আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গান আর গান রাজনীতির প্রাণ!

গত দুই বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূণর্বহালের দাবীতে গান করতে করতে বিএনপি নেতাদের মুখে ফেনা উঠার সাথে সাথে ক্ষমতা তেষ্টা পেয়েছে এবং আলীগ ও মহাজোট নেতাদের এই কথায় না না করতে করতে ঘাড় ব্যাথা হয়ে গেছে, আর আমাদের মত সাধারণ মানুষের এই বাক-বাকুম বাক-বাকুম গান শুনে শুনে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরার উপক্রম। কাজের কাজ কিছুই হলো না, মনে হয় হবেও না। তারমানে কি বিএনপি ও তার শরীকরা মিলে এতদিন অরেন্যরোদন করলো? বলতে গেলে তাই-ই, কেননা যে কথার কোন দাম নেই, যে আন্দোলনের কোন ফলাফল নেই তাকে আর কি-ই-বা বলা যায়! আসলে ব্যাপারটি হয়েছে “কোকিল ডাকুক আর না ডাকুক বসন্ত যেমন আসবেই”, তেমনি “কেউ গান শুনুক আর না শুনুক গান তারা গাইবেই”। বিএনপির আবদারের প্রেক্ষিতে আলীগ তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে এবং তাদের সুষ্পষ্ট বক্তব্য সংসদে উত্থাপনের আহবান জানিয়েছে। সেটা একটা ভাল প্রস্তাবই বটে।

কারণ সরকারের এই আহবানে সাড়া দিলে জনগনকে নিয়ে তাদের সুরেলা গানের ধ্বনি খুব অল্পতে জনকানে পৌছানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু বেসুরা গানের শিল্পিরা মঞ্চে গিয়ে সেই গান পরিবেশন করতে ভয় পেয়েছেন, এমনকি তাদের ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় গাওয়া গানের কথাও শ্রোতাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তাই সরকার দলের বা এক পক্ষীয় শিল্পীদের গানে দেশের জনগণ একটু হলেও মাতোয়ারা আছেন। মজার ব্যাপার হলো, বিএনপি সবসময় বলছে যে তাদের গান না শুনলে তারা ইলেকশনে যাবে না তাতে যত খারাপ পরিস্থিতি-ই আসুক না কেন। যে গানের কোন সুরাহা এখনো পর্যন্ত হলো না, অথচ তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের উন্নয়ন করে কি কি আটি বাধবেন তার প্রতিশ্রুতি অহরহ দিয়ে চলেছেন।

তাহলে ফলাফলটা কি হয়, অর্থ আলীগের গানের কথা-ই কি সত্যি! মানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে। যে গানে সরকার দলীয় শিল্পীরা বুঝানোর চেষ্টা করছেন যে তারা শরিয়ৎ-মারফৎ সবকিছু মেনে এই গণ-শত্রুদের উপযুক্ত বিচারের গান গাচ্ছেন সাথে সাথে গানের কথার সাথে বাস্তবের মিল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে বেশকিছু নতুন মূখ আছেন যারা মডেল হিসেবে উক্তগানের সাথে লিপ্সিং করছেন, অবশ্য তারা বেশ হাততালিও পাচ্ছেন। তাহলে বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকার গান কি যুদ্ধাপরাধীদের বাচানোর গান? নইলে তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া যেখানে নির্বাচনে যাবেনা সেখানে ক্ষমতায় গেলে কি করবে তার প্রতিশ্রুতি কি করে দেবে? আরো মজার ব্যাপার হলো, তারা যুদ্ধাপরাধদের নিয়ে সরকারের সুরে সুর মিলিয়েছেন, যে তারাও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চান। তাহলে- বিচারপতি নিজামুল হকের পদত্যাগের পর কেন ব্যারিষ্টার মওদুদ হক পুরো বিচার কার্য নতুন করে শুনানির জন্য যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে আদালতে লড়বেন, কেন বিএনপির মহাসমাবেশে কারাগারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীদে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে শ্লোগান দেওয়া হবে? তাহলে আলীগের সুরে সুর মেলানোটা কি নেহাত লোক দেখানো? কয়েকদিন আগে সাপ নিয়ে একটা গান শুরু হয়েছিল।

কেউ কাউকে সাপ বলে আবার কেউ কাউকে বলেছেন সাপের ওঝা। মানে হ-য-ব-র-ল গান আরকি। এই গানটা বেশ জমে উঠেছিল, কারণ পুরোটাই ছিল মারফতি গান ফলে এর ভেদ যার বুঝার দরকার সে বুঝেছে। এই গানের শ্রোতারা তা ইতিবাচক হিসেবে দেখেছে, কারণ আর যাইহোক নোংরা কোন ছন্দ ছিল না। নতুন করে আলীগ ও বিএনপি আরেকটি গান শুরু করেছে।

এই গানের কথামালায় ষ্পষ্ট কিছু নেই। সেটা হলে ১/১১ এর পুনরাবৃত্তির গান। দু’দলের শিল্পীরাই তাদের গানে গানে বলে যাচ্ছেন যে বিএনপি ১/১১ আনতে চায় বা আলীগ আবার ১/১১ আনতে চায়। আর আমরা জনগণ তা কখনো-ই চাই না। এই গানের গিতিকার, সুরকার এখনো সবার চোখে অষ্পষ্ট তাই তেমন মন্তব্যও করা যাচ্ছে না।

পরিশেষে, এই সুরেলা বা বেসুরা গান আর কতদিন? এতে লাভের অংক ভারী হচ্ছে কার? আগামি নির্বাচনে কে যাবে বা না যাবে তার জন্য কি সময় বসে থাকবে? আমরা পুরো জাতি হা করে আবার নতুন কোন গান শোনার জন্য বসে থাকবো? হয়তোবা সেটা চাইবো না। তাহলে কি চাইবো, কেমনে চাইবো সেই প্রশ্নের উত্তর খোজার দায়িত্ব না হয় সম্মানিত পাঠকের উপরই ছেড়ে দিলাম। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।