আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাপ ধরাই যার পেশা

বিচিত্র পৃথিবীর বিচিত্র মানুষ। নিজের চাল-চুলা নেই। কিন্তু বড় ধরনের কোন স্বপ্নও নেই যার। শুধুমাত্র ভালভাবে খেয়ে বাচলেই চলবে।

তার দৈন্যদশার জন্য স্ত্রীও ছেড়ে চলে গেছে।

এখন তার সময়-রাত কাটে সাপের সাথেই। অনেকটা অভাবের তারনায় ও বেঁচে থাকার তাগিদে সাপ ধরাকে জীবনের অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন জমসেদ আলী ।

এমনি এক মানুষ স্বর্পরাজ বলে এলাকায় খ্যাত জমসেদ আলী যার সাপ ধরা এবং বিক্রি করাই একমাত্র পেশা। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার বিভিন্ন সাপ ধরেছে। এ সাপ বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে জমসেদ আলীর ভরন পোষন চলে প্রায় ৩০ বছর ধরে ।

কোন গ্রামে বা এলাকায় সাপ আছে এমন খবর পেলেই জমসেদ আলী ছুটে যায় এবং সেখানে গিয়ে সাপ ধরে ফেলেন। সাপ ধরা খুব সহজ কাজ নয়। মাটি খুরে, গাছে উঠে অথবা দেয়াল ভেঙ্গে সাপ বেড় করতে হয়। সাপ ধরার সময় প্রায় সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন তিনি কিন্তু সঙ্গে ঔষধ থাকার কারনে তিনি প্রতিবারেই বেঁচে যান।

জমসেদ আলী জানান, দিনাজপুর শহর থেকে প্রায় ৯ কিঃমিঃ দক্ষিনে সীমান্তবর্তী উথরাইল ইউপির গঁোসাইপুর গ্রামে তার ঠিকানা হলেও তার কোন নিজেস্ব ঘর বাড়ী নেই।

গোদাগাড়ী হাটে একটি বাড়ীর বারান্দায় তিনি থাকেন। সঙ্গী হিসেবে তার সেকেলের একটি রেডিও, একটি বেজি ও চার পাঁচটি বিষধর সাপের বাক্স এগুলি সবসময় তার বিছানার পাশেই থাকে। সাপের মধ্যে রয়েছে গমা, দুধিয়া গমা, কেঁকরি আলাদ, মাছুয়া আলাদ, বোরাসহ বিভিন্ন বিষধর সাপ।

তিনি জানান, সাপে কাটা রোগীকে সাড়াতে মন্ত্র বলতে কিছুই নেই। সঠিক সময়ে উপযুক্ত ঔষধ পেলে সাপ কামরের রোগী আরগ্য লাভ করে।

একটি বিষধর সাপ বিক্রি করে তিনি পান ৩/৪ শত টাকা। সাপ-এ কামরের রোগী ভালো করতে পারলে  ৮ শ থেকে ১ হাজার টাকা পাওয়া যায়। সাপ কামড়ের ঔষধ নিয়ে আনে তার পোষা বেজি। একমাত্র বেজিই জানে এর ঔষধ আর আনে জঙ্গল থেকে। ৩০ বছর ধরে প্রায় ৩ হাজার সাপ ধরেছে।

এক প্রশ্নের উত্তওে বলেন, বিয়ে করেছি কিন্তু আমাকে ছেড়েই সে চলে গেছে। আমার সন্তান নেই। বাবা-মা কেউ বেচে নাই। আমি একা।

এলাকাবাসি জানান, এখন আর আগের মত সাপের উত্পাত নেই।

তাই আগের মত আর ডাক পড়ে না তার। তিনি হাসপাতাল ফেরত্ সাপ কামড় রোগীকে বঁাচিয়ে তুলেছেন এমন ঘটনার জানান দেয় গ্রামের অনেক মানুষ।

উথরাইল ইউপির চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান জানান, হতদরিদ্র জমসেদ আলীর মাসিক কিছু ভাতার জন্য ব্যবস্থা করছেন তিনি। কাগজ পত্র ও ছবিসহ সুপারিশ সদর উপজেলায় জমা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।  



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।