কোন বিষয়ে কেউ দক্ষ্য হয়ে পৃথিবীকে জন্ম নেয়না। সবকিছুতে প্রয়োজন সাধনা। গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে দক্ষ্য করে তৈরি করার জন্য কিভাবে অনুশীলন করবেন, সেটি আজকের পোস্টে উল্লেখ করব। পোস্টটি লিখার জন্য আমি আমার এসইও ক্লাশে আর্টিকেল রাইটিংয়ের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে দেই। ভাল লিখেছে অন্তর চাকমা (https://www.facebook.com/antar.looser) তার পোস্টটিকে কিছুটা ঠিক করে সবার জন্য শেয়ার করলাম।
গ্রাফিকস শেখার প্রথম ধাপে নিজের মনে যা ডিজাইন করতে মন চায় সেটিই করুন। নিজের পছন্দের কোনো কাজ করতে গেলে সেই কাজের প্রতি আলাদা এক ধরণের আকর্ষন থাকে এবং কাজের প্রতি অনেক মনোযোগও থাকে যে কারণে কাজটি করার সময় নিজের মধ্যে কখনোই বিরক্তিভাব থাকেনা এবং কাজটির মানও অনেকটা ভাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কাজেই গ্রাফিক্স ডিজাইনের ক্ষেত্রেও নিজের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন তৈরি করুন এবং অবশ্যই নিজের মনের মত যথাসম্ভব সুন্দর ডিজাইন তৈরি করার চেষ্টা করুন। উজ্জ্বল কালার সমৃদ্ধ অতি অলংকৃত ডিজাইনের প্রতি যদি আপনার বিশেষ আকর্ষণ থেকে থাকে তাহলে সেই অনুযায়ী আপনার পছন্দের ডিজাইনটি তৈরি করার মাধ্যমে আপনার ডিজাইনিং স্কিল বাড়াতে পারেন । অথবা নিজের মনের মত অনেকটা গোছালো, পরিচ্ছন্ন, ভারসাম্যপূর্ণ বা অনেকটা সাদামাটা কালারের অনেক সুন্দর ডিজাইন তৈরি করতে চাইলে সেটিও করতে পারেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ের উপর বিভিন্ন ধরণের অনেক ভাল মানের বই পাওয়া যায়। এই বইগুলোতেও গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রাথমিক জ্ঞান হতে শুরু করে গ্রাফিক্সের বিস্তারিত বিশদভাবে আলোচনা করা হয়। চাইলে এই ধরণের বইগুলো পড়তে পারেন, যা গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার ক্ষেত্রে আপনার জন্য অনেকাংশে সহায়ক হবে । এসব বই অনলাইনে খোজ করলেই প্রচুর পরিমানে পেয়ে যাবেন।
অনেক সময় বিভিন্ন ধরণের সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে অনেক তথ্যবহুল আকর্ষণীয় লেখা পাওয়া যায় যা আপনাকে গ্রাফিক্স সম্পর্কে অনেক ভাল ধারণা দিতে পারে ।
তাছাড়া ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেও আপনি গ্রাফিক্স সম্পর্কে গুরুত্ত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন যা আপনার জন্য পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে। আমি নিজেও সেরকম একটি লার্নিং সেন্টার করেছি। এ লিংক থেকে শিখতে পারবেন, অনেক কিছু। লিংকটি হলোঃ http://creativeit-inst.com/learning_center.php
যে কোন ডিজাইন সুন্দর হওয়ার পিছনে ফন্ট খুব বড় ভুমিকা রাখে। কোন জায়গাতে কোন ফন্ট বেশি ভাল মানানসই হবে, সেটি নিয়ে ভাবুন।
বিভিন্ন ভাল ভাল ডিজাইনের ফন্টগুলো ভাল করে লক্ষ্য করুন। ভাল ভাল ফন্ট নিজের পিসিতে সংরক্ষণ করুন।
যে কোনো শিল্পীর কাজই হচ্ছে একেকটি নতুন নতুন ডিজাইন বা নতুন কোনো শিল্পের জন্ম দেয়া । যেমন বুক প্রিন্ট, স্ট্রীট সাইন, মুভি ক্রেডিট ইত্যাদি বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে শিল্পীরা নতুন শিল্প রচনার প্রাণপণ চেষ্টা করে থাকেন। একজন ভাল গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে সবসময় মাথায় রাখতে হয় কিভাবে তার ডিজাইনকে অনেক গুরুত্ত্ববহ করে তোলা যায়, তার ডিজাইনের মাধ্যমে কিভাবে বিবর্তন ঘটানো যায় এবং আরো অনেক কিছু যা তার উদ্ভাবিত ডিজাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলা যায়।
এক্ষেত্রে তার সৃজনশীল দক্ষতাকে বিশেষভাবে কাজে লাগাতে হয় এবং ডিজাইনটি তৈরি করার ক্ষেত্রে তাকে প্রচুর উদ্ভাবনী শক্তির জন্ম দিতে হয় ।
