আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশকে কি ভারত ডাকবেই না?

শচীন টেন্ডুলকারের বিদায়ী সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের পারফরম্যান্স দেখে বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের হা-হুতাশটা যেন আরও বেড়েছে। অনেকেই বলছেন, লিটল মাস্টারের শেষ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জায়গায় বাংলাদেশ থাকলে ভারতকে যথেষ্টই কাঠখড় পোড়াতে হতো। সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রিকেটামোদীদের করেছে অনেক বেশি আশাবাদী। কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে আদৌ বাংলাদেশ কোনো টেস্ট সিরিজ খেলতে পারবে কি না—এ নিয়ে রয়েছে এন্তার অনিশ্চয়তা। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ১৩ বছর গত হলেও ভারতের মাটিতে এখনো কোনো টেস্ট খেলা হয়নি বাংলাদেশের।

আগামীতেও ভারতে বাংলাদেশের কোনো সফর অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। সম্প্রতি ভারতীয় পত্রিকা মেইল টুডে জানিয়েছে, ২০১৭ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের যে সূচি রয়েছে, তাতে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো সিরিজ নেই।
২০০০ সালে এই ভারতের বিপক্ষেই বাংলাদেশের অভিষেক টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অথচ এরপর থেকে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ সিরিজ খেলেছে কেবল দেশের মাটিতে। প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশে একাধিক সিরিজে অংশ নিলেও নিকটবর্তী দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সিরিজ না খেলাটা খুবই অদ্ভুত একটা ব্যাপার।

ব্যাপারটি নিয়ে দারুণ হতাশা আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট মহলে।
বাংলাদেশকে ভারতের মাটিতে না ডাকার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ‘ব্যবসায়িক’ দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তাদের চিন্তাটা হলো, ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ-ভারতের টেস্ট সিরিজ হলে তা হবে নিতান্তই ‘একপেশে’, যা দর্শকদের মধ্যে কোনো আগ্রহই তৈরি করতে পারবে না। ব্যবসায়িক দিক দিয়েও তা লাভজনক হওয়ার নাকি সম্ভাবনা নেই।
মেইল টুডে পত্রিকাটির প্রতিবেদনেও বিসিসিআই কর্তাদের বরাতে এমন চিন্তাভাবনা তুলে ধরা হয়েছে।

ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ কেন কোনো সিরিজ খেলছে না—এ ব্যাপারে অনুসন্ধানও চালিয়েছে তারা। মেইল টুডের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলাপকালে বিসিসিআইয়ের একজন বড় কর্তা মন্তব্য করেছেন, ‘ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের খেলা দেখতে কে আসবে?’

টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৩ বছরেও বাংলাদেশকে ভারত কেন আতিথেয়তা দিল না—এ নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও ঝরেছে মেইল টুডের প্রতিবেদনে। তারা বলছে, বিসিসিআই বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে ভারতের মাটিতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আয়োজনের ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেও, বিষয়টি কখনোই আলোর মুখ দেখেনি। পত্রিকাটি আক্ষেপ করে লিখেছে, একজন ভারতীয়র বলিষ্ঠ পদক্ষেপেই (জগমোহন ডালমিয়া) ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পেয়েছিল। কিন্তু একমাত্র ভারতের মাটিতেই বাংলাদেশ কোনো সিরিজ খেলেনি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এখনো পর্যন্ত মাত্র তিনবার ভারত সফর করেছে। ১৯৯০ সালে এশিয়া কাপে চণ্ডীগড় ও কলকাতায় বাংলাদেশ ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি একদিনের ম্যাচে মাঠে নেমেছিল। কলকাতায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একদিনের ক্রিকেটে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন আতহার আলী খান। ১৯৯৮ সালে ভারত ও কেনিয়ার সঙ্গে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ। একদিনের ক্রিকেটে দেশের প্রথম জয়টি ওই সফরেই এসেছিল হায়দরাবাদে, কেনিয়ার বিপক্ষে।

বাংলাদেশ সর্বশেষ ভারত সফর করে ২০০৬ সালে, আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি উপলক্ষে।

বাংলাদেশের কাছে মোট তিনবার হারের স্বাদ পাওয়া ভারতীয়রা নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশের খেলা দেখতে আসবেন না—এ কথা বিশ্বাস করতে একটু কষ্টই হয়। ১৯৯৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলেছিল মোহালি আর মুম্বাইয়ে। সেই দুটো ম্যাচে বাংলাদেশ সহজে হারলেও লড়াইটা একেবারে খারাপ করেনি। বিশেষ করে মুম্বাইয়ে খুব অল্প রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতকে যথেষ্টই কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।

সেই দুটো ম্যাচে কিন্তু দর্শক আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। ভারতীয় ক্রিকেট কর্তারা বাংলাদেশের প্রসঙ্গ এলে কলকাতার কথা কেন বেমালুম চেপে যান, বোধগম্য নয় সেটাও।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.