আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১০০ টাকা সম্পদে ক্ষতি ৩১ পয়সা

গুরুতর অবনতিশীল পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকটিতে এখন প্রতি ১০০ টাকার সম্পদের বিপরীতে আয় তো হচ্ছেই না, বরং খোয়া যাচ্ছে ৩১ পয়সা।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে গত মঙ্গলবার বেসিক ব্যাংকের ওপর তৈরি একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা করা হয়নি। একইভাবে বেসিক ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করার প্রস্তাবটিও আটকে রয়েছে।
সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরভিত্তিতে মোট ঋণের ১৮ দশমিক ২৭ ভাগ বা এক হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা খেলাপি, ৫৯৭ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি এবং ৩০৪ কোটি টাকার ঋণের নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতিতে পড়ে ব্যাংকটির আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের এক প্রতিবেদনে ব্যাংকটির ঋণগুলো বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করে বলেছে, পরিস্থিতি অসন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে।
প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদে উপস্থাপনের কথা ছিল। সেই অনুসারে পর্ষদ সদস্যদের কাছে পাঠানো সভার নোটিশে বেসিক ব্যাংকের ওপর ডায়াগনেস্টিক বা পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তও করা হয়। কিন্তু, তা শেষ পর্যন্ত হয়নি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদকে জানানো হয়েছে, আগামী সভায় এটি উপস্থাপন করা হবে।

পর্ষদে উপস্থাপনের জন্য স্মারক নম্বর দিয়ে উপস্থাপনটি গত মঙ্গলবার চূড়ান্ত করা যায়নি বলে তা পর্ষদে ওঠেনি বলে জানান ডেপুটি গভর্নর। তিনি আরও বলেন, পর্ষদ সভায় ওই দিন বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরের পরিচালকের উপস্থিতিও কম ছিল। মাত্র তিনজন উপস্থিত ছিলেন।
রাজী হাসান বলেন, তবে ভবিষ্যৎ অনিয়ম রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুধবার বেসিক ব্যাংকের পর্ষদে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-১-এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অশোক কুমার দে-কে পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।

ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ এবং ৪৯ ধারা অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নিয়োগ দিয়েছে। অশোক দে ব্যাংকটির পর্ষদ, নির্বাহী কমিটি ও অডিট কমিটির সব সভায় উপস্থিত থাকবেন এবং সভাগুলোর আলোচ্য বিষয়াদির ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে মতামত ও বক্তব্য তুলে ধরবেন।
ডায়াগনেস্টিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরভিত্তিতে ব্যাংকটির নিট লোকসানের (কর ও প্রভিশন-পরবর্তী) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রতি ১০০ টাকার সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকটির আয় হচ্ছে (-) ৩১ পয়সা। মূলধনভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে, ১০০ টাকা মূলধনে খোয়া যাচ্ছে ৬ টাকা ২০ পয়সা।

ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের ৭০ দশমিক ৫৬ শতাংশই মন্দ বা খারাপ মানের। অর্থাৎ হিসাববিজ্ঞানের ভাষায়, যা আদায় হবে না। গত ডিসেম্বর ও জুনের তুলনায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটিকে নিবিড় তত্ত্বাবধানে আনতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তাতেও পরিস্থিতির অবনতি ঠেকানো যাচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সমঝোতা চুক্তিতে ঋণ বিতরণ প্রবৃদ্ধির সীমা ২০১৩ শেষে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করলেও সেপ্টেম্বর শেষেই প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ০৩-এ পৌঁছে গেছে।

 

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।