অন্য একজনের ভাল মানের কাজ দেখে সেই কাজের প্রতি অনেক ভাল ধারণা পাওয়া যায়, কিন্তু তাই বলে এমন না যে আপনার নিজের কাজের ক্ষেত্রে অন্যের স্টাইল ফলো করতে হবে বা নিজের কাজের মধ্যে অন্যের কাজটিকে প্রতিফলিত করতে হবে । আপনাকে অবশ্যই নিজের ক্রিয়েটিভিটি বা নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ নিজের মত করে কাজ করতে হবে যাতে সবাই দেখে বুঝতে পারে বা জানতে পারে যে এটা আপনার নিজের তৈরি করা ডিজাইন । আপনার অনন্য অসাধারণ কাজের মাধ্যমেই সবার কাছে নিজের দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে যাতে অনেকেই আপনাকে কাজ দেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে ।
নিজের কাছে খুব আকর্ষণীয় বা সুন্দর লাগে বা অনেক সময় নিজেকে অনুপ্রেরণা যোগায়, এমন অনেকগুলো ভাল মানের ডিজাইন নিজের সংগ্রহে রাখুন ।
সেই ডিজাইনগুলো আপনার অনেক কাজে লাগতে পারে সেগুলো হতে পারে টি-শার্ট, বই-পুস্তক, পোস্ট কার্ড, পোস্টার ইত্যাদি অনেক কিছু । এগুলো নিয়ে মনোযোগ সহকারে গবেষণা করুন, কোন ডিজাইনটি আপনার নিজের কাছে সবচেয়ে বেশি পছন্দ তা নোট করে সেগুলোকে রেখে দিতে পারেন যাতে পরবর্তীতে অন্য একটি কাজের ক্ষেত্রে সেটিকে ব্যাবহার করতে পারেন। বিভিন্ন ক্যাটাগরী অনুযায়ি আলাদা আলাদা ফোল্ডার করে রাখলে প্রয়োজন অনুযায়ি সেগুলো খুজে বের করা আরো বেশি সহজ হবে।
আপনার নিজের তৈরি করা সবগুলো ডিজাইন যত্নসহকারে নিজের কাছে রেখে দিন । প্রথম দিকের কাজগুলো হয়ত খুব বেশি ভাল মানের নাও হতে পারে, তারপরও সেগুলোকে অবহেলা করে ফেলে দিবেননা।
পরবর্তীতে যখন অনেক অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজ করবেন তখন আপনি আপনার আগের করা কাজগুলোর সাথে বর্তমানের কাজগুলোর সমন্বয় ঘটিয়ে আপনার কাজের কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে বুঝতে পারবেন । সেই বিষয়টাই আপনাকে অনেকাংশে অনুপ্রাণীত করবে এবং আগের তৈরি করা ডিজাইনগুলোর ভূল দিকগুলো শোধরানোর মাধ্যমেই আপনার জন্য নতুন একটি অসাধারণ ডিজাইন তৈরি করা সম্ভব হবে যে কারণে নিজের প্রতি আপনার আস্থা অনেকাংশে বেড়ে যাবে । নিজের উপর আস্থা না তৈরি হলে কখনওই কোন কাজে ভাল কোন ফলাফল বের করা সম্ভব হয়না।
আপনার কাজগুলো নিয়ে একটি পোর্টফলিও তৈরি করুন। সেটা হতে পারে পিডিএফ কিংবা সুযোগ থাকলে তৈরি করে নিতে পারেন, একটি পোর্টফলিও ওয়েবসাইট।
এই পোর্টফলিও অনলাইনে কোন কাজ পেতে কিংবা ভবিষ্যতে ডিজাইনার হিসেবে লোকাল কোন চাকুরী পেতে অনেক সাহায্য করবে। পোর্টফলিও ওয়েবসাইটে কিকি থাকবে, সেটি সংক্ষেপে এখানে দিলাম।
- ওয়েবসাইটটিতে কেউ ঢুকলেই যাতে ডিজাইনার হিসেবে আপনার রুচি বোঝা যায়, সেই দিকে বেশি নজর দিন।
- আপনার পরিচয়, কাজের অভিজ্ঞতাসহকারে একটি পেজ থাকতে হবে। সেই পেজেই odesk কিংবা freelancer.com কিংবা অন্য কোন জায়গাতে থাকা আপনার আইডি এবং আরো কিছু বিষয় সংক্ষেপে উল্লেখ করুন।
- পোর্টফলিও পেজে গ্রাফিকস ডিজাইন সম্পর্কিত আপনার সকল কাজকে ক্যাটাগরি অনুযায়ি পোস্ট করুন। সাথে কাজটি কোন ক্লায়েন্টের কাজ, কিংবা অনলাইনে কোন প্রতিযোগিতার জন্য কোন কাজ কিনা এইরকম কিছু বিষয় নিয়ে হালকাভাবে ১-২ লাইনে লিখে দিলে ভাল হয়।
আমার গ্রাফিকসডিজাইন সম্পর্কিত সেরকম কোন পোর্টফলিও সাইট করা নাই। ভবিষ্যতে করার পরিকল্পনা আছে। তবে এখন দেখার জন্য ওয়েবডেভেলপমেন্টের কাজের একটি পোর্টফলিও করা আছে।
সেটি দেখার জন্য লিংক দিলাম। http://creativeitweb.com/portfolio.php
পোর্টফলিওতে নিজের কাজগুলো উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও নিজের রুচির পরিচয় দিতে হবে। যেনতেনভাবে কাজগুলো না দিয়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন।
নিচে কাজের স্যাম্পল উপস্থাপনের ধরণ দেখালাম। বলে রাখি, কাজগুলো সম্পুর্ণ আমাদের টীমের করা।
ওয়েবডিজাইন কাজ
ভিজিটিং কার্ড
লিফলেট ডিজাইন
গ্রাফিকসডিজাইন সম্পর্কিত আমার অন্য পোস্টটিও নতুনদের জন্য অনেক কাজে লাগবে।
পোস্টটির লিংকঃ http://www.techtunes.com.bd/outsourcing/tune-id/212210
গ্রাফিকস ডিজাইন সম্পর্কিত সহযোগিতা করা হয়, ফেসবুক গ্রুপেঃ https://www.facebook.com/groups/creativeit/
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।