আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেষ টেস্টেও যেন তারুণ্যের সেই শচীন

ভারতীয় কোনো ব্যাটসম্যান আউট হয়েছে, আর মুম্বাইয়ের পুরো গ্যালারি ফেটে পড়েছে উল্লাসে! অভাবনীয় এই দৃশ্যও আজ দেখতে হলো শচীন টেন্ডুলকারের সৌজন্যে। টেন্ডুলকারের ব্যাটিং দেখার জন্য ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের দর্শকেরা যে অপেক্ষায় অধীর ছিল, সেটা বোঝা গেল মুরলি বিজয় আউট হওয়ার সময়।

শিলিংফোর্ডের বল মুরলির ব্যাট ছুঁয়ে বল চলে গিয়েছিল শর্ট লেগে দাঁড়ানো ফিল্ডার ড্যারেন স্যামির তালুতে। তার পরও মুরলিকে অপেক্ষায় রেখেছিলেন আম্পায়ার। বোলিংয়ের সময় শিলিংফোর্ডের পা কোথায় ছিল, কেবল অতটুকুই দেখে নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

ওয়্যারলেসের মাধ্যমে জেনে আম্পায়ার যখন তর্জনী তুললেন, তুমুল হর্ষধ্বনিতে ফেটে পড়ল স্টেডিয়াম। এবার যে নামবেন টেন্ডুলকার!

বিপুল করতালি, দর্শকদের সাদর সম্ভাষণ আর ক্যারিবীয় দলের গার্ড অব অনার—সবই হয়েছে টেন্ডুলকার মাঠে নামার সময়। প্যাভিলিয়ন থেকে হেঁটে এসে উইকেটে টেন্ডুলকার যখন স্ট্যান্স নিয়ে দাঁড়ালেন, তখন আবেগে থরথর সবাই। কিংবদন্তির বিদায়-লগ্ন বলে কথা! এই টেস্টে আরেক ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাবেন, সেই নিশ্চয়তা কোথায়?

মুহূর্তেই একটা কাভার ড্রাইভে বোলারের পাশাপাশি থরথর আবেগটাকেও যেন ছিটকে ফেলে দিলেন। পুরো সময় ব্যাটিং করে গেলেন নিজের তারুণ্যের সেই সোনালি দিনগুলোকে বারবার মনে করিয়ে দিয়ে।

যৌবনের উদ্যম নিয়েই যেন টেন্ডুলকার নেমেছেন তাঁর বিদায়ী টেস্টে। হাতে ছিল সেই ট্রেডমার্ক শটগুলো।

তাঁর কভার ড্রাইভগুলো উত্তাল করে দিয়েছে ওয়াংখেড়েকে।   সব মিলিয়ে তাঁর বাউন্ডারির সংখ্যা ছয়টি। দিন শেষে ৭৩ বল খেলে তিনি অপরাজিত ৩৮ রানে।

৩৪ রান নিয়ে টেন্ডুলকারকে সঙ্গ দিচ্ছেন চেতেশ্বর পুজারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৮২ রানের জবাবে প্রথম দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৫৭।

টেন্ডুলকারের প্রতিটি রান এদিন করতালিতে স্বাগত জানানো হয়েছে। এমনকি তিনি বল ছেড়ে দিলেও কিংবা ডিফেন্স করলেও। এই প্রথম গ্যালারিতে তাঁর রত্নগর্ভা মা এসেছেন খেলা দেখতে।

মা হয়তো ক্রিকেটের অত কিছু বোঝেন না। তবে একদম চোখের সামনে এসে দেখলেন, তাঁর ছেলে যেন এখনো সেই কৈশোরেই আছে। টেন্ডুলকারের বয়স যেন একটুও বাড়েনি!

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধসিয়ে দিয়েছেন প্রজ্ঞান ওঝা। ৪০ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন এই স্পিনার। রবিচন্দ্রন অশ্বিনও তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান এসেছে কাইরন পাওয়েলের ব্যাট থেকে।

কাল আবার নতুন করে শুরু করবেন টেন্ডুলকার। বিদায়ী টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখার ভিত্তিটা তৈরি করেই ফেলেছেন। কাল শুধু ভিত্তিটাকে কাজে লাগানোর লড়াই। মাঠে নেমেই যে টেন্ডুলকারকে দেখা যাচ্ছে, তাতে আশাবাদী হওয়াটা অমূলক নয়।

বিদায়ের মঞ্চে তাঁর ব্যাটে যেন তারুণ্য ভর করে সেই প্রত্যাশাতেই আজ সন্ধ্যা নামুক মুম্বাইয়ে!

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।