আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার শপথ

জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ‘নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা’ শপথ নিচ্ছে আজ। বেলা তিনটায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নতুন মন্ত্রীদের শপথ পড়াবেন।
গতকাল রোববার রাত আটটায় বঙ্গভবনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে সন্ধ্যা সাতটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা রাত পৌনে আটটা পর্যন্ত বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আজ শপথ হওয়ার কথা জানান।
এই শপথ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহাজোট সরকারের মন্ত্রিসভার অবসান হবে। তবে শেখ হাসিনাই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকছেন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার শপথ নেয়।
নির্বাচনকালীন এই সরকারকে ‘সর্বদলীয়’ বলা হলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি থাকছে না।

দলটি আগেই জানিয়েছে, তারা সর্বদলীয় সরকারে থাকছে না। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিলে তাদের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয় দেওয়া হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বঙ্গভবনে সাংবাদিকদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকারের কাঠামো ও কাজ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর এই পরিকল্পনা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাফল্য কামনা করেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখনই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখনই দেশ ও সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করেন।

গতকালও তিনি তা করেছেন। নির্বাচনকালীন সরকার পরিচালনার জন্য একটি সর্বদলীয় সরকার গঠন করার কথা তিনি জানিয়েছেন, যার কাঠামো হবে বর্তমান মন্ত্রিসভার চেয়ে ছোট।
নির্বাচনকালীন সরকারে যাঁরা থাকছেন: সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন নেতাকে গতকাল রাতেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শপথ নিতে আজ বেলা তিনটায় বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের তালিকা গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। আজ দুপুরের আগ পর্যন্ত তালিকায় নতুন কেউ অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন বলে জানা গেছে।

সরকারি সূত্র জানায়, নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগ ছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে ছয়জন, ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে দুজন ও জাসদ (ইনু) থেকে দুজনের প্রতিনিধিত্ব থাকতে পারে। তবে পরে অন্য দল থেকেও কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। মন্ত্রী হতে পারেন জাতীয় পার্টির (জেপি) আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও। এ মন্ত্রিসভার আকার ২৫ থেকে ৩০ সদস্যের মধ্যে হতে পারে। বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা নতুন মন্ত্রিসভায় থাকলে তাঁদের নতুন করে শপথ নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

বর্তমান মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য আবুল মাল আবদুল মুহিত, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মতিয়া চৌধুরী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, শফিক আহমেদ, ওবায়দুল কাদের, নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি ও হাসানুল হক ইনু বহাল থাকতে পারেন। দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ মন্ত্রিসভায় যুক্ত হতে পারেন।

জাতীয় পার্টির ছয়জনের একটি তালিকা গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তাঁরা হলেন রওশন এরশাদ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জি এম কাদের, রুহুল আমিন হাওলাদার, মজিবুল হক ও সালমা ইসলাম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত রাতে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জানান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাঁকে শপথ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ ছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ফজলে হোসেন বাদশা ও জাসদ (ইনু) থেকে মঈন উদ্দীন খান বাদলের নামও শোনা গেছে।

১৯৯১ সালে প্রথম নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একতরফা নির্বাচন হলেও আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করে ওই সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দেয়।

ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে টানা তিনটি (১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮) নির্বাচনের পর এবার দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

বিএনপির দৃষ্টিতে তামাশা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠনের উদ্যোগকে ‘তামাশা’ বলে উল্লেখ করেছেন। গত রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর গুলশানের কার্যালয়ে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন চলবে।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।