরা যতটা অন্যকে শিখাতে চাই নিজে অন্যের কাছ থেকে ততটা শিখার মানসিকতা রাখিনা। ফলে যেটা হয় একই ধরনের মন মানসিকতার ফলে অযথাই কিছু ব্যর্থ চেষ্টা হয়। ব্যক্তিগত আশা -আকাঙ্খা, দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনশীলতার ক্ষেত্রে সবার ক্ষেত্রে একই ধরনের প্রভাব পড়েনা। ব্যক্তিভেদে ব্যক্তিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠার পেছনে নানান ধরনের ভুমিকাই স্পষ্ট হয়। ফলে ব্যক্তির অর্ন্তজগত গঠনে বর্হিজগতের গুরুত্বকে আমরা কিছুতেই অস্বীকার করতে পারিনা।

সময়ের দাবি পূরণ করেই এগিয়ে থাকতে হয়। তাই নেতৃত্ব দিতে হলে সময়ের দাবিগুলো বুঝতে হয়। কোন উদ্যোক্তাই সময়ের দাবি অনুযায়ী প্রস্তুতি না নিয়ে কাংখিত ফলাফল আনতে পারবে না। তবে হ্যাঁ এটিও ঠিক যে আজ যা গুরুত্বপূর্ণ কাল তার প্রয়োজনীয়তা নাও থাকতে পারে। আমাদের সমাজ জীবনের যাপিত বাস্তবতার সাথে মিলালে একথার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পাওয়া যায়।

কিছু পেতে গেলে যে কিছু দিতে হবে এটা মেনে না নিয়ে এগুনো চরম বোকামি ছাড়া কিছু নয়। স্রষ্টাও আপনার কাছ থেকে কিছু নেয়ার বিনিময়েই কিছু দিবেন। তবে নেয়ার চেয়ে দেয়ার পরিমাণটা যার পক্ষ থেকে বেশি হয় সেই শ্রেষ্টত্বে এগিয়ে থাকে। সফলতা অর্জনের কৌশল ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হয়। যিনি কবি আর যিনি ব্যবসায়ী দুজনের জীবন সংগ্রাম ভিন্ন ধরনের।

ফলে অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গিও ভিন্ন ধরনের। এই যৌক্তিক বাস্তবতাই বিল গেটসের কাছে আর ওসামা বিন লাদেনের কাছে জীবনের ভিন্ন অর্থ তৈরি করেছে। এখন স্ব স্ব ফিল্ডে যারা প্রতিষ্ঠিত তাদেরও পরামর্শ আপনার কোন কাজে না্ও লাগতে পারে; এমনকি ক্ষতিও করতে পারে। আপনার কি করনীয় বা কিভাবে জীবন পরিচালনা করা উচিৎ এসবক্ষেত্রে দুনিয়াবী ব্যাপারে সঠিক দিক নির্দেশনা আপনি কোথাও পাবেন না। কারণ গবেষক ও রাজনীতিবিদ দুজনের কাছ থেকে আপনি ভিন্ন গাইড লাইন পাবেন।

তাই আপনার নিজস্ব উপলব্ধি, বিচারক্ষমতা , নিজ প্রকৃতি ও পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার আলোকেই নিজের চলার উত্তম পথ বাছাই করতে হবে। স্রষ্টা ও আপনি ছাড়া আপনার সার্বিক দিক অন্য কোন ব্যক্তি মানুষের কাছেই স্পষ্ট হওয়া সম্ভব নয়। ধর্মতো মূলনীতি দেয় কিন্তু তার আলোকে সমযোপযোগী বাস্তবমুখী পরিকল্পনা ও কাজ মানুষকেই ঠিক করতে হয়। নোবেল বিজয়ী ইউনুস হয়তো স্কুলে, কলেজে নোবেল বিজয়ী শিক্ষক পাননি তবে তিনি সবাই হয়তো যা ধারণাও করেনি তাই করেছেন। ফলে উপযুক্ত পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা দিয়ে পরিচালনা করার মত লোক চারপাশে থাকবে এটা সবক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত নাও হতে পারে।

