আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাইসেন্স বাতিলের শঙ্কায় এবার প্রাণের গুঁড়া হলুদ

ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা পাওয়ায় প্রাণের প্যাকেটজাত গুঁড়া হলুদের লাইসেন্স বাতিলের মতো পদক্ষেপ নিতে পারে দেশে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই)।
বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় প্রাণের গুঁড়া হলুদে ৪০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) থেকে ৫৮ পিপিএম মাত্রার সিসা পাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
এ জন্য গতকাল মঙ্গলবার প্রাণের গুঁড়া হলুদের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না—এই মর্মে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএসটিআই।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা সংস্থাও (বিসিএসআইআর) প্রাণের গুঁড়া হলুদ পরীক্ষা করে ৪০ থেকে ৫৫ পিপিএম মাত্রার সিসার উপস্থিতি খুঁজে পায়।
যোগাযোগ করা হলে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সার্টিফিকেশন মার্ক—সিএম) কমল প্রসাদ দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘গুঁড়া হলুদে ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা পাওয়ায় প্রাণকে আগেও শোকজ করা হয়েছিল।

এখন আমাদের পরীক্ষাতেও সিসা পাওয়ায় আবার শোকজ করা হয়েছে। ’
বিএসটিআইয়ের আইন অনুযায়ী, লাইসেন্স নেওয়া পণ্যের মানের ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে প্রতিষ্ঠানটিকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হলে বাজার থেকে প্রতিষ্ঠানটির ওই সব পণ্য প্রত্যাহার এমনকি লাইসেন্সও বাতিল করা হয়।
অবশ্য এরই মধ্যে বাজার থেকে সব ধরনের গুঁড়া হলুদ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশ থেকে এত হলুদ প্রত্যাহার হতে তো একটু সময় লাগবে।

তিনি বলেন, বিএসটিআই তাদের আইন অনুযায়ী কী ব্যবস্থা নেবে, সেটা তাদের বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এক ভোক্তার অসুস্থতার কারণ খুঁজতে গিয়ে গত মাসের শুরুতে প্রাণের গুঁড়া হলুদে ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা থাকার বিষয়টি নজরে আসে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ কর্তৃপক্ষের (এফডিএ)। সংস্থাটি বলেছে, দেশটির বিভিন্ন পরীক্ষাগারে প্রাণের ৪০০ গ্রাম এবং ২৫০ গ্রামের গুঁড়া হলুদে ২৮ পিপিএম থেকে ৫৩ পিপিএম মাত্রা পর্যন্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণের গুঁড়া হলুদের চার পরিবেশক প্রতিষ্ঠান সে দেশের বাজার থেকে প্রাণের গুঁড়া হলুদ প্রত্যাহার করে নেয়।
গুঁড়া হলুদে সর্বোচ্চ কত মাত্রার সিসা থাকতে পারে সে বিষয়ে এফডিএর কোনো গ্রহণযোগ্য মাত্রা নেই।

তবে বিএসটিআইয়ের মান অনুযায়ী, গুঁড়া হলুদে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৫ পিপিএম মাত্রায় সিসা থাকতে পারে।
ছয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষা: যুক্তরাষ্ট্রে প্রাণের গুঁড়া হলুদে ক্ষতিকর মাত্রায় সিসা পাওয়ার পর বাজার থেকে প্রাণসহ সাতটি প্রতিষ্ঠানের গুঁড়া মসলার (গুঁড়া হলুদ, গুঁড়া মরিচ ও গুঁড়া কারি) নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে বিএসটিআই। এই সাত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে প্রাণ, এসিআই, স্কয়ার, বিডি ফুডস, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল, মেঘনা গ্রুপের সুপার ফ্রেশ ও বিউটি ফুডস।
ঢাকাসহ দেশের ছয়টি বিভাগীয় শহরে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষাগারে এসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে সংস্থাটির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, একেক পরীক্ষায় প্রাণের গুঁড়া হলুদে একেক মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে।


চিঠি পায়নি বিএসটিআই: প্রাণ বাজার থেকে গুঁড়া হলুদ তুলে নেওয়া শেষ করেছে—এমন ঘোষণার কোনো চিঠি এখনো পায়নি বিএসটিআই।
বিএসটিআইয়ের পরিচালক কমল প্রসাদ দাস বলেন, ‘গুঁড়া হলুদ বাজার থেকে প্রত্যাহার সম্পন্ন হয়েছে প্রাণের কাছ থেকে এমন কোনো চিঠি আমরা এখনো পাইনি। তার মানে হলো, এখনো বাজারে প্রাণের হলুদ থাকতে পারে। ওরা যখন বলবে, প্রত্যাহার শেষ হয়ে গেছে, তখন আমরা বাজার তদারকি করব। যদি দোকানে পাওয়া যায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


তবে প্রাণের পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তো স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে হলুদ তুলে নিয়েছি। তাই বিএসটিআইকে জানানো হয়নি। ’

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.