আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক ভুবনের ২ বাসিন্দা শত্রু চিরকাল

আমি নিতান্ত সাদমাটা মানুষ। বলারমত কোন পরিচায় নাই। নিরামিষ মানুষ ।

সেদিন রাস্তায় আমার বন্ধু রস্তুম আলী সাথে দেখা। সালাম কালাম বিনিময়ের পর দিনকাল কেমন যাচ্ছে জিজ্ঞেস করতেই সে বিরটা একটা দির্ঘশ্বাস ফেলে যা বলল............... ভাইরে কই যাই! মহা পেইজগির মধ্যে আছি।

এই দেশে জম্মাইয়া ভালই ধরা খাইছি। পোলাপানের পরিক্ষা সামনে দেশে আইলো হরতাল। হরতাল নিয়া বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি। সরকারি আর বিরোধীদলের টানাটানিতে দেশের সাথে সাথে দেশের ভবিষ্যতেরও দফারফা। কই যাই মনে দু:খ কারে কই।

একজনে চলে উত্তর দিকে তো আরেকজন চলে দক্ষিনে। দেশটারে লইয়া পাছরাপাছরি শুরু করছে যেনো। একজনে কয় তোরে ছারাই নির্বাচন কইরা ফালামু আইলে আয়। আরেকজন কয় পারলে কর দেহি কেমন হেডমডা। ওগো হেডম দেখানোর ভাষা ফোনাফুনিতে জনগন কিছুডা আচ করতে পারছে।

এই ভাষায় আর যাই হউক কোন সুরাহা হইব আশা করা যায় না। ভাইরে হরতালে জিনিস পত্রের দাম বাড়তাছে। ব্যবসা বানিজ্য মন্দা দেখাইয়া অফি বেতন দিতে দেরি করতাছে। কই যাই। আবার অফিস কামাই দিলে চাকরি লইয়া টানাটানি।

অফিসে যাইতে গেলে বাসে আগুনে কাবাব হইবার সমুহ সম্ভাবনা। কই যাই কনতো দেখি। আবার আছে পুলিশের ভয়। ব্যাগ -ট্যাগ সার্চ করা। দাড়ি টুপি থাকলেতো কথাই নাই।

দাড়াইয়া থাকেন। সার্চ শেষ হইব । তারপর যদি মনে হয় জংগি না তাইলে ছাড়ন। আর যদি সন্দেহ হয় জংগি তাইলেই মরন। কি ফ্যাসাদ ।

মনখুইলা রাস্তায় চলুম হেই মৌলিক অধিকারও নাই। এইডা যেনো পানির মধ্যে কুমির ডাংগার মধ্যে বাঘ। বলেন ভাই কই যাই। ভাইরে কি কমু দু:খের কথা। পাড়ায় কমিটি হইছে দুইটা।

একটা হইলো সন্ত্রাস নির্মূল কমিটি আরেকটা হইল নির্বাচন প্রতিরোধে সংগ্রাম কমিটি। দুই দলেই চায় তাদের সাথে থাকি। না গেলে হয় জংগি না হয় সরকারের চামচা। কই যাই। নিরপেক্ষ থাকুম তারো যুইত নাই।

কি একটা সমস্যা কনতো দেখি। শুনতাছি যারা সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির সদস্য হইবনা এরা চইলা যাইবো ব্লাক লিস্টে। পুলিশের দাবরানি খাওন হইবো নিয়তি। রাইতে বাসায় থাকন লাগব না । দৌড়ানির উপর থাকন লাগব।

আর সংগ্রাম কমিটির সদস্য না হইলে বাসায় ককটেল হামলা হইবার ভয়। কেমন একটা ফাপরে আছি কনতো দেখি। আপনার কি মনে হয় এই দুইজনে মিলব? দেশে সকল দল মিইলা নির্বাচন হইব? আমার মনে হয় না। দেশে অন্যকোন কিছু হইব ভাই। অন্য কিছু।

এই বলে একটু থামতেই আমি বললাম এতো ভেবে লাভ কি? যা আছে আমাদের কপালে তাতো হবেই। ভাবমুনা কি কন ভাই। ঘরে বউ পোলাপান আছে। এরা স্কুল কলেজে যায়। কখন রাস্তাঘাটে কে বোমা মাইরা নাক মুখ চোখ ভসকাইয়া দেয় তার ঠিক আছে।

সরকার কয় হরতাল যারা দিব হেরা ভিকটিমরে ক্ষতিপুরন দিব। সংলাপের দাওয়াতই মানে না আর তাগো এই কথা মানব । আর ক্ষতিপুরন যদি দেয় কি দিব। পারব জানডা ফিরাইয়া দিতে। দিবতো খালি কতগুলা কাগজের নোট।

এই যে মনির পোলাডা মরল হের বাপ মায়েরে কি ক্ষতি পুরন দিবেন। ওর ক্ষতিপুরন হইল ওর পোলা। অন্য কিছু না। বড়ই কষ্ট লাগে ভাই । এইসব ভাইবা বড়ই কষ্ট লাগে।

কি বলার আছে রুস্তম আলীর প্রতি উত্তরে। জানিনা। এক ভুবনে দুই বাসিন্দা আর কতকাল শত্রু হয়ে থাকবে। কতকাল একে অন্যের বিষদগার করে চলবে। কবে তার ভাববে জনগনের কথা।

তাদের ভোগান্তি দুর করার কথা। তথা দেশের কথা। সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরাবারে তাদের সুমতি কামনা করি। কামনা করি দেশ শান্তি ফিরে আসুক। স্বস্থি ফিরে আসুক।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।