আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদ ভ্রমণে স্বাস্থ্যঝুঁকি

সামনে কোরবানির ঈদ এবং দুর্গাপূজা। মুসলিম

ও হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি বড় ধর্মীয় উৎসব। আমাদের দেশে উৎসব মানেই ভ্রমণ। এই উৎসবকে ঘিরেই মানুষ নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি ফিরে যায়। কেউ কেউ আবার উৎসবটাকে আরও উপভোগ করার জন্য দেশ-বিদেশের দর্শনীয় জায়গায় চলে যান পরিবার-পরিজন নিয়ে।

উৎসবের সঙ্গে ভোজনের আয়োজনও থাকে। ধর্মীয় উৎসবরে সঙ্গে ভ্রমণ এক অবিচ্ছেদ্য বিষয়। একইভাবে উৎসব মানে খাবারের সম্ভার।

সতর্কতার বিকল্প নেই : এই ভ্রমণে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ভ্রমণের সময় কেউ যাতে অসাবধানতাবশত আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, বাইরের খাবার খেয়ে ও পানি পান করে অসুস্থ হয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।

বিশেষ করে ধাক্কা ধাক্কি বা নিয়ম ভঙ্গ করে বাস ও ট্রেনের ছাঁদে উঠে যাতায়াত করা কোনো অবস্থাতেই উচিত নয়। তা না হলে পুরো উৎসবের আনন্দ আগেই মাটি হয়ে যেতে পারে। ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় সঙ্গে নিতে হবে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চ ভ্রমণে জানালার পাশে অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটা থেকেও সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ঈদ-পূজার ভ্রমণে অধিকাংশই গ্রামের বাড়িতে যায়।

যেখানে অনেক সাধারণ ওষুধও পাওয়া যায় না। তাই সম্ভাব্য অসুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে সাধারণ কিছু ওষুধ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। যেমন- মাথাব্যথা, সর্দিকাশি, ডায়রিয়া, পেটফাঁপা, বদহজম, এসিডিটির মতো সাধারণ সমস্যা এ সময় হতেই পারে। এসবের জন্য প্যারাসিটামল, এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ, এসিডিটি বদহজমের এন্টাসিড, রেনিটিডিন জাতীয় ওষুধ, পেটে গোলমালের জন্য মেট্রোনিডাজল ও খাওয়ার স্যালাইন সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে। এগুলো সঙ্গে নেওয়া ভালো।

একটি ফার্স্টএইড বঙ্ নিজের মতো তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে।

ভ্রমণের খুঁটিনাটি :

ঈদ ভ্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়াটা মোটেও কাম্য নয়। তারপরও অনেকেই কিন্তু ভ্রমণের কারণে ঈদ কিংবা পূজার আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা উৎসবের দিনে থাকেন রোগাক্রান্ত। বিশেষ করে শিশুরা খুব সহজেই আক্রান্ত হয় সর্দিজ্বর, বমি ও ডায়রিয়ায়। এই অসুস্থতার অন্যতম কারণ কিন্তু অসচেতনতা।

ভ্রমণে অভিভাবকরা যদি শিশুদের ব্যাপারে সচেতন থাকেন তাহলে খুব সহজেই কিন্তু এসব শারীরিক বিপত্তি এড়িয়ে চলা সম্ভব। বিষয়টি খুবই সিম্পল। যেমন ধরুন ট্রেন, বাস কিংবা লঞ্চে ভ্রমণের সময় শিশুরা সব সময়ই জানালার পাশের সিটটি পছন্দ করে। এ কারণে হঠাৎ করেই শিশুরা অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটার মুখোমুখি হয়, যা অনেকেরই সহ্য ক্ষমতার বাইরে। ভ্রমণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ডায়রিয়ায়।

এর পেছনে কারণ হলো বাইরের পানীয় এবং খাবার গ্রহণ। আর তাই বাইরের খাবার কোনোভাবেই গ্রহণ করা ঠিক নয়। বিশেষ করে ঘরের তৈরি কিছু খাবার ও পানি সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণে বের হওয়া উচিত। ভ্রমণে খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে সবচেয়ে বেশি। ভ্রমণ পথে নানা ধরনের খাবার শিশুদের আকৃষ্ট করে।

এসব শিশুকে দেওয়া উচিত নয়।

ভ্রমণে সঙ্গী ওষুধ : যারা রোগী তারা প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া ভ্রমণে সাধারণ লোকজন সঙ্গে করে বেশ কিছু নিয়ে যেতে পারেন। যেমন- পেটের গণ্ডগোল, পেটে গ্যাস, বদহজম, সাধারণ সর্দি কাশি, বমি, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা, মাসিকের ব্যথা ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ সঙ্গে নিতে হবে। কারণ গ্রামাঞ্চলে অনেক সময় প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না।

কাজেই ভ্রমণে যেসব ওষুধ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত সেগুলো হলো_ জ্বর, ব্যথা, শরীরব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ যেমন- নাপা, এইচ ইত্যাদি। পেটের পীড়ার জন্য মেট্রোনিডাজল জাতীয় ওষুধ যেমন- এমোডিস, ফ্ল্যাজিল (ডোজ একটি করে দৈনিক তিনবার ৫/৭ দিন) কিংবা সিপ্রোফ্লঙ্াসিন ৫০০ মিগ্রা ( সিপ্রোসিন/ রোসিপ্রো), ডোজ- একটি করে দৈনিক দুবার ৫/৭দিন খাওয়া যেতে পারে। বুকজ্বলার জন্য এন্টাসিড ট্যাবলেট, পেপটিক আলসারের জন্য রেনিটিডিন (নিওসেপটিন আর/ নিওট্যাক) অথবা ক্যাপসুল ওমিপ্রাজল ২০মি.গ্রা. (ওমেটিড/ ওমিগাট/সেকলো ইত্যাদি) খাওয়ার আগে, ডোজ ১৫০ মি.গা. একটি করে দৈনিক দুবার গ্রহণ করা যেতে পারে। খাওয়ার পর ঢেঁকুরের জন্য, পেটফাঁপার জন্য ডমপেরিডন ১০ মি.গ্রা. (অমিডন/ ডিফ্ল্যাঙ্) খাওয়ার আধাঘণ্টা আগে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ডায়রিয়ার জন্য ওরস্যালাইন সঙ্গে রাখতে হবে।

হাঁচি-সর্দির জন্য বড়দের ক্ষেত্রে লিভোসেটিরিজিন জাতীয় ওষুধ যেমন_ ট্যাবলেট অ্যালসেট/ কিউরিন/ সিজোনিঙ্; কিংবা ফেঙ্ােফেনাডিন জাতীয় ওষুধ (ফেনাডিন/ ফিঙ্াল/ ফেঙ্াে ১৮০ মি.গ্রা) ইত্যাদি দৈনিক একটি করে গ্রহণ করা যেতে পারে। লেখক : সহযোগী অধ্যাপক,

হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।   sajolashfaq@yahoo.com

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।