আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দিন কিউইদের, চমক মমিনুলের

কখনো স্কোয়ার কাট করছেন, কখনো ফ্লিক আবার কখনো অনড্রাইভ। স্পিন জু জুকে দূরে সরিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন কতই না অনায়াসে। সাকিব-সোহাগকে যেন পাত্তাই দিচ্ছিলেন না। ডিপ মিড উইকেট দিয়ে দুই দুইবার ছক্কা মেরে বোকা বানিয়েছেন সাকিবকে। তার হাত থেকে ছাড়া পাননি সোহাগ গাজীও।

তাকেও ওই ডিপ মিড উইকেট নিয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছেন। তবে এই ব্যাটসম্যানটি কিন্তু দলে স্বীকৃত কোনো ব্যাটসম্যান নন। নিউজিল্যান্ড দলের বোলার টেন্ট বোল্ট। সকালে জহুর আহমেদ চেচ্ধুরী স্টেডিয়ামে ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমে আদায় করে নিয়েছেন দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি। সাগরিকায় টেন্ট বোল্টের দুরন্তপনায় কাল যেন দর্শক বনে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা।

নিউজিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত ৫৬৯ রানে থামলেও অপরাজিত ছিলেন বোল্ট। আগের ২৪ ইনিংসে যার গড় মাত্র ১৩, সেই দুধ-ভাত ব্যাটসম্যান কাল বাংলাদেশকে যেন কাঁদিয়ে ছাড়লেন। খেললেন ৫২ রানের হার না মানা ইনিংস। বোল্টের স্টাইলিস্ট ব্যাটিং দেখে হতভম্ব অপর প্রান্তে থাকা সতীর্থ ব্রাডলি ওয়াটলিং। এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানও কাল দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।

শেষ উইকেট জুটিতে ওয়াটলিং-বোল্ট মিলে করেছে ১২৭ রান। কিউইদের ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের জুটিও এটি। আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্টে শেষ উইকেটে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। শুধু ব্যাটিংয়ে নয়, বোলিংয়েও চমক দেখিয়েছেন এই বোল্ট। 'লোকাল হিরো' তামিম ইকবালকে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরিয়ে দিয়ে চট্টগ্রামবাসীর আনন্দ মাটি করে দিয়েছেন তিনি।

তাই ওয়াটলিং সেঞ্চুরি করলেও কালকের দিনটি ছিল বোল্টময়। কেননা ওয়াটলিং স্বীকৃত ব্যাটসম্যান, তিনি সেঞ্চুরি করতেই পারেন। কিন্তু বোল্টের মতো ক্রিকেটারের স্টক-মেকারের ভূমিকায় দেখতে পাওয়াটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।

জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ বিকালে ঝিমিয়ে পড়া দর্শকদের আনন্দে ভাসিয়েছেন মমিনুল হক। একে তো মাথায় এভারেস্টসম রানের পাহাড়, তারপর ৮ রানেই দুই ওপেনার তামিম ও বিজয়ের বিদায়।

উইকেটে গিয়ে মমিনুল কোথায় থিতু হওয়ার জন্য একটু বেশি সময় ব্যয় করবেন, তা না করে চড়াও হলেন কিউই বোলারদের ওপর। ব্রুস মার্টিনের পর পর তিন বলে বাউন্ডারি। ওই ওভারে ১২ রান। পরের ওভারে নাস্তানাবুদ বানিয়ে ছাড়লেন আরেক কিউই বোলার ডগ ব্রেসওয়েলকে। এই ওভার থেকেও তিন বাউন্ডারিসহ ১৬ রান নেন মমিনুল।

এতই দ্রুতগতিতে রান আসছিল যে, এটি টেস্ট ম্যাচ কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছিল মনে। টি-২০ স্টাইলে ব্যাটিং করে মাত্র ৩৬ বলেই হাফসেঞ্চুরি কমর ফেলেন মমিনুল। দিনশেষে অপরাজিত ছিলেন ৭৭ রানে। শেষ বিকালে একপ্রান্তে মমিনুলের তাণ্ডব চললেও আরেকপ্রান্তে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে অসীম ধৈর্যের সঙ্গে ব্যাটিং করেছেন মার্শাল আইয়ুব। ৭৪ বলে ২১ রান করে অপরাজিত রয়েছেন তিনিও।

বাংলাদেশের ইনিংস দুই উইকেটে ১০৩। এখনো ফলোঅনের আশঙ্কা যায়নি। আর ১৬৭ রান করতে হবে মুশফিকদের। প্রথম দিন শেষে টাইগাররা ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও গতকাল তারা দুশ্চিন্তা নিয়েই হোটেলে ফিরেছেন। পাড়ি দিতে হবে দুর্গম গিরি।

এখনো ৩৬৬ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। হাতে রয়েছে আট উইকেট। টেনশনে রয়েছেন দর্শকরাও। দেখা যাক তৃতীয় দিনে কতদূর যেতে পারে টাইগাররা।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।