আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হি ইজ দ্য রিয়েল পলিটিশিয়ান: মঞ্জু

এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে জাতির অনেক কিছু শেখার আছে। হি ইজ দ্য রিয়েল পলিটিশিয়ান! সবাই তার কাছে শিশু। উনি নিজে রাজনীতি করেন, অন্যকে দিয়ে করান। বর্তমান দুই জাতীয় নেত্রীর সঙ্গে তিনি নয় বছর খেলেছেন, এখনো খেলছেন। দু’একদিন আগে উনি বললেন, ‘আমাকে দুর্নীতিবাজ বলো, বিশ্বে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ তুমি’।

তার ভাইকে দু’এক দিনের মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে নিয়ে আসার কথা, অথচ আজ উল্টো সাতজনকে ঢুকিয়ে দিয়েছেন! মাশাআল্লাহ! মারহাবা! শেখেন তার কাছ থেকে। আমারও অনেক শেখার আছে। রবিবার এসএ টিভি’র টকশো ‘লেট এডিশন’- এ সাবেক মন্ত্রী, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এসব কথা বলেন।

নঈম নিজামের উপস্থাপনায় তিনি বলেন, জাপা চেয়ারম্যান এদেশের মানুষকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে চিনেছেন। কুচবিহার থেকে এসেছিলেনতো, তাই নতুন জায়গার মানুষকে ভাল মতো সার্ভে করেছেন।

তাই রাজনীতিটাও সেইভাবে করছেন। শুনেছি বি চৌধুরীর বাড়িতে বৈঠক করেছেন, খাওয়া দাওয়া হল। আলোচনা হয়েছে- ‌'এই নেত্রীও না, ওই নেত্রীও না, আমরা একটা থার্ড ফোর্স করব কিন্তু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। ' এরশাদ সাহেব বেরিয়ে এসে বললেন, গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নির্বাচনে যাব। এটাই রাজনীতি।

কেউ দেখলেন না এরশাদ সাহেব সরকারের পতন চাচ্ছেন, চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করছেন, অথচ তার ভাই মন্ত্রী! তবে দুই-এক দিনের মধ্যেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে আসবেন তিনি। কারণ তিনি হবেন নির্বাচিত বিরোধী দল। উনিই সবচেয়ে বড় কমিউনিস্ট। মানুষ রাজনীতি করে ক্ষমতায় যাবার জন্য। কমিউনিস্টরা আন্দোলন করে কিন্তু ক্ষমতায় যেতে চায় না।

কারণ দেশ চালানো বেশ কঠিন কাজ। তারা শুধু বিপ্লব ছড়িয়ে দিতে চায়।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, নির্বাচন হলে বিএনপি না আসলেও আমরা যাব। এটা আগেই বলেছি। আমার যেমন যাওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে, কারও না যাওয়ারও অধিকার আছে।

এরশাদ সাহেবের সময় আওয়ামী লীগের এক বড় নেতা দলের মিটিংয়ে ঝাঝালো বক্তব্য রেখে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যে এরশাদ সাহেবের মন্ত্রিসভায় যোগদান করেছিলেন। আমরাতো সেই কনভেনশনাল পলিটিশিয়ান না। যেটা বলব, সেটা করব। যেটা বলব না, সেটা করব না। এইচএম এরশাদকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমিতো তার মন্ত্রিসভায় সাত বছর ছিলাম।

তাকে চিনি। গতকালও যিনি বললেন সবাই না আসলে নির্বাচনে যাব না, পরবর্তীতে বললেন, গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য যাবেন। তিন দিন আগেও তার কথাবার্তা শুনলে কেউ বিশ্বাস করতে পারত না যে তিনি নির্বাচনে যাবেন। বরং বাজারে গুজব ছিল যে, বিএনপি’র সঙ্গে তিনি অনেকদূর এগিয়ে গেছেন। অনেকে বিশ্বাস করেছে।

আমি জানি এটা হতে পারে না। আমরা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্র ছিলাম, তাকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, তবে গ্রামের সাধারণ মানুষ যারা রাজনীতি চর্চা করেন না তারা কনফিউজড হয়ে যায়।

সিঙ্গাপুরে আপনাদের বৈঠক হয়েছে?- সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে মঞ্জু বলেন, মিটিং যাদের সঙ্গে হওয়ার কথা তাদের সঙ্গে হয়েছে, বদনাম হয়েছে আমার। আমি গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। গোপনে বৈঠক করব কেন? এর দিন ১৫ আগে কুতুববাগ দরবার শরীফে এরশাদ সাহেবের সঙ্গে একত্রে খেয়েছি, তার বাসায় গেছি।

উনি আমাকে জোট করার কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন তার সঙ্গে গেলে বিপ্লব হয়ে যাবে। আমি বললাম, স্যার, আমিতো বিপ্লবী নই। এখন কথা হচ্ছে নির্বাচনটা উঠিয়ে নেওয়া। কিন্তু যারা গত নির্বাচনে ৩৭-৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছে তাদের বাদ দিয়ে নির্বাচনটা হলে ক্রেডিবিলিটিটা থাকবে কিনা এটাই প্রশ্ন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই বছর ধরে বলে আসছে ‘ফ্রি, ফেয়ার এণ্ড ক্রেডিবল’ ইলেকশনের কথা। একটা কথা মনে রাখতে হবে ভূরাজনৈতিক বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশ এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা দেশ। তাই এখানে খেলোয়াড়ও অনেক। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত এখন বিশ্বে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে। তাদের হাতেও অনেক তাস আছে।

পাকিস্তানও এখানকার রাজনীতিতে খেলার চেষ্টা করবে।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, জিয়াউর রহমান সাহেব আর্মির প্রোডাক্ট ছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া কোন সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচন করেননি। এখন তিনি গণতন্ত্রের ধারক-বাহক হয়ে বসে আছেন। তার তত্ত্বাবধায়কের যুক্তিকেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

একসময় আমরা বেগম জিয়াকে তত্ত্বাবধায়ক খাইয়েছি। এখন বেগম জিয়া আমাদেরকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার খাওয়াতে চাইছেন। খালেদা জিয়ার ১৫ দিনের সরকারের কথা বললে আমি বলব, তিনি আমাদের দাবি অনুযায়ি সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক যোগ করতেই নির্বাচনটা করেছিলেন। মেজরিটি নিয়ে ১৫ দিনের জন্য ক্ষমতায় গিয়ে সংবিধান সংশোধন করেন।



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।