চাওয়া ও পাওয়ার মাঝে ব্যবধান যত বাড়ে ততই যে হতাশা বেশি ঘীরে ধরে এটা ঠিক না। অনেক সময় এই ব্যবধানই কর্মে উদ্দীপ্ত করে। ফলে ব্যক্তি বিশেষে একই ধরনের অবস্থাও ভিন্ন ফলাফল নিয়ে আসে। আসলে সমাজকে সরলতা থেকে জটিলতার দিকে নিয়ে যা্ওয়া কল্যাণকর নাকি অকল্যাণকর এটা নিয়ে তর্ক বিতর্ক করতে যেয়ে যদি কেউ ব্যক্তির চিন্তা বা মত প্রকাশে ভাষার জটিলতাকে তুচ্ছ জ্ঞান করেন তবে আমি তা মানিনা। কারণ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন নানা স্তরের লোক আছে, বয়সভেদে শিক্ষাভেদেও চিন্তাবুদ্ধিতে এরকম নানা স্তরের লোক আছে।

ফলে সব কিছুই যে নিজেকে দিয়েই মাপব এটা ঠিক হবেনা। যে কোন তুলনামূলক মূল্যায়ন মূল্যায়নকারীর ওপরই নির্ভরশীল। ফলে তুলনামূলক মূল্যায়নের ফলাফল বিদ্যমান বাস্তবতায় কখনো সঙ্গতিপূর্ণ আবার কখনো অসঙ্গতিপূর্ণ হয়। আর ফলাফলের প্রভাবটাও কারো জন্যে নেতিবাচক কারো জন্য ইতিবাচক হয়। আসলে বৈচিত্রময় চিন্তা ও কর্মের মাধ্যমে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতার স্বাদ কখনো ঝাল কখনো মিষ্টি হয়।

তবে বুদ্ধিমানের কাছে কোন অভিজ্ঞতাই অর্থহীন নয়। ব্যক্তির উন্নতি মানেই কি জাতির উন্নতি? অবশ্যই। তবে যদি কোন ব্যক্তির উন্নতি অন্য ব্যক্তির ক্ষতি করে হয় তবে সেটা অবনতি। কারণ অর্থনৈতিক উন্নতি হলেও চারিত্রিক অবনতির কারণে সেটাকে সামগ্রিকভাবে উন্নতি বলা ঠিক হবেনা। ফলে ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে যেকোন বৃহৎ পর্যায়েই সার্বিক উন্নতির জন্যে ক্ষতিকর দিকগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।

একজনকে মেরে আরেকজনকে ৫০ বছরের ক্ষেত্রে ১০০ বছর হায়াত দানের দরকার নেই। উন্নয়ন কার্যক্রমকে প্রায়োগিক ফলের আলোকে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণে এনজিওদের কর্মকৌশল যদি অযৌক্তিক যুক্তির পোশাকেই আচ্ছাদিত বলে স্পষ্ট হয় তবে বলার আর কিইবা থাকে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও প্রতিভা ধ্বংসের বৈধ প্রতিষ্ঠান হতে পারে । অর্থ উপার্জনের নানান নয়া নয়া কৌশল কারো জন্য সুখপ্রদ আবার কারো জন্যে মরণ ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে। আমরা যখন যিনি পিছিয়ে আছেন, যিনি দুর্বল সেই পশ্চাদপদ মানুষকে উপেক্ষা করব তখনই ভারসাম্যহীনতা অশান্তি বাড়াতে শুরু করবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোও কখনো কখনো যেমন প্রতিভা ধ্বংসের বৈধ প্রতিষ্ঠান হতে পারে তেমনি অতিরিক্ত সম্পদ, জ্ঞান, ক্ষমতাও নিজ শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্টের কারণ হতে পারে। যা কিছু মানুষের জন্যে মানুষই যদি তার জন্যে হয়ে যায় তবে তা অনাকাংখিতই বটে। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে তাল মিলাতে অক্ষমতা অনেককেই প্রান্তিক বানিয়ে ফেলে। এটা বুঝার জন্যে গ্রামে বা বস্তিতে যেতে হবেনা। শহুরে শিক্ষিত সমাজের বাস্তব চিত্র থেকেও এটা স্পষ্ট হওয়া সম্ভব।

অবশ্য সরল চিন্তার দর্পনে জটিল বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটা অনেকটা অসম্ভব বৈকি। তার পরও নয়া বিশ্ব ব্যবস্থা বুঝতে সামাজিক পরিবর্তনের গতিধারা বুঝাটাও সহায়ক নি:সন্দেহে। আধুনিকতা প্রগতি মানেই যে পুরাতনকে বাদ দিয়ে নতুনকে গ্রহণ এমনটা নাও হতে পারে। সকল ঐতিহ্য, প্রথাকে অস্বীকার করে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা হয়না। ধ্যানি নাকি কর্মী কে শ্রেষ্ট- এসবক্ষেত্রে শ্রেষ্টত্ব নির্ণয়ে তুলনামূলক পর্যালোচনা কারো কাছে সমস্যাজনক মনে হতে পারে তবে আমার কাছে কর্মী না হয়ে শুধু ধ্যানির কোন মূল্য নেই।

বিশাল স্বপ্ন যেমন বড় কাজে সফল হতে সাহায্য করে তেমনি ছোট ছোট ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের মাধ্যমেই বড় স্বপ্নও তৈরি হয়। আসলে স্বভাব প্রকৃতিভেদে ভিন্নতা প্রত্যাশার যৌক্তিক সীমানায়ও নানাবিধ ধরণ অনেক সময় গড়ে তুলে। সমস্যার কাছে আত্মসমর্পণই সমাধানের বড় প্রতিবন্ধকতা। আসলে ধর্ম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেনা কিছু মানুষই বিভ্রান্তিকে বৈধতা দিতে ধর্মের আশ্রয় নেয়। ধর্ম নিয়ে যারা ব্যবসা করে কিংবা সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্যে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ধর্মের প্রকৃত দাবি তাদের কাছে গুরুত্বহীন।

মূলত ভোটক্রয়ের বাস্ততায় গণতন্ত্র অর্থহীন হয়ে পড়ে। টাকার কাছে নিজেকে বিক্রির মানসিকতা দূর নাহলে গণতান্ত্রিক আবহাওয়ার প্রত্যাশাও পরিত্যাজ্য। ফলে প্রতিটা ব্যক্তির ভুমিকাই যেখানে মুখ্য সেখানে কাউকেই অবহেলা করার সুযোগ নেই। মানুষের সাথে মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক, প্রেম-প্রীতি,স্নেহ-শ্রদ্ধা, আন্তরিকতা-ভালবাসার মূল ভিত্তি কখনোই অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা হওয়াকে সমীচীন মনে করার কারণ নেই। কর্মজীবনে পরাধীনতা দাসত্বের নামান্তর হলে অধিকাংশ মানুষই দাস হয়ে পড়ে।

তবে প্রকৃত স্বাধীন মানুষ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাকর হতে পারেনা বললে সম্পূর্ণ স্বাধীন মানুষের অস্তিত্ব যতটা না বাস্তবিক তার চেয়ে বেশি কাল্পনিকই ধরে নেয়া সুখকর হবে। সকল মানুষ সমান বলে কাউকে বেশি কৃপা দেখানো তার প্রতি অহেতুক করুণাজনিত অপমানও হতে পারে। দয়া করা আর অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর পার্থক্য বুঝাটা এজন্যেই জরুরী । আদর্শের তাত্ত্বিকতা ও জগতের বাস্তবতাকে মিলিয়ে বুঝাটা জরুরী। আমার উপলব্ধি হচ্ছে, যেকোন ক্ষেত্রেই যিনি দায়িত্বে থাকেন, কর্তা ব্যক্তি, নেতা কিংবা পরিচালক সে অন্যের তুলনায় নি:সন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবর্তনশীল বিশ্বে পরিস্থিতি এখন সময়ের সঙ্গে বদলে যায় খুব দ্রুত। কিন্তু প্রতিটি সেক্টরেই ক্ষুদ্র কিংবা বৃহৎ পরিসরে সামনে থাকা ব্যক্তির সম্পাদিত কাজ অমলিন থেকে যাওয়ায় জটিলতা বাড়ানোর সকল আশংকা অথবা সুফল বয়ে আসার সম্ভাবনা পরিস্থিতির আলোকে প্রভাবিত হয়। তাই সচেতনতা ও কৌশলী হবার বিকল্প নেই। বিশ্বায়নের এই যুগে প্রতিযোগীতামূলক পৃথিবীর ভবিষ্যত প্রজন্ম হিসেবে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময় নেতৃত্ব দেয়ার উপযোগী করে নিজেকে প্রস্তুত করার সাধ্যানুযায়ী প্রয়াস অব্যাহত রাখাতেই কল্যাণ। কর্মজীবন নিজের দেশের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ভাবাটা নেহায়েত দুর্ভাবনা।

মানবতার কল্যাণ, দেশ ও জাতির মঙ্গলে নিবেদিত প্রাণ তরুণ কর্মবীরদের কাংখিত যোগ্যতা ও মান অর্জনে সকল অলসতা গাফিলাতি ভুলতে হবে। মানুষকে জানা ও বুঝার সুযোগ নি:সন্দেহে ক্ষুদ্র পরিসরের জীবনে বৃহৎ সংযোজন বটে। সামাজিক ও মানবিক মানুষ হবার জন্যে মানুষ কতটা অসহায়ভাবে বেচেঁ থাকতে পারে তা যেমন বুঝা দরকার তেমনি বিপ্লবী আদর্শের তাত্ত্বিকতা ও জগতের বাস্তবতাকে মিলিয়ে বুঝাটা যৌক্তিক বিশ্বাসী মানুষ হবার জন্যে জরুরী। প্রতিটি মানুষই নানাবিধ পর্যায়ের দায়িত্ব পালন করে থাকে। তবে দায়িত্বের পরিসরের ভিন্নতার কারণেই ব্যক্তির মর্যাদা, গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটে।

হৃদয়ের গভীরের অনেক আশাই স্বপ্ন হয়ে ডানা মেলতে শুরু করে কল্পনার রাজ্যে। আমার বিশ্বাস আন্তরিক ও পরিশ্রমী হলে সাধারণ ব্যক্তিও অসাধ্য সাধনে সক্ষম হয়। স্বপ্নকে বাস্তব বর্তমানে রুপ দিতে আমাদের আশা, স্বপ্ন, ভালবাসা ও প্রচেষ্টাকে মিলিয়ে ভরে তুলতে হবে এই বসুন্ধরা। এজন্যে মরণাপন্ন রোগী বাচাঁতে বিশুদ্ধ রক্তের প্রয়োজনের মতই বিশুদ্ধ রক্ত ঝরানোর প্রয়োজন হতে পারে। আমার প্রত্যাশা হচ্ছে, নবীনেরা নিজেদের সামর্থ্যবান করে তুলবে যেখানে জীবন ব্যাহত ও বেদনার সেখানে জীবনকে সুন্দর ও আনন্দময় করে তোলার জন্য।

নিজেদের একাত্ম করবে মন ও হৃদয় প্রসারিত করে অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। আমাদের বড় সমস্যা সময় ব্যবস্থাপনা ও গুরুত্বানুযায়ী অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার ক্ষেত্রে অদক্ষতা। এই সমস্যার সমাধান করে বর্তমান সময়ের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে। উপযুক্ত লোকের সংকট পূরণের কাংখিত প্রস্তুতিই গুরুত্বের বিচারে এগিয়ে। আমি দুআ চাই আমরণ চিন্তায় ও কর্মে সক্রিয় থেকে সামথ্যের সব্বোচ্চ ব্যবহার করে কাংখিত মানের ভুমিকা পালনে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এবং ভিশন মিশন এক জায়গায় করে সরব অস্তিত্বের স্বাক্ষী হবার জন্য।

আমার বেচেঁ থাকা যদি শুধু শুধু আমার কিংবা আমার পরিবারের বেচেঁ থাকার জন্যেই হয় তবে বৃহত্তর স্বার্থে আমি মরণকেই পছন্দ করি। ক্ষমা প্রত্যাশী তাদের কাছে যারা আমার ভুল ত্রুটি, ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় দেয়া কষ্টের কারণে নানান ধরণের বেদনা অনুভব করেছেন। আমার পরিচিত কাছের মানুষভজন আমাকে স্মরণ করবে না, যোগাযোগ রাখবে না, ভুলে যাবে-এমনটা ভাবা আমার জন্যেই খুবই কষ্টের। যদিও অনেক আবেগ অনুভূতিই চরম বাস্ততার কাছে এসে হারিয়ে যায়